বিজ্ঞাপন

‘গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা ও ঝুঁকি ভাতা নিশ্চিত করুন’

May 3, 2020 | 2:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা ও ঝুঁকি ভাতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার (৩ মে) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ, গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা, নিয়মিত বেতনভাতা, আপৎকালীন ঝুঁকি ভাতা নিশ্চিত করুন। কারণ, নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে গণমাধ্যম। ভয়াবহ প্রাণঘাতী করোনা দুর্যোগেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিকদের বস্তুনিষ্ঠ তথ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ফ্রন্টলাইনে থেকে সাহসী ভূমিকা পালন করছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার নগর সম্পাদক হুমায়ুন কবির খোকন মারা গেছেন। এ ছাড়া বহু সংবাদকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে নিবর্তনমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কর্মহীন দুস্থদের ত্রাণ বিতরণে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দুর্নীতির সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশে গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত রাখা ও সাংবাদিকদের সেল্ফসেন্সরশিপে বাধ্য করার প্রয়াস চলছে। গ্রেফতার ও মামলা দেওয়া হচ্ছে, হামলা করা হচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘করোনার সংকটে আমরা দেখেছি কীভাবে এক শ্রেণির মালিক অধিক লাভের আশায়, সরকারের প্রণোদনা পেতে লাখ লাখ শ্রমিককে গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করেছে। একবার শহর থেকে গ্রামে, আবার গ্রাম থেকে শহরে আনা হচ্ছে শ্রমিকদের। এটি মানবিক মর্যাদায় স্পষ্ট আঘাত এবং শ্রম অধিকারের লঙ্ঘন।’

বিজ্ঞাপন

‘গাজীপুরসহ বিভিন্ন কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হচ্ছে, ছাঁটাই করা হয়েছে শ্রমিকদের। সরকার এটা সামাল দিতে ব্যর্থ। করোনা ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা ন্যায্য দাবিতে বিক্ষোভ করছে। তাদের প্রতি অত্যাচার করা হচ্ছে কোথাও কোথাও। এসব বন্ধ করতে হবে। সম্মানজনক রুজি ও নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি সমর্থন করে বিএনপি’— বলেন রিজভী।

‘ত্রাণ বিতরণে সারাদেশে চরম অনিয়ম চলছে’

রিজভী বলেন, ‘কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে। ভয়াবহ মহামারি করোনাভাইরাসের থাবার দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও মুখ চিনে চিনে সরকারি দলের লোকজনদেরকে ত্রাণ সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ জায়গায় প্রকৃত অসহায় দুস্থরা বঞ্চিত হচ্ছেন। ত্রাণ বা খাদ্য সহায়তার জন্য অনেকে ছুটে বেড়ালেও পাচ্ছেন না। ফলে অসংখ্য মানুষ নিত্যদিন উপোস থাকছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠাসহ চিকিৎসা জরুরি অবস্থা ঘোষণা, করোনা মোকাবিলায় রোডম্যাপ প্রকাশ, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ ও খাদ্যঝুঁকি নিয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও সরকার তাতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা বলেছিলাম- জাতীয় ঐক্যের ফলে গড়ে ওঠা সম্মিলিত প্রয়াস ও মনোবল আরও শক্তিশালী হবে এবং দুর্যোগ উত্তরণ সহজ হবে। ভয়াবহ সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য অনিবার্য। কিন্তু সরকার জাতীয় ঐক্যতো প্রত্যাখ্যান করেছে। সেইসঙ্গে উপহাসও করছে। তারা জানে জাতীয় ঐক্য হলে একপেশে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও পরাক্রমশালী একদলীয় ক্ষমতার ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হবে।’

‘ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা’

রিজভী বলেন, ‘সরকারের পূর্ব প্রস্তুতির অভাবে চিকিৎসা উপকরণ, রোগ-নির্ণয়, চিকিৎসা ব্যবস্থা কিছুই নেই আমাদের। দীর্ঘ সময় পেলেও অপরিণামদর্শী আহম্মকির কারণে বাংলাদেশে করোনার আঘাত এখন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য ওঠানামা করলেও এখন চারশ’ থেকে ছয়শ’র মধ্যে থাকছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, সংক্রমণের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মে মাসে ৫০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। মৃত্যু হতে পারে আটশ’ থেকে এক হাজার জনের। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হলে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হারে বেড়ে এক লাখে পৌঁছাতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রায় দুই হাজার মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গভীর উদ্বেগ নিয়ে বলছেন, চলতি মে মাসটা দেশের জন্য এলার্মিং। বলা হচ্ছে-এ মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হতে পারে। এই মাসটা সাবধানে না থাকলে করোনার মহামারী দেশকে বিপর্যস্ত করে দেবে। অথচ সরকার এ নিয়ে এখনো নির্বিকার।’

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন