বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কমেছে অর্ধেক, যাত্রী শূন্য শাহজালাল

March 18, 2020 | 7:26 pm

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ফ্লাইট কমে যাওয়ায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে। আন্তর্জাতিক রুটের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী সংখ্যা আগের চেয়ে ৪০ শতাংশের মতো কমেছে।

বিজ্ঞাপন

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাসের কারণে ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক রুটগুলোতে ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ ফ্লাইট কমে গেছে। অভ্যন্তরীণ রুটেও কমেছে যাত্রী সংখ্যা। এদিকে অভ্যন্তরীণ রুটেও ৪০ ভাগের মতো যাত্রী কমে গেছে। সে জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়ে বুধবার (১৮ মার্চ) বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে সৌদি আরব থেকে ৪০৯ জনকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সবাইকে হোম কোয়ারেনটাইনে থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা কার্যক্রম চালু রয়েছে। সব এজেন্সি একসঙ্গে কাজ করছি।’

বিজ্ঞাপন

পরিচালক জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে এলে তাদের হোম কোয়ারেনটাইনে থাকতে হবে। ইউরোপ থেকে এখন আর কোনো যাত্রী আসার প্রশ্নই আসে না। ট্রানজিট হয়েও কোনো যাত্রী আর দেশে আসতে পারবেন না।

পরিচালক এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান বলেন, ‘আজকে (বুধবার ১৮ মার্চ) যেসব ফ্লাইট আসার কথা ছিলো কাতার এয়ারলাইন্স, এমিরেটস এয়ারলাইন্স, টার্কিস এয়ারলাইন্স এগুলো সময়মতো এসেছে। গত ১ মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক আগমনী ফ্লাইট সংখ্যা ৩৫টির মতো। স্বাভাবিক সময়ে এটির সংখ্যা ছিল ৬৫ থেকে ৭০টির মতো। এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে বুধবার সকালে শাহজালাল ঘুরে দেখা গেছে, পুরো বিমানবন্দরে যেন সুনশান নীরবতা। যাত্রীদের হইহুল্লোড় নেই। বিমানবন্দরে কর্মকর্তাদের হাঁকডাক নেই। অন্যান্য সময়ে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্বজনরা বিমানবন্দরের বাইরে টার্মিনালের সামনে অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা গেলেও সেটিও জনশূন্য। টার্মিনালের সামনে অন্যান্য সময়ে গাড়ি চালকদের আনাগোনা দেখা গেলেও সেই চিত্রও আজকে চোখে পড়েনি। এমনকি শাহজালালে কর্মরত সকল সংস্থার কর্মকর্তাদের নিজ নিজ প্রটেকশনে থাকতে দেখা গেছে।

এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে রক্ষা থেকে শাহজালালে কর্মরত কর্মকর্তারা ব্যক্তি উদ্যোগে নিজেরা নিজেদেরই প্রটেকশন নিয়েছেন।

এ বিষয়ে শাহজালালে ইমিগ্রেশনে কর্মরত এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নিজেরা নিজেদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা করেছি। মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার এবং বিশেষ পোশাক আমরা নিজেরাই কিনেছি। সেইভাবে আমরা বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের সংখ্যা কথা বলছি।’

বিজ্ঞাপন

শাহজালালে কর্মরত কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদেরকে কর্তৃপক্ষ থেকে নিরাপত্তায় কিছু দেওয়া না হলেও নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। একজন মানুষের নিরাপত্তার জন্য যা প্রয়োজন সেটি নিজেরাই করেছি। আর সেইভাবে আমরা কাজ করছি।’

শাহজালালে দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এর এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পুরো এয়ারপোর্ট জুড়ে কাজ করছি। আমাদের অফিসারদের নিরাপত্তার জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেটি করেছি। করোনাভাইরাস যে কোনো মাধ্যমে ছড়াতে পারে। সে জন্য ব্যক্তি সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় জরুরি আমাদের নিজেদের সচেতন হওয়া।’

সারাবাংলা/এসজে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন