বিজ্ঞাপন

করোনায় বাসা খালি, বিদ্যুৎ বিল ভুতুড়ে!

May 24, 2020 | 9:06 am

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুই মাসের বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে। কিন্তু বিলের পরিমাণ প্রায় চার বা পাঁচ মাসের। করোনা পরিস্থিতিতে এমন ভুতুড়ে বিল পেয়ে অনেকে বিস্মিত। এমনকি করোনার সময় রাজধানীর অনেক পরিবার মাসভর গ্রামের বাড়িতে। ঘরে কোনো বিদ্যুৎ খরচ হয়নি। সে মাসেও দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ের মতো বিল ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, করোনার কারণে মিটার রিডিং করতে বাসায় বাসায় যাওয়া সম্ভব হয়নি তাই গড় বিল ধরা হয়েছে।

তবে গড় বিলের নামে ভুতুড়ে বিল নিয়েই অভিযোগ বেশি পাওয়া যাচ্ছে পল্লী বিদুৎ সমিতির গ্রাহকদের কাছ থেকে। এমন কয়েকটি ভুতুড়ে বিলের কপিও পাওয়া গেছে। মিটারে যে রিডিং বহাল আছে তার সঙ্গে প্রস্তুতকৃত বিলের কপির সঙ্গে কোনো মিল নেই বলছেন গ্রাহকরা।

মুন্সীগঞ্জের জগধাত্রীপাড়ার কাজী শিল্পী জানান, মার্চের ২৫ তারিখ থেকে ঘর তালা দেওয়া।  বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়নি। অথচ বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৫২২ টাকা । মিটারের ইউনিট চেক না করেই বিল ধরিয়ে দিয়ে গেছে। বাসায় ভাড়াটেও নেই, তাই ভাড়ার টাকাও নেই। কীভাবে এই অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করব।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, দেশে এক কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার গ্রাহক পোস্ট পেইড মিটার ব্যবহার করছেন। গড় বিলে যদি বেশি বিল দেওয়া হয়েও থাকে তা হলে পরের মাসে গ্রাহকদের বিদ্যুতের বিল পর্যায়ক্রমে কম আসবে।

এমন পদ্ধতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে যশোরের একজন গ্রাহক জানান, গড় বিলের নামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন। প্রতিটি বিলে গেল বছরের চেয়ে দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি করে দেওয়া হচ্ছে। এখানে বেশি ইউনিট দেখানোর কারণে বিলের ধাপও পরিবর্তন হচ্ছে। টাকার অংকও বাড়ছে। ওরা সমন্বয়ের কথা বলছে কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব?

পল্লী বিদুতের জোনাল অফিস পর্যায়ের একজন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল এই তিন মাসের বিল জরিমানা ছাড়া আদায় করা হচ্ছে। তবে মে মাসের জরিমানা মওকুফের কোনো সিদ্ধান্ত আমরা এখনো পাইনি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘বিল পরিশোধের জন্য তাগিদ হচ্ছে এ কারণে যে, সামনে জুন মাস। আর্থিক বছরের হিসেবে জুন মাসে আমাদের কাছে ক্লোজিং সময়। এ জুন মাসের মধ্যে আমাদের বিগত এক বছরের সব হিসাব ক্লোজ করতে হয়। তাই প্রত্যেক গ্রাহককেই আমরা অনুরোধ করছি তারা যেন জুন মাসের মধ্যে সব বকেয়া বিল পরিশোধ করে আমাদের হিসাবের কাজকে সহজ করতে সহায়তা করেন।’

এদিকে এখনও ব্যাংকসহ রাজধানীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই। সেক্ষেত্রে বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে লাইন কাটার মাইকিং শুনেছেন রাজধানীর নয়াপল্টনের একজন গ্রাহক। বহু গ্রাহক এখন বকেয়া ভুতড়ে বিদ্যুৎ বিলের চাপিয়ে দেওয়া বোঝা আর পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকির মধ্যে আছেন।

গ্রাহকদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু জায়গা থেকে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি। গ্রাহকদের এই অভিযোগগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। সকল বিতরণ সংস্থাকে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহক অসন্তোষ দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখা অনেক সময়ই সম্ভব হচ্ছে না। তাই অনেক ক্ষেত্রেই গড় বিল করা হচ্ছে। গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বিতরণ সংস্থাগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএ/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন