বিজ্ঞাপন

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটাই আমাদের টার্নিং পয়েন্ট ছিল: আকবর

March 29, 2020 | 5:26 pm

মহিবুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শুরুটা কী উড়ন্ত না করেছিল লাল সবুজের যুবারা! গ্রুপ পর্বের একেবারে প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিল ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও এল ৭ উইকেটের সহজ জয়। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসেই কেমন তালগোল পাকিয়ে ফেলল! টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দলটি পাকিস্তানের বোলিং তোপে ১০৬ রান তুলতেই ৯ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চলে গেল ব্যাকফুটে। ঠিক তখনই আকাশের বুক চিড়ে বৃষ্টি নেমে এল শত সহস্র ধারায়। ম্যাচটি ভেসে গেল। তা না হলে হয়ত গ্রুপ পর্বে একটি হারের ক্ষত নিয়েই আকবরদের সুপার লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে হত। কিন্তু ভাগ্যদেবীর প্রসন্ন দৃষ্টিতে তা হয়নি বটে তবে টুর্নামেন্টের সবচে বড় শিক্ষাটি তারা পেয়েছিলেন এই ম্যাচেই যা কীনা পরের ম্যাচগুলোতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠার জ্বালানী যুগিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

সেটা কীভাবে? পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয় থেকেই সম্বিৎ ফিরে পেয়েছিলেন টাইগার যুবারা। তারা বেশ ভালোকরেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, দেশবাসীকে ফাইনালের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন তা রক্ষায় চাই দৃঢ় ব্যাটিং। যেই ভাবা সেই কাজ। এরপর সুপার লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমি ফাইনালে তাদের চোয়ালবদ্ধ ব্যাটিং দলকে নিয়ে গেল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চে। সেই মঞ্চেও ভারতের দেওয়া ১৭৮ রানের মামুলি রক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৮৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিলেন তানজিদ হাসান, মাহমুদুল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়রা। কিন্তু অধিনায়ক আকবর আলীর বরফশীতল মাথার ব্যাটিং (অপরাজিত ৪৩) ও রিটায়ার্ড হার্ট থেকে ফিরে পারভেজ হোসেন ইমনের লড়াকু ৪৭ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে প্রথম কোনো বিশ্বকাপ মুকুট জয়ের হর্ষে ভাসায়।

বয়স আহামরী তেমন নয়। মাত্র ১৯! কিন্তু তারপরেও বিশ্বকাপ ফাইনালের ওমন স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে তিনি স্নায়ুর যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা নি:সন্দেহে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। মজার ব্যাপার হলো এটা তার কাছে খুব বেশি অস্বাভাবিক মনে হয়নি। বরং তিনি স্রেফ তার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মত তার।

ফাইনালের মহারণে বোলিংয়ে নেমে কী আগ্রাসনটাই না দেখালেন দু্ই আকবর সতীর্থ শরিফুল ইসলাম আর তানজিদ হাসান তামিম! আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়ানো বলের সঙ্গে তাদের স্লেজিংও ছিল নজরকাড়া। তাতে অবশ্য বিন্দু মাত্র রাগ নেই আকবরের। বরং বিষয়টি তিনি স্পোর্টিংলিই নিয়েছেন। কেননা ক্রিকেটে স্লেজিং নতুন কোনো বিষয় নয়। আর আগ্রাসন? তার ভীষণ পছন্দ। চুপচাপ টাইপের পেসার তার কোনো কালেই পছন্দ নয়।

বিজ্ঞাপন

ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে বিশ্বকাপ থেকে বীরবেশে ফিরে দিন পাঁচেকের ছুটি পেয়েছিলেন আকবর আলী। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেছেন প্রস্তুতি ম্যাচ। জিম্বাবুয়ে সিরিজের সময় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অনুশীলনে। গেল বছর বিকেএসপির হয়ে খেলা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ডিপিএল ২০১৯-২০২০ মৌসুমে খেলছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে। প্রাইম ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই খেলেছেন ৩১ রানের ইনিংস। আপাতদৃষ্টিতে ইনিংসটিকে আহামরি কিছু মনে না হলেও ম্যাচের যে পরিস্থিতি ছিল তাতে আকবরের এই ইনিংস ছিল দারুণ কার্যকর। কেননা প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটিতে তার ব্যাটিং জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। তবে তিনি আশা করছেন, গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে চ্যাম্পিয়নের মুকুট ফিরিয়ে দিতে পারবেন।

প্রাণঘাতী করোনা বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়ায় আপাতত দেশেরই সব খেলাই বন্ধ। আকবর তাই ফিরে গেছেন নিজ শহর রংপুরে। সেখানে নিজেকে ঘর বন্দী করে রেখেছেন। নেহায়াৎ প্রয়োজন না হলে থেকে বের হচ্ছেন না। করোনা প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি মানুষকে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ তার।

করোনা প্রভাবমুক্ত হয়ে দেশে ক্রিকেট ফিরলে আকবরও খেলায় ফিরবেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে খেলছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে।

বিজ্ঞাপন

নিজ শহর রংপুর থেকে মুঠোফোনে সারাবাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সেসব কথাই জানালেন লাল সবুজের বিশ্বজয়ী এই অধিনায়ক। জানিয়েছেন আরও অনেক কিছুই। পাঠকদের উদ্দেশ্য তা তুলে ধরা হলো।

সারাবাংলা: অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শিরোপা জয় মানে আপনার কাছে কী? শুধুই একটি শিরোপা নাকি আরও কিছু?

আকবর: যদি সামগ্রিকভাবে বলি গত দুই বছর আমরা এজন্যই কষ্ট করেছি। আমরা মূলত এই লক্ষ্যটা নিয়েই আগাচ্ছিলাম। তাই বলতে পারি যে জন্য কষ্টটা করেছিলাম সে ফল পেয়েছি। আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে যদি বলি অবশ্যই এটা একটা বড় অর্জন।

সারাবাংলা: একটু পেছনে যাই। বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে মিরপুরে যে সংবাদ সম্মেলনটা করলেন সেখানে সাংবাদিকদের উপস্থিতি খুবই কম ছিল। কিন্তু যখন ফিরলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বিসিবি’র উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলেন এবং ফেরার পরের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উপচে পড়া ভীড়। কখনো কি এমন ভেবেছিলেন?

বিজ্ঞাপন

আকবর: এটা আমি স্বাভাবিকভাবেই দেখছি। কারণ যখন আমরা বিশ্বকাপে গিয়েছিলাম বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লক্ষ্য যেটা ছিল সেমি ফাইনাল। তো দেশের সবার প্রত্যাশাও হয়ত ছিল ওরকম কিছু একটা হবে। তবে আমাদের দলের মধ্যে ওই বিশ্বাসটা ছিল যে না আমরা হয়ত আরো বেশি দূর যেতে পারি। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে আমি ও সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম যে আমরা ফাইনালের লক্ষ্য নিয়েই যাচ্ছি। তো যখন ওটা হলো, আমার ধারণা দেশের মানুষ খুব ভালোভবেই গ্রহণ করেছে।

সাাবাংলা: এবার টুর্নামেন্টে যাই। প্রথম ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ৯ উইকেটের জয়। এই জয়টিই কি বিশ্বকাপে আপনাদের টিউন সেট করে দিয়েছিল?

আকবর: ওই শুরুটা আমাদের জন্য গুরুত্পূর্ণ ছিল। কেননা কোনো টুর্নামেন্টের শুরুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার মনে হয় পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের যে ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেসে গেল সেই ম্যাচে ব্যাটিংটা ভালো হয়নি। পারফরম্যান্সও ভালো ছিল না। তবে ওই ম্যাচটা আমাদের হুঁশ ফিরিয়েছে। ওই ম্যাচ থেকেই আমরা পণ করেছি যে প্রতিটি মুহুর্তেই সিরিয়াস থাকতে হবে। তো পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটাই টার্নিং পয়েন্ট ছিল।

সারাবাংলা: কীভাবে একটু বিস্তারিত বলবেন?

আকবর: ওই যে, ১০৯ রান তুলেতেই ৯ উইকেট হারালাম। আমাদের ব্যাটসম্যানেরা তখনই বুঝে গিয়েছিল যে শিরোপা জিততে কী ভূমিকা পালন করতে হবে। জানেন? টানা এক বছর আমাদের এরকম হয়নি। ২৫০ রান হয়নি এমন ম্যাচ খুবই কম, একেবারে হাত গোনা। তো ওই ম্যাচেই বুঝে গিয়েছিলাম যে ভুলগুলো হয়েছে ওগুলো আর করা যাবে না।

সারাবাংলা: ফাইনাল ম্যাচের কথায় আসি। ভারতের বিপক্ষে বল হাতে শুরুটাই অসাধারণ করল শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব। সেদিন ওদের বোলিংয়ে যে আগ্রাসন দেখেছি এটা কি শুধুই প্রতিপক্ষ ভারত বলে?

আকবর: না! ভারত বলে না! অধিনায়ক হিসেবে আমি পেসারদের আগ্রাসন পছন্দ করি। চুপচাপ পেস বোলার আমার অত ভালও লাগে না। তবে সবকিছু একটা সীমীত পরিসরে করতে হবে। আমার মনে হয় খেলার মধ্যে যা যা হয়েছিল সবকিছু ঠিকই ছিল। খেলার মধ্যে খারাপ কোনো কিছুই আমি দেখিনি।

সারাবাংলা: স্লেজিংটা একটু বেশিই হয়েছে?

আকবর: এটা হয়ত অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণতার কারণেই হয়েছে। যেহেতু ফাইনাল ম্যাচ সবাই অনেক বেশি প্যাশনেট ছিল। তো আমার মনে হয় এই ব্যাপারটাই বেশি কাজ করেছে।

সারাবাংলা: ভারতের ১৭৮ রান তাড়া করতে নেমে ৮৫ রানে আপনাদের ৫ উইকেট পড়ে গেল। পারভেজ হোসেন ইমন চলে গেলেন রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে, যদিও পরে নেমেছেন। কিন্তু ওই দূর্যোগপূর্ণ মুহুর্তে আপনি একা লড়েছেন। এবং ম্যাচটা বের করে নিয়ে এলেন। আপনার বয়স খুবই কম। এই ধৈর্য্য ধরা আপনার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? আপনি ভেবেছিলেন যে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত বের করে নিয়ে আসতে পারবেন?

আকবর: বিশ্বাসটা ছিল! এবং লক্ষ্য একটাই ছিল যে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাব এতে যা হবার হবে। বয়সের কথা বলছেন? যেহেতু আমরা সমবয়সী সেহেতু পেরেছি তাছাড়া এরকম খেলা আমরা আগেও বেশ কয়েকটি খেলেছি। অতীত অভিজ্ঞতাগুলোও এখানে কাজে দিয়েছে।

সারাবাংলা: একটি দল হয়ে খেললে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতাও সম্ভব। আগামিতে এমন জিততে চান নিশ্চয়ই?

আকবর: আপাতত আমি অতদূরে চিন্তা করতে চাই না। যেখানে খেলছি সেখানেই উপভোগ করার চেষ্টা করছি। প্রিমিয়ার লিগটা ছিল এটা নিয়ে খুব আশাবাদী ছিলাম যে প্রথম বিকেএসপির বাইরের কোনো ক্লাবে খেলছি, এখানে ভালো করতে হবে। কিন্তু করোনায় বন্ধ হয়ে গেল। তো সামনে যেখানেই খেলব উপভোগ কারার চেষ্টা করব আর শেখার চেষ্টা করব। ওতো দূরে এখনই ভাবছি না আমাকে এখানে দেখতে হবে, ওখানে দেখতে হবে। দিন শেষে আমার লক্ষ্য জাতীয় দলে খেলা কিন্তু ওটাকে নিয়ে তো সবসময় ভাবতে পারব না। বা আমি ভাবলেই হবে না।

সারাবাংলা: কত বছরের মধ্যে নিজেকে জাতীয় দলে দেখতে চান? নির্বাচকমন্ডলী আপনাদের চারজনকে নিয়ে খুবই আশাবাদী।

আকবর: আমি সেজন্য চেষ্টা করব। কিন্তু এখনই আমি ওটা নিয়ে ভাবছি না।

সারাবাংলা: আপনি একজন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ জাতীয় দলে এই ভূমিকার তিনজন ইতোমধ্যেই খেলছেন; মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিঠুন। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া আপনার জন্য কতটা কঠিন হবে বলে মনে করছেন?

আকবর: সহজ হবে না। কিন্তু আপনি যদি আগেই চিন্তা করেন আমার জায়গায় এ আছে ও আছে তাহলে কিন্তু কঠিন। আমি বিশ্বাস করি ভালো খেললে আমি জায়গা পাব। তবে আবারও বলছি আমি এখনই এভাবে ভাবছিনা।

সারাবাংলা: এটা আপনার দ্বিতীয় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। প্রথম আসরে বিকেএসপি’র হয়ে খেলেছিলেন। কিন্তু এবার খেলছেন লিগের চ্যাম্পিয়ন একটি দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে। যদি করোনা পরিস্থিতি সামলে লিগ ফেরে এই দলটার জন্য কি করার ইচ্ছে আছে? লিগ টেবিলে কোথায় দেখতে চান?

আকবর: অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য থাকবে। কেননা আমাদের দলও ভালো। অনেক সিনিয়র প্লেয়ারও আছে। তো আমি অবশ্যই আশবাদী যে আমরা ভালো ফলাফল করতে পারব।

সারাবাংলা: করোনার সময়টা কি করে কাটছে?

আকবর: খুবই বোরিং একটা সময়কাটছে। বাসায়ই থাকি। গেমস খেলি, মুভি দেখি, টিভি দেখি এভাবেই কাটছে।

সারাবাংলা: আপনাকে ধন্যবাদ।

আকবর: আপনাকেও।

আরো পড়ুন:

মিডল অর্ডারেই স্বাচ্ছন্দ্য মিঠুনের

নিজের জায়গা ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী সাদমান

বাতাসে বল ঘুরাতেই নাঈমের যত আনন্দ

করোনা থামিয়ে দিয়েছে সৌম্য’র বিশ্বকাপ ভাবনা

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটাই আমাদের টার্নিং পয়েন্ট ছিল: আকবর

বিশ্বকাপে আমাদের এক-দুইটা ম্যাচ জেতা সম্ভব ছিল: জেসি

‘এমনভাবে ফিরতে চাই যেন আর বের হতে না হয়’

সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে চান নাঈম

নেইমারের সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পান সাইফউদ্দিন

সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএস

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন