বিজ্ঞাপন

স্কুলের সামনের ‘আচার মামা’র পাশে বিদ্যাময়ীর সাবেক শিক্ষার্থীরা

May 18, 2020 | 6:22 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ময়মনসিংহ: গল্পটা মুড়ি-চানাচুর-আচার বিক্রেতা সামসুদ্দিনের। ময়মনসিংহের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের কাছে ঝালমুড়ি, চানাচুর ও আচার বিক্রি করেই চলতো তার সংসার। বিদ্যালয় ও তার আশেপাশের সবাই তাকে চেনেন ‘গুল্লি আচার মামা’ হিসেবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় বিভিন্ন ধরনের আচার ও ঝালমুড়ি বিক্রি করেছেন এই স্কুলের সামনে। সত্তর বছর বয়সী সামসুদ্দিন বর্তমানে শহরের ভাটিকাশর এলাকায় নিজ বাসায় প্যারালাইসিস হয়ে চিকিৎসাহীন অবস্থায় আছেন। বাধর্ক্যের কারণে কাজে সম্পৃক্ত না থাকলেও তার দুই ছেলে কাশেম ঝালমুড়ি ও চটপটি এবং হাসেম আচার বিক্রি করে ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। স্ত্রী, ছেলে-ছেলের বউ ও নাতি-নাতনি নিয়ে ভালোভাবেই কেটে যাচ্ছিলো সামসুদ্দিনের দিন। কিন্তু করোনা মহামারিতে সকল স্কুল ও কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে সংসারে নেমে আসে অভাব-অনটন।

এমন সময়ে তারা পায়নি কোনো সহযোগিতা, কিন্তু এই আচার বিক্রেতাকে ভোলেনি বিদ্যাময়ী স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা। নিজেদের সঞ্চিত টাকা তারা স্কুলের সামনের আচার বিক্রেতা সামসুদ্দিনের হাতে তুলে দিয়েছেন।

শুরুটা স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ফারজানা রুম্পার। তিনি নিজের ফেসবুক সামসুদ্দিন ওরফে গুল্লি আচার মামার বর্তমান অবস্থার কথা বলে সহযোগিতা চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। এর পরপরই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা বিদ্যাময়ীর কিছু সাবেক ছাত্রীরা। শুরু হয় অর্থ সংগ্রহ।

বিজ্ঞাপন

অনেক কষ্টে সামুসদ্দিনের বাড়ি খুঁজে সবকল শিক্ষার্থীদের পক্ষে লামিয়া নোভা ও ফারজানা রুম্পা তার হাতে তুলে দেয় ভালোবাসার সঞ্চিত অর্থ। এ সময় সাবেক ছাত্রীরা তার চিকিৎসারও আশ্বাস দেন।

সাবে ছাত্রী মেহনাজ শারমীন তৃণা জানান, স্কুলের সঙ্গে যেমন আমাদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, তেমনি জড়িয়ে আছে প্রতিটি মানুষও। এই মামা আমাদের শৈশব-কৈশোরকে তাজা করে রেখেছেন বছরের পর বছর। স্মৃতির আয়নায় আজও স্কুলের গেটে আমরা গুল্লি আচার মামাকে খুঁজে ফিরি। আমরা আনন্দিত যে অন্তত এ মানুষটির মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। এই ভালোবাসা বিদ্যাময়ীর সব প্রাক্তনদের ভালোবাসা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন