বিজ্ঞাপন

হাসপাতাল লকডাউন, জানেন না সিভিলসার্জন

April 14, 2020 | 5:12 pm

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মগবাজার ইনসাফ বারাকা কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল লকডাউন করা হয়েছে। দুজন চিকিৎসক ও একজন নার্স আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহে এই হাসপাতাল লকডাউন করে প্রশাসন। জানা গেছে একজন নার্স ইতোমধ্যেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত। তবে ১৪ এপ্রিল থেকে হাসপাতালটি লকডাউন করা হলেও এই বিষয়ে কিছুই জানেন না ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান।

বিজ্ঞাপন

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সারাবাংলাকে লকডাউনের তথ্য নিশ্চিত করেন হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মোহাম্মদ গোলাম আজম।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওই হাসপাতালে ১১ জন আক্রান্ত আছেন। আমরা বিল্ডিংটি লকডাউন করেছি। সেখান থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবে না, বাইরে থেকে সেখানে কেউ ভেতরে যেতে পারবে না।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই একজন নার্স আক্রান্ত। দুজন চিকিৎসকের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এখনো জানা যায়নি। আর তাই হাসপাতাল লকডাউন। হাসপাতালে বর্তমানে দুইজন চিকিৎসকসহ অন্যরা আছেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, এক্ষেত্রে আসলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমে কথা বলতে হবে। যদি লকডাউন হতো তাহলে তো তারা আমাকে জানাতো। এটা নিয়ে তাই অধিদফতরে কথা বলতে হবে। আজকেও এটা নিয়ে মিটিং করা হয়েছে।

গণমাধ্যমকর্মীরা তাহলে তথ্য কোথা থেকে নেবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই কন্ট্রোল রুম থেকেই তথ্য নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘লকডাউন করবে প্রশাসন। সিভিল সার্জন আসলে লকডাউন করতে পারেন না। কিন্তু সিভিল সার্জন কর্মকর্তা আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য দিবেন প্রশাসনকে। প্রশাসন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।’

মগবাজারে একটি হাসপাতাল লকডাউন করা হয়েছে। এই বিষয়ে তথ্যের জন্য সিভিল সার্জন বলেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।

গণমাধ্যম কর্মীরা তাহলে তথ্য কোথা থেকে নিবে এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর পুরো বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে সিভিল সার্জন কর্মকর্তা এই তথ্য জানাবেন।

এই বিষয়ে ঢাকার সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি কিছুই জানি না।

লকডাউন বিষয়ে না জানালেও অন্তত কোনো ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া গেছে শুধু এটুকু তথ্য দেওয়া যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি উত্তেজিত হয়ে সারাবাংলাকে বলেন, আমার কাছে কোনো তথ্যই নাই। আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করলে হবে?

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তিনি জানিয়েছে সিভিল সার্জন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য জানাবেন। এ বিষয়ে ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সারাবাংলাকে বলেন, আমি ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলবো, আপনি তো আমার রেফারেন্স না। আমার যখন দরকার তখন আমি কথা বলবো। আমি যখন প্রয়োজন হবে তখন কথা বলবো।

এই ক্ষেত্রে আপনি কোনো তথ্য দিচ্ছেন না আমরা কী সেটা বলতে পারি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, হ্যাঁ আপনি বলতে পারেন। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমি দিতে পারি না।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন কর্মকর্তা তথ্য জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রয়োজন নেই। বিষয়টা হলো উনারা কী করছেন সেই তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের জানাবেন। আমরা তাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) সভাপতি তৌফিক মারুফ সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের গণমাধ্যমকে তথ্য দিতে হবে, তথ্য জানাতে হবে। তথ্য না জানানো হলে মানুষের মধ্যে ভুল বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। সুতরাং আমাদের যেকোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য তার সঙ্গে সম্পর্কিত যে বক্তব্য দরকার সেটি দেওয়া প্রয়োজন। যার বক্তব্য দেওয়া দরকার তিনি যেন বক্তব্যটি দেন সেই আহ্বানই জানাই বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য।

সারাবাংলা/এসবি/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন