বিজ্ঞাপন

চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় আসছে হংকং

May 22, 2020 | 10:26 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চীনের পিপলস’ কংগ্রেসে (এনপিসি) শুক্রবার (২২ মে) স্বায়ত্তশাসিত বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংকে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। খবর বিবিসি।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতেই চীনের দুটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলকে (ম্যাকাও, হংকং) জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে আনা হচ্ছে।

এই জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে হংকংয়ের যে কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, রাষ্ট্রবিরোধী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠলে, তাকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

তবে প্রস্তাবনাটি আপাতত খসড়া আকারে চীনের মৌলিক আইনের বর্ধিতাংশ তিন নম্বর ধারায় সংযোজিত হলেও, যে কোনো সময় চীনের আইন পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে বা কেন্দ্রীয়ভাবে ডিক্রি জারি করার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা আইন হংকংয়ে বলবৎ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে এই জাতীয় নিরাপত্তা আইনকে হংকংয়ের বিশেষ মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসন জন্য হুমকি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শুধু তাই নয়, বিতর্কিত এই আইন পাস করার মাধ্যমে হংকংকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে চীন – এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

অন্যদিকে, চীনের আরোপিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ব্যাপারে হংকংয়ের বেইজিংপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেছেন, এর মাধ্যমে হংকংয়ে বে আইনি কর্মকাণ্ড শক্তহাতে দমন করা সম্ভব হবে।

এছাড়াও ২০২০ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগ পর্যন্তও হংকংয়ের রাজনৈতিক টানাপোড়েনে রাস্তা ছিল উত্তাল। সেখানকার তরুণ গণতন্ত্রপন্থিদের সঙ্গে সরকারের ‘সাপে-নেউলে’ সম্পর্ক বিরাজ করছিল। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে বন্দি প্রত্যর্পন বিলকে কেন্দ্র করে রাস্তায় নেমে আসে হংকংয়ের তরুণ শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা। ক্রমেই সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলনের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। আন্দোলনের মুখে বন্দি প্রত্যর্পন বিল বাতিল করা হয়।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু গণতন্ত্রপন্থি হংকংবাসী প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে অনড় থাকে। সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন দীর্ঘ এক বছর হংকং কার্যত অচল ছিল। সেই সময় ওই আন্দোলন দমাতে বেইজিংয়ের ব্যর্থতাও ছিল চোখে পড়ার মতো।

রাজনীতির পণ্ডিতগণ মনে করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের আন্দোলন দমন করতে জাতীয় নিরাপত্তা আইনকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করবে চীন।

প্রসঙ্গত, ১৫০ বছর ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে শাসিত হবার পর ১৯৯৭ সালে চীনের অধীনে একটি বিশেষায়িত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে হংকং। সেই সময়ে চীন ও ব্রিটেনের মধ্যকার দ্বি পাক্ষিক ঘোষণা অনুসারে, ৫০ বছর (২০৪৭ সাল পর্যন্ত) বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে চীনের অধীনে থাকার কথা হংকংয়ের। এই টাইমলাইনে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিভাগ ছাড়া অন্যসব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নিতে পারবে হংকং। কিন্তু, চীনের নতুন এই সিদ্ধান্তে হংকংয়ের আইন প্রণেতাদের পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য যে কোনো ধরনের  হস্তক্ষেপ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন –

বিজ্ঞাপন

হংকংয়ে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল নির্বাচনে চীনপন্থিদের ভরাডুবি

হংকংয়ে আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় সিলগালা করে দিয়েছে পুলিশ

সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ, হংকংয়ে অচলাবস্থা

হংকংয়ে আন্দোলনের মুখে বাতিল বন্দি প্রত্যর্পণ বিল

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন