বিজ্ঞাপন

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় কমিটি গঠনের আহ্বান ফখরুলের

March 31, 2020 | 7:14 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় কমিটি গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় একটা জাতীয় কমিটি তৈরি করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের বাস। আমাদের অর্থনীতিও একেবারে নিচের দিককার অর্থনীতি। ফলে এই ধরনের সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করা দরকার। সেটা করতে পারলে দেশের জন্য ভালো, মানুষের জন্যও ভালো। আমরা মনে করি এখনো সময় আছে। সরকারের উচিত একটি জাতীয় কমিটি  গঠন করা।’

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুরে উত্তরার বাসায় কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন- দেশে নতুন ২ করোনা রোগী শনাক্ত, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫১

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা সবসময় সরকারকে সাহায্য করতে চেয়েছি। আমরা বলেছি, আসনু সবাই একসঙ্গে কাজ করি, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। আমরা কখনোই কেবল সমালোচনার জন্য সমালোচনা করিনি। এখনো করি না। তাই জাতীয় কমিটির প্রস্তাব করছি।’

কীভাবে এই কমিটি হতে পারে?— এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকেই উদ্যোগ নিতে হবে। পলিটিক্যাল পার্টি, সিভিল সোসাইটি— সবাইকে নিয়ে একখানে বসে মিটিং করতে হবে, তা বলছি না। ঘোষণা করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই এটা করা যেতে পারে।’

“তখন সবার মধ্যে একটা ধারণা আসবে— ‘উই আর ওয়ান’। আমরা এক। দে ক্যান ডু। অথবা ওইভাবে সব নিরাপত্তা রেখে যদি সভা করতে চান, সেটিও করা যেতে পারে,”— বলেন মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই ঘরবন্দি মানুষজন, বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষজনের জন্য খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে।

আরও পড়ুন- করোনায় ভীত হবেন না, আমাদের বিজয় হবেই— দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটের শঙ্কা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটা দাঁড়াচ্ছে, সেটা হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষজনের অর্থনৈতিক সমস্যা। বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষই এখন দিন আনে দিন খায়। এই বিশাল অংশ কয়েকদিন ধরে কোনো আয় করতে পারছে না এবং এটা একটা টার্মিনাল পজিশনে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই মানুষগুলোর জন্য যদি ইমিডিয়েটলি উপযোগী কার্য্কর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না যায়, তাহলে বড় রকমের বিপর্যয় দেখা দেবে। যেটা আমরা ১৯৭৪ সালে দেখেছি, সে ধরনের বিপর্যয় দেখা দেবে। এই বিষয়গুলো সরকারের দেখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে যদি কাজে লাগানো যায় এবং অন্যদিকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা আছেন, একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সম্পৃক্ত করে, রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করে যদি একসাথে কাজ করা যায়, তাহলে অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে।’

হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য কোনো রোগে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলেও চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন না। অ্যাপেনডিক্সের সমস্যায় ভোগা একজন রোগী আটটি হাসপাতালে ঘুরেও আল্ট্রাসোনোগ্রাম করাতে পারছেন না। আমরা যে কারণে বার বার বলেছি, বিষয়টিকে পুরোপুরি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে জাতিকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।’

আরও পড়ুন- অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকাতে এখনই উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

সরকারকে এ পরিস্থিতিতে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা এক্সিসট্যান্সের প্রশ্ন। সেই এক্সিসট্যান্সের জন্য এখন সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। দায়টা সরকারের, দায়িত্ব সরকারের। তাকেই উদ্যোগটা নিতে হবে— বিরোধী দলকে কীভাবে কাজে লাগাবে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিভাবে কাজে লাগাবে, পরিবেশ কীভাবে তৈরি করবে। এখানে সমস্যা অনেক। আমরা মনে করি, সরকারের অনেক অনেক বেশি দায়িত্ব, তাদের উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।’

ছুটি ঘোষণার পরও গণপরিবহন চালু রাখা সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি মনে করি এটা বড় ভুল হয়েছে। ছুটি ঘোষণার পর দুই দিন পর্যন্ত পরিবহন চালু রাখা ঠিক হয়নি। এতে করে  মানুষ সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে। এটা হতে পারে যে ঢাকাকে আইসোলেট করা হয়েছে।’

চীনের ঘটনার পর সরকার যথাযথ পূর্ব-প্রস্তুতি নিলে সমস্যা প্রকট হতো না বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘সমস্যাগুলো প্রথম থেকে তারা (সরকার) দেখলে এটা প্রকট আকার ধারণ করত না। লকডাউন যেটাকে বলে, সেটা সেভাবে হয়নি। ফলে দেখা গেছে, প্রথম দুয়েকদিন কক্সবাজারে পর্যন্ত মানুষ বেড়াতে গেছে, ছুটি কাটাতে সিলেটে গেছে। আমাদের দেশে সবাই তো সচেতন না। অনেকে বুঝতে পারেনি। হাজার হাজার মানুষ ট্রেনে, লঞ্চে একসাথে গেছে। এটা তো আরও ভয়ংকর।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন