বিজ্ঞাপন

পোষা প্রাণী ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২০ বাতিলের দাবি

March 10, 2020 | 2:39 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘পোষা প্রাণী ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২০’ অনুযায়ী শৌখিন বিদেশি পাখি পালনের ক্ষেত্রে নানাবিধ কঠোর বিধিনিষেধ দূর করার দাবি জানানো হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ এর অতিরিক্ত অংশ হিসেবে এই গেজেট প্রকাশ হয়। এই গেজেট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন পোষা পাখির সংগঠন।

বিজ্ঞাপন

সরকারের কাছে তাদের দাবি পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার (১০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করে এক্সোটিক বার্ড ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ, এভিয়ান কমিউনিটি ও এভিকালচারাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। তাদের দাবি এই বিধি কার্যকর হওয়ার আগেই বিদেশি পোষা পাখি পালনকারিদের এই বিধিমালার আওতা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। এবং পোষা পাখির সেক্টর উন্নয়নে সরকারি রেজিস্টার্ড সংগঠনের প্রস্তাবনা সম্বলিত চিঠিকে গুরুত্ব দেওয়া হোক।

গেজেট অনুযায়ী খামার বলতে বোঝানো হয়েছে কোনো স্থানে দশটির বেশি পাখি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে লালন-পালন করা। অর্থাৎ দশের বেশি পাখি পোষার জন্য দশ হাজার টাকা দিয়ে লাইসেন্স করাতে হবে। এছাড়াও প্রতি পাখির জন্য দুই হাজার টাকা পজেশন ফি দিতে হবে।

পাখি পালনকারী সংগঠনের দাবি তারা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়, শখের বসে বিদেশি পাখি পালন করেন। একটি পাখি কিনতে তাদের দুইশ থেকে এক হাজার টাকা খরচ হয়। তাই প্রতিটি পাখির জন্য ২০০০ টাকা পজেশন ফি যৌক্তিক নয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এটি তাদের জন্য নির্মল বিনোদনের আঁধার। সাধারণত স্কুল কলজের ছাত্র, গৃহিণী ও বেকার যুবকরাই পাখি পালন করে থাকেন। এটি তরুণদের মাদকাসক্তি ও অন্যান্য অপরাধ থেকে দূরে রাখছে। তাদের আশঙ্কা নতুন এই বিধিমালার ফলে শৌখিন পাখি পালকরা নিরুৎসাহিত হবে ও পাখি পালন থেকে দূরে থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তারা এই বিধিমালা প্রণয়নের আগে ও পরে বিস্তারিত দাবি জানিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাদের সেই দাবি উপেক্ষা করে বন অধিদফতর তাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংগঠনগুলোকে না জানিয়ে ‘গোপনে’ এমন একটি বাস্তবতা বিবর্জিত বিধিমালা পাশ করিয়ে নেন।

বিজ্ঞাপন

এই প্রসঙ্গে এভিয়ান কমিউনিটির সভাপতি আলী চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে বন্য পাখি যেমন সবুজ টিয়া, চন্দনা টিয়া, ময়না, তিলাঘুঘু, বাবুই, মুনিয়া, দোয়েল শালিখ, কালেম, ধনেশ ইত্যাদি অবৈধ। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এই পাখি পালনে এসব দেশি বন্য প্রাণী পালনে কঠোর বিধিমালা সমর্থন করেন। কিন্তু বিদেশি পাখি পালনে সব বাঁধা দূর করতে হবে। কারণ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে খাঁচায় জন্ম নেওয়া বৈধ পোষা পাখি (কেইজ বার্ড) লালন-পালন সম্পূর্ণরুপে বৈধ। এই শিল্পটি পুরোপুরি আমদানি নির্ভর। সরকারের সহায়তা পেলে প্রতিবেশি দেশের মতো তারা এটিকে রফতানিমুখী শিল্পে পরিণত করতে পারবেন।

বিধি অনুযায়ী ‘শৌখিন পোষা পাখি লালন-পালনকারী’ অর্থ কোনো ব্যক্তি যিনি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোষা পাখি লালন-পালন করেন না এবং যার কাছে কোনো প্রজাতির দশটির বেশি পাখি থাকবে না। কিন্তু শৌখিন পাখি পালকদের শঙ্কার কারণ হিসেবে জানা গেল কোনো কোনো পাখির দ্রুত বংশবৃদ্ধির কথা।

এভিকালচারাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি আমজাদ আলী বলেন, কোনো কোনো ছোটো পাখি অনেকসময় চার থেকে ছয়টি বাচ্চা দেয়। তাই অল্পদিনেই দশের অধিক পাখি হয়ে যায়। এভাবে তিন মাসের মধ্যেই একজন শৌখিন পাখিপালক খামারিতে রূপান্তরিত হবেন। দশের আধিক পাখি থাকলে তাকে খামার বলা হলে, শখের পাখিপালকরা বিপদে পড়বেন বলে দাবি করেন তিনি।

আমজাদ আলী বলেন, বাগান করা বই পড়ার মত পাখি পালনও একটি শখ। এটি মানুষের মনকে কোমল ও পরিপূর্ণ করে। কিন্তু নতুন এই বিধি অনুযায়ী যেসব কঠোর বিধিনিষেধ ও শাস্তির কথা বলা হয়েছে তাতে পাখি পালন যেন অপরাধ। এটি শৌখিন পাখি পালনকারিদের জন্য হতাশার। তাই তারা সরকারের কাছে এটি বাতিলের দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/জেএএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন