বিজ্ঞাপন

করোনায় ‘অস্বাভাবিক হারে’ বেড়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য

May 10, 2020 | 4:20 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ এড়াতে মানুষ ঘরবন্দি থাকায় বায়ু দূষণ, পানি দূষণ কমলেও ‘অস্বাভাবিক হারে’ বেড়েছে পলিথিনসহ একবার ব্যবহারযোগ্য বা ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার। তাতে করে বেড়েছে প্লাস্টিক বর্জ্যও। করোনা থেকে সুরক্ষায় ব্যবহৃত মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজারের বোতল এই বর্জ্য তৈরিতে ‍ভূমিকা রাখছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়তি এই প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশসহ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমিকর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১০ মে) এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (এসডো) এ তথ্য তুলে ধরে। ‘কোভিড-১৯ মহামারিতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার: যথোপযুক্ত ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই: মারাত্মক হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ’ শীর্ষক এক জরিপের ফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপের ফল তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় মার্চ মাসে। ওই মাসের শেষে সারাদেশে ১৪ হাজার ১৬৫ টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে। এগুলো এসেছে বাড়িতে ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ব্যবহৃত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের তৈরি সার্জিকাল ফেস মাস্ক, সার্জিক্যাল ও প্লাস্টিক হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজারের প্লাস্টিক বোতল ও পলিথিন ব্যাগ থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়েছে পলিথিনের শপিং ব্যাগ থেকে। একমাসেই পলিথিনের ব্যাগ থেকে উৎপন্ন হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৬ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য।

করোনা সুরক্ষায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম থেকে উৎপন্ন প্লাস্টিক বর্জ্যের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গত এক মাসে সারাদেশে ১২১ কোটি ৬০ লাখ হ্যান্ড গ্লাভসের ব্যবহার হয়েছে। এ  থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে প্রায় তিন হাজার ৩৯ টন। এই বর্জ্যের প্রায় ২০ শতাংশ কেবল রাজধানী ঢাকাতেই জমা হয়েছে। সারাদেশে গড়ে ৯ শতাংশ জনসাধারণ সার্জিকাল হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করেছে। এছাড়া সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৪৫ কোটি সার্জিকাল ফেস মাস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। এ থেকে অন্তত এক হাজার ৫৯২ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এসডো নেতারা বলেন, এসব প্লাস্টিক বর্জ্য যথাযথভাবে নিষ্কাশন না করা হলে এগুলো থেকে মাটি, পানি ও বায়ুসহ পরিবেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে ভয়াবহ দূষণ দেখা দিবে। বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত কর্মীরা যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় বর্জ্য থেকে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রে কর্মরতদের ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভসসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সরবরাহ করা জরুরি বলে পরামর্শ দেওয়া হয়।

সংগঠনের চিফ টেকনিকাল অ্যাডভাইজর প্রফেসর আবু জাফর, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক, এসডো’র মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব ও বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ন কবির বুলবুল, এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার সাইদা মেহরাবীন সেঁজুতি ও প্রজেক্ট অ্যাসোসিয়েট নাজমা আহমেদ অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন