বিজ্ঞাপন

লকডাউন পরবর্তী করণীয়

April 8, 2020 | 3:25 pm

বিশ্ব এখন পার করছে কোভিড-১৯ বা করোনা মহামারির কাল। ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের এই যুদ্ধে বিভিন্ন দেশ, জাতি নানাবিধ পদ্ধতি অবলম্বন করছে। এরমধ্যে বহুল প্রচলিত এবং কার্যকরী একটি পদ্ধতি হচ্ছে করোনা আক্রান্তদেরকে অন্য সবার কাছ থেকে আলাদা করে ফেলা বা লকডাউন। যাতে ভাইরাসটি জন থেকে জনে ছড়াতে না পারে।  লকডাউন মানে আক্রান্তদের সনাক্ত করা ও নতুন করে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করা। তাই একবার লকডাউনের পর কিছু কিছু এলাকা বা ঘরবাড়ি আবারও নতুন করে লকডাউন হতে পারে। হয়ত ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যেতে পারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে। সবাই নতুন করে আবার স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করবে কিন্তু সবাইকেই দীর্ঘদিনের জন্য অনেকগুলো বিষয় মেনে চলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘমেয়াদে অবশ্যই পালনীয় বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেরই পরিস্কার ধারণা নেই। আসুন দেখে নেই বিষয়গুলো কী-

১. সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২. বাড়ির বাইরে বের হলে সবসময় ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

৩. নিজের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৪. বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই পরনের পোশাক সবসময় অ্যান্টিসেপটিক বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। জুতাও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৫. গাড়ির মধ্যে চালক বা অন্য কারও সঙ্গে থাকলে এসি বন্ধ রাখতে চেষ্টা করুন। কারণ, বদ্ধ জায়গায় এয়ার সার্কুলেশন হতে থাকবে। এতে আপনার মাস্ক ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই চেষ্টা করুন জানালা খুলে রাখতে যাতে বাতাস চলাচল করে।

বিজ্ঞাপন

তবে এসব নিয়ম মেনে চললেও সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখে দেবে আপনার আমার সন্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশেষত স্কুলে যায় যেসব বাচ্চা তারা ঝুঁকিতে থাকবে সবচেয়ে বেশি। কারণ, শিশুরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বোঝে না। আবার স্কুলগুলোর অবস্থাও এমন যে বাচ্চারা গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য হয়। এমন পরিস্থিতিতে বাচ্চারা স্কুলে যাবে কীভাবে? ভাবতে হবে এটি নিয়েও। প্রয়োজন একটি কার্যকরী সমাধান বের করা।

আবার বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রেই বিষয়টা আর আগের মত থাকবে না। বদলে যাবে সবই। এখন থেকে প্রতিটি দেশই ভাইরাস রোধে ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন নিয়মকানুন চালু করবে।

আবার সারাবিশ্বেই লকডাউন জারি থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকট দেখা দেবে। কারণ কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। ছোট কারখানার পাশাপাশি উচ্চঋণের সরবরাহকারী কারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে অনেক মানুষ চাকরি হারাবে। ফলে শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ব্যবসা বাণিজ্য ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান হয়ত মন্থরগতিতে দীর্ঘদিন ধরে চললেও এই মুহুর্তে আমাদের জন্য শুধুমাত্র বেঁচে থাকাটাই একমাত্র লক্ষ্য/উদ্দেশ্য।

আমাদের অর্থ আছে, ক্ষমতা আছে, পারমাণবিক বোমা আছে, গর্ব আছে, আছে আরও অনেক কিছু কিন্তু চোখে দেখা যায় না এমন একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুর কাছে সেগুলো কিছুই না। তাই আমাদের করোনার কাছ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। সেই সঙ্গে যারা করোনাভাইরাস সংক্রমণে জীবন দিচ্ছে বা অসুস্থ হচ্ছে তাদের যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

একই সঙ্গে চলুন প্রতিজ্ঞা করি, আমরা আর প্রকৃতির ক্ষতি করবো না, ধ্বংসযজ্ঞ চালাবো না, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করবো।

একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি আমাদের শেখাচ্ছে আমাদেরকে নিজ নিজ বাবা-মা ও অন্যান্য বয়স্কদের যত্ন নিতে হবে, শিশুদের যত্ন নিতে হবে। যতটা সম্ভব ক্লাব, বার, বিচ বা অন্যান্য ভিড়সংকুল জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতা মেনে জীবনযাপন করতে হবে। যদি এই পরিস্থিতিতেও আমরা না শিখি তাহলে হয়ত অদূর ভবিষ্যতে নতুন রূপে নতুন কোন মারণঘাতি ভাইরাস আসবে যার নাম হয়ত হবে ‘মরো না’।

সারাবাংলা/এসবিডিই/আরএফ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন