বিজ্ঞাপন

সব শ্রেণির মানুষের জন্য ৪ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর

April 5, 2020 | 11:22 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তারের বড় একটি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানাগুলোতে যেমন অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি চাহিদা কমেছে, তেমনি নিম্ন আয়ের মানুষজনের উপার্জনের পথও রুদ্ধ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় সব ধরনের অর্থনৈতিক স্তরের মানুষদের জন্যই কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বল্প মেয়াদি, অর্থাৎ দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য চার কার্যক্রম ঘোষণা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কার্যক্রমের ঘোষণা দেন। দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রভাব এবং তা মোকাবিলায় আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণাসহ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন- একটা মৃত্যুও কাম্য নয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় আমরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে পারলে করোনাভাইরাসের প্রভাব অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করি।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী যে চার কার্যক্রম ঘোষণা করেন সেগুলো হলো—

ক. সরকারি ব্যয় বাড়ানো: জনগণ যেন আর্থিক কষ্ট না পায়, সেজন্য সরকারি ব্যয় বাড়ানো হবে। এ ক্ষেত্রে কর্মসৃজনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। বিদেশ ভ্রমণ বা বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা হবে।

আরও পড়ুন- ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ঋণের স্থিতির সঙ্গে জিডিপি’র অনুপাত অত্যন্ত কম (৩৪ শতাংশ)। ফলে সরকারি ব্যয় বাড়লেও সেটা সামষ্টিক অর্থনীতিতে কোনো চাপ তৈরি করবে না।

খ. আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: আর্থিক অভিঘাত মোকাবিলায় ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা চালু করা হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা ছাড়াও উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখা হবে এসব আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের মূল উদ্দেশ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে, মানুষ যেন কর্মহীন না হয়ে পড়ে। আর বৃহৎ শিল্প কারখানাই হোক আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীই হোক, সবার জন্যই আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রয়োজন হবে।

আরও পড়ুন- করোনায় যা ক্ষতি, যা করণীয় জানালেন প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

গ. সামাজিক সুরক্ষার আওতা বৃদ্ধি: সরকারের যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে, তার আওতা আরও বাড়ানো হবে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী যে জনগোষ্ঠী (দিনমজুর বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত) তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা হবে। এর আওতায় যেসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেগুলো হলো—

১. বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ; ২. ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি; ৩. প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ; ৪. বয়স্ক ও বিধবা ভাতা দারিদ্রপ্রবণ ১০০ উপজেলায় শতভাগে উন্নীত করা; এবং ৫. জাতির পিতার শতবর্ষ উপলক্ষে হাতে নেওয়া গৃহহীন মানুষের গৃহ নির্মাণ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন।

আরও পড়ুন- শবে বরাত ও নববর্ষ ঘরে বসে পালনে ফের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ঘ. মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো: বাংলাদেশ ব্যাংক সিআরআর ও রেপো হার কমিয়ে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রয়োজনে আগামীতেও এ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে, মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে গেলেও যেন মূল্যস্ফীতি না ঘটে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে মুদ্রা সরবরাহ অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ। সে অনুযায় বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

পরে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ধরনের শিল্প খাতের জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্যাকেজের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন