বিজ্ঞাপন

একজন করোনাজয়ী চিকিৎসকের গল্প

May 16, 2020 | 1:23 pm

তিথি চক্রবর্তী

কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়ছে পৃথিবী। সবার দিন কাটছে আতঙ্কে। করোনা জয় করে যারা সুস্থ হয়ে ফিরছেন তারা একেকজন সফল ‘যোদ্ধা’। দৃঢ় মনোবল নিয়ে তাদের এই কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমনই একজন ব্যক্তি চিকিৎসক প্রদীপ্ত চৌধুরী। যশোরের কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ।

বিজ্ঞাপন

সুস্থ হওয়ার জন্য চিকিৎসক প্রদীপ্ত চৌধুরী যে ধরনের জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলেছেন তা নিয়ে সারাবাংলার সঙ্গে কথা বলেন। সারাবাংলার পাঠকদের জন্য সেই আলাপচারিতা তুলে ধরা হলো-

সারাবাংলা: কোভিড-১৯ শনাক্ত হলো কখন?

প্রদীপ্ত চৌধুরী: এপ্রিলের মাঝামাঝি ভারত থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা এক রোগীকে কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেই রোগীর দেখতে যেতাম পিপিই পরেই, তারপরও রেহাই পাইনি।

বিজ্ঞাপন

৩/৪ দিন পর থেকে হালকা জ্বর শুরু হলো আমার। জ্বরের সাধারণ ওষুধ নাপা বা প্যারাসিটামল খেলে কিছুক্ষণের জন্য জ্বর কমে যেত। তারপর আবার আসতো। জ্বরের প্রথম দুইদিন এভাবেই কাটলো। জ্বরের সঙ্গে ছিল প্রচন্ড দুর্বলতা। এমন অবস্থা যে, বিছানা থেকেই উঠতে পারতাম না। ২৬ এপ্রিল করোনা পরীক্ষার জন্য আমার নমুনা পাঠানো হয়। ২৮ এপ্রিল রিপোর্টে দেখা গেল করোনা পজিটিভ।

সেদিনই হাসপাতালে ভর্তি হলাম। একটু ভয়ও পেলাম। যদিও আমার আগে থেকে শারীরিক অন্য কোন সমস্যা ছিল না, তারপরও ভয় ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার একদিন পরেই জ্বর কমে যায়। বাসায় চলে আসি। হোম আইসোলেশনে ছিলাম ১৩ দিন। এরমধ্যে করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল থেকে দুইবার (মে মাসের ২ ও ৭ তারিখ) নমুনা নিয়ে যায়।

সারাবাংলা: করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর কোন বিষয়গুলো আপনার কাছে কঠিন মনে হয়েছে?

বিজ্ঞাপন

প্রদীপ্ত চৌধুরী: আমার মনে হয়, শারীরিক সমস্যার চেয়ে এ রোগে মানসিক শক্তি ধরে রাখাই বড় ব্যাপার। একরুমে সারাক্ষণ থাকার ফলে খুব খারাপ লাগতো। প্রথম দুইদিন কিছুটা শ্বাসকষ্টও অনুভব করি। তারপর ভাবলাম, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণেই হয়তো এমন হচ্ছে। তখন নিজে থেকেই কিছুটা স্থির থাকার চেষ্টা করলাম।

সারাবাংলা: হোম আইসোলেশনে সময় কাটতো কীভাবে?

প্রদীপ্ত চৌধুরী: ফুসফুসের ব্যায়াম করতাম। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ভালো থাকে। এছাড়া শারীরিক সুস্থতার জন্য হালকা কিছু ব্যায়ামও করতাম। মাঝে মাঝে গান শুনতাম। প্রার্থনা করতাম।

সারাবাংলা: কী ধরনের খাবার খেয়েছেন?

বিজ্ঞাপন

প্রদীপ্ত চৌধুরী: প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেয়েছি। এছাড়া ফলমূল, বিশেষ করে ভিটামিন সি খাওয়ার চেষ্টা করেছি। নরমাল পানির বদলে উষ্ণ গরম পানি খেতাম। লেবু চা, আদা চা কিংবা মশলা চা খেয়েছি। দুপুরে খানিকটা বিশ্রাম নিতাম। আর রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করেছি।

সারাবাংলা: কী ধরনের ওষুধ খেতে হয়েছে?

প্রদীপ্ত চৌধুরী: হাসপাতাল থেকে ফেরার পর তেমন ওষুধ খাইনি। ভিটামিন, জিংক ও সামান্য কিছু ওষুধ খেতে হয়েছে। যাদের আগে থেকে অন্য শারীরিক সমস্যা (যেমন: ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি) নেই তাদের বেশি ওষুধ খাওয়া লাগে না।

‘করোনায় আক্রান্ত হলে মানসিক শক্তি ধরে রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে’- পরামর্শ চিকিৎসক প্রদীপ্ত চৌধুরীর।

সারাবাংলা/টিসি

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন