বিজ্ঞাপন

ছোলা-বুট কেউ খেতে চাচ্ছে না, সংসার তো চালাতে হবে!

March 23, 2020 | 11:52 pm

সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে আর যায় করুক না কেন অন্তত একটা মাস্ক পরে নিশ্চিন্ত থাকতে চাইছেন অনেকে। এর ফলে চাহিদা বেড়েছে মাস্কের, বেড়েছে দামও। আর এই সুযোগে অনেকেই দীর্ঘদিনের ব্যবসা ছেড়ে হয়ে গেছেন মাস্কের মৌসুমি ব্যবসায়ী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অনেককেই দেখা গেছে মাস্ক হাতে দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রির জন্য। মাস্ক ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কাউকে ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ায় কিনতেই হচ্ছে। প্রতিটি মাস্ক তারা বিক্রি করছেন ৩০ টাকা করে।

হাসপাতোলের সামনে ছাড়াও আশেপাশে বিভিন্ন সড়ক, গলি ও ফুটপাতে বিক্রি মাস্ক। তাদের ব্যবসাও চলছে ভালো।

বিজ্ঞাপন

এদিকে এতদিন হাসপাতালে যারা দালাল হিসেবে কাজ করতো। যেমন রোগীদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট, টেস্ট করানো ও কেবিনের ব্যবস্থা করে তাদের কাছ থেকে টাকা নিত। তাদের হাতে কাজ কমে যাওয়ায় তারাও এখন মাস্কের ব্যবসা শুরু করেছে। উদ্দেশ্য, সংসার চালাতে হলে কিছু তো একটা করতে হবে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে কথা হয় মাস্ক বিক্রেতা আব্দুস সালামের সঙ্গে। তিনি সাভার থেকে এসেছেন। জানালেন, আগে সাভারে শিশুদের রেডিমেট কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ১২ দিন আগে আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। আগের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসার খরচ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। তাই হাসপাতালের সামনে মাস্ক বিক্রি শুরু করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আব্দুস সালামের মতো অনেকই এই ব্যবসা শুরু করেছেন। তাদের আরেকজন জন আব্দুল কাদের, বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায়। এখন থাকেন বংশাল মহরটুলি এলাকায়। হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে ছোলা-বুটের ব্যবসা করতেন। সেগুলো ছেড়ে তিন দিন ধরে মাস্কের ব্যবসা শুরু করেছেন।

কাদের বলেন, ‘বাড়িতে স্ত্রী ও চার ছেলে-মেয়ে রয়েছে। সবাই পড়াশুনা করে। এখন আরও কেউ ছোলা-বুট কিনছে না। কয়েকদিন ধরে দেখলাম সবাই মুখে মাস্ক ব্যবহার করতাছে। আমার সামনেও কয়েক জনকে মাস্ক বিক্রি করতে দেখছি। দোকানে নাকি এখন আর পাওয়াও যায় না। তাই আমিও এই ব্যবসা শুরু কইরা দিলাম। সংসারতো বাঁচাইতে হইবো।’

কাদের আরও বলেন, ‘আবার শুনলাম সবকিছু বন্ধ কইরা দিব। বন্ধ হইয়া গেলে তখন কি করমু, খামু কি।’ কাদেরের মতো আরও কয়েকজনের একই কথা। মাস্ক ভালো না খারাপ, ভাইরাসের জন্য কতটুকু কার্যকর। সেটা তাদের জানা নেই।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকাল অফিসার ডা. মো. তারেক বলেন, ‘বর্তমানে করোনাভাইরাসের জন্য প্রত্যেকে আতঙ্কের মধ্যে আছে। সবাই মাস্ক পরতে চাই, ভালো হোক আর মন্দ হোক।’

বিজ্ঞাপন

ডা. তারেক আরও বলেন, ‘একটা অরিজিনাল মাস্কের তো এখন অনেক দাম। একটা মাস্কের তিনটি পার্ট থাকে। তিন পার্টের মাস্কগুলো বেশি কার্যকর। হাসপাতালের বাইরে যে মাস্ক বিক্রি হচ্ছে, সেটার কতটা পার্ট আছে সেটা তো জানা নেই।’

সারাবাংলা/এসএসআর/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন