বিজ্ঞাপন

ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরুদ্ধে ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

May 18, 2020 | 11:22 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ফরিদপুর: ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চরযশোরদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান পথিক তালুকদার ও একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হায়দার আলী সরদারের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও ভিজিএফের হতদরিদ্রদের নামে বরাদ্দ দেওয়া সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ উঠেছে, করোনায় লকডাউনে অর্ধাহার ও অনাহারে থাকা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিম্নবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষের জন্য বরাদ্দ করা ওএমএসের ১০ টাকা কেজি দরের চালের জন্য নির্ধারিত কার্ডের টিপসই জাল করে চাল তুলে নেন এই ইউপি সদস্যরা। মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে, আবার একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার ব্যবহার করে এবং ভুয়া নামের তালিকা তৈরি করে তিন দফা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল তুলে তা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, গত ২০ মার্চ চেয়ারম্যান পথিক তালুকদারে নির্দেশে মেম্বার হায়দার আলী চাল দেওয়ার নামে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ১০০টি পরিবারের কাছ থেকে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নেন। প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো পরিবারই এখনো সহায়তা পাননি।

স্থানীয়রা বলছেন, করোনাভাইরাসের আগেও তারা অনেকবার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল দেওয়ার কথা শুনেছেন। কিন্তু এলাকার দরিদ্র কোনো পরিবারই চাল পায়নি। কারও কারও নামে যে আগে থেকেই ওএমএসের কার্ড আছে, সেটাও তারা জানতেন না।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউনিয়নের আশফরদী, পৈলানপুটি, ধর্মদী ও বানেশ্বরদী গ্রামে করোনা সংকটে খাদ্য কর্মসূচির চাল পাওয়া পরিবারের সংখ্যা ২০ শতাংশের বেশি নয়। ত্রাণ না পাওয়াদের একজন ইয়াদ আলী খাঁ বলেন, ছয় মাস আগে ভিজিএফের চাল বিতরণের তালিকার জন্য তার নাম নেওয়া হয়। কিন্তু কোনো চাল তিনি পাননি।

একই কথা বলেন সেলিনা বেগম, রিনা বেগম, জবেদা বেগমও। তারা বলেন, তাদের তিন মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের প্রতি কার্ডেই তিন মাসের চাল তোলা হয়েছে দেখানো হলেও চাল দেওয়া হয়নি। হাতেগোনা দুয়েকজন ছাড়া কেউই এই চাল পাননি বলে অভিযোগ করেন তারা। তারা আরও বলেন, জানতে চাইলে ইউপি সদস্য তাদের বলেন, চেয়ারম্যান তাকে যতটুকু দিয়েছে, তিনি ততটুকুই বিতরণ করেছেন।

এসব বিষয়ে জানতে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হায়দার আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একপর্যায়ে তিনি ফোন ধরলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

বিজ্ঞাপন

ত্রাণের চাল নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেন চরযশোরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান পথিক তালুকদার। তিনি বলেন, তালিকায় যাদের নাম আছে, তারা সবাই পর্যায়ক্রমে সহায়তা পাবেন।

করোনা সংকটের মধ্যে তিন দফা চাল বিতরণ করা হলেও তালিকাভুক্তরা কেন পাননি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন দফা চাল দেওয়ার তথ্য সঠিক নয়। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়।

ত্রাণের চাল আত্মসাতের বিষয়ে অবশ্য কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে। ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ রাসেল বলেন, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। তদন্তে যা উঠে আসবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন