বিজ্ঞাপন

‘নিজস্বতা মেরে ফেলতে পারেন না ভয়ে’

May 25, 2020 | 5:43 pm

আহমেদ জামান শিমুল

নুসরাত ফারিয়া—ছিলেন আরজে, টিভি উপস্থাপক। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘আশিকী’ দিয়ে চিত্রনায়িকা হিসেবে যাত্রা। করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন শুরুর আগ পর্যন্ত শুটিং করেছেন ‘অপারেশন সুন্দরবন’র। গেল দুমাসে আরও দুটি ছবির শুটিং করার কথা ছিলো। কিন্তু সব হিসেব উল্টে গেলো।

বিজ্ঞাপন

ঈদ উপলক্ষে নুসরাত ফারিয়া কথা বলেছেন তার ক্যারিয়ারের হালচাল, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে। মুঠোফোনে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সারাবাংলার সিনিয়র নিউরুম এডিটর আহমেদ জামান শিমুল

 

কেমন আছেন?

বিজ্ঞাপন

আলহামদুলিল্লাহ্‌, ভালো আছি।

ঈদে কী করছেন?

প্রচুর রান্না করেছি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার পুরো পরিবার একসাথে ঈদ করছি।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার বাইরে শুনলাম।

হ্যাঁ, ময়মনসিংহে। এখানে আমাদের একটা ফার্মহাউজ আছে। লকডাউনের শুরুতে ঢাকাতে ছিলাম। পরে গত ১ এপ্রিল এসেছি। পরিবারের সবাই মিলে আছি। জায়গাটা বেশ বড়। এখানেই বিভিন্ন সবজি চাষ করা আছে। বের হওয়ার দরকার হচ্ছে না। যার ফলে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা।

এ সময়ে অনেকে অনেক কিছু শিখছেন। আপনি কী শিখলেন?

বিজ্ঞাপন

ঢাকা থেকে দূরে আছি। এখানে আলাদা একটা রুটিন আছে। সব শেষ করে সাধারণত সময় পাই না নতুন করে কিছু শেখার। ল নিয়ে পড়ছি। ক্লাশ চলছে অনলাইনে। জুলাইয়ে আমার পরীক্ষা আছে। পড়াশোনা বাইরে অন্য কিছু শেখার সময় হচ্ছে না।

সারাদিনের রুটিনটা।

রমজানে ঘুম থেকে উঠতে ১১-১২টা বেজে যেতো। পরিবারের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা, আড্ডা হতো। দিনের বেলা এক ঘণ্টার মতো পড়তে বসতাম। বিকেলে নামাজ পড়ে ইফতারির পরিকল্পনা করতাম। তারাবির নামাজের ব্রেকের পর কিছুক্ষণ পড়াশোনা করতাম। রাতে পরিবারের সবাই মিলে লুডু খেলি বা যে কোন একটা গেইম খেলি। মাঝে মধ্যে হয়তোবা একটু ছাদে গেলাম। তারপর সেহরি করে ঘুমাতে যেতাম। মাঝখানে ইফতারের পরে আমি ওয়ার্ক আউটও করেছি। যেটা সাধারণ সময়ে দিনের বেলা করি।

অনেকে নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন। আপনি খুলবেন?

আমার কাছে মনে হয় যে ইউটিউব চ্যানেল খুললে তা সামলানো আমার পক্ষে বেশ কঠিনই হবে। এখনও চিন্তা করিনি। হয়তো ভবিষ্যতে খুলতেও পারি। আমি যেভাবে আছি, মনে করি ভালই আছি। তার চেয়ে বেশি যেটা বেশি মিস করি, তা হচ্ছে শুটিং। কাজ করতে কে না চায়? তাছাড়া শেষ ৬ বছরে টানা ২ মাস ঢাকার বাইরে থেকেছি কিনা সন্দেহ আছে। এটা আমার জন্য কঠিন একটা ব্যাপার।

‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবিতে একজন বাঘ গবেষকের ভূমিকায় অভিনয় করছেন। সুন্দরবনে গিয়ে শুটিং করেছেন। সবমিলিয়ে নিশ্চয় অভিজ্ঞতা সুন্দর ছিলো?

‘অপারেশন সুন্দরবন’ নিয়ে যদি বলি তাহলে বলবো এটা অনেক বড় একটা ছবি। কলকাতা ও বাংলাদেশ মিলিয়ে আমি যতগুলো ছবি করেছি, এ ছবির কাস্টিং ও অ্যারেঞ্জমেন্ট মিলিয়ে বলবো অনেক বেশি গোছানো। তবে বেশ মানসিক চাপের মধ্যে কাজ করতে হতো। এমনও হয়েছে একদিনে চার ক্যামেরায় কাজ করেছি। প্রতিকূল আবহাওয়া, জোয়ার, ভাটা সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের কাজ করতে হতো। সেগুলো মাথায় রেখে, নিজের চরিত্র, লুক নিয়ে চিন্তা! আরেকটা ব্যাপার সুন্দরবনের মত জায়গায় ১৭ দিন আইসোলেটেড থাকা, সেটাও খুব একটা সহজ ব্যাপার ছিলো না। দিনশেষে কাজটা ভালো হয়েছে, সে জন্য বলবো অভিজ্ঞতা খুবই ভালো।

আপনাদেরকে জাহাজে করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হতো। ছবিটির পরিচালক দীপংকর দীপন সারাবাংলায় বলেছিলেন, আপনারা নাকি নদীতে আটকাও পড়েছিলেন।

আমার মনে আছে আমাদের দুটা বড় জাহাজ ছিলো। সঙ্গে ১৭-১৮টা ছোট ছোট ট্রলার, সি-বোট ছিলো। আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে অপেক্ষা করতে হতো। ওখানে শট হচ্ছে হেঁটে চলে গেলাম, আবার এখানে শট হচ্ছে হেঁটে চলে আসলাম—এমন ছিলো না ব্যাপার গুলো। তোমার রেডি হয়ে টিমের সাথে অপেক্ষা করতে হবে। তারপর তুমি যেতে পারবা।

আমি ও সিয়াম একটা চরে শুটিং করছিলাম। নদীতে আমাদের জাহাজ থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে শুটিং। আমাদেরকে নামিয়ে দিয়ে গেছে ট্রলার। সুন্দর করে শুট করে ফেললাম। দুই ঘণ্টা লেগেছে সেখানে। কিন্তু ভাটার কারণে নদীতে পানি এতই কম ছিলো যে আমাদেরকে জাহাজে নেওয়ার জন্য ট্রলারগুলো আসতে পারছিলো না। পরে আমাকে স্থানীয় ছেলে-পেলেরা যারা ওখানে টুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ করে তাদের চারজন মিলে কাঁধে করে পার করে দিয়েছিলো। কন্টিনিউটি থাকায় কোনভাবেই জামা ভেজাতে চাইছিলাম না। অন্যদিকে সিয়ামের লুকটাই এমন ছিলো যে ভিজলেও সমস্যা ছিলো না। এ যে স্মৃতিগুলো মনে হয় না কোন দিন ভুলবো।

ছবিতে আপনার চরিত্রটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।

আমার চরিত্রের নাম তানিয়া কবির। সে বিদেশেই বড় হয়েছে। দেশে এসেছে একটা গবেষণার কাজে। নানাভাবে সে দেশের সাথে কানেকটেড। সুন্দরবন নিয়ে অনেক পড়াশোনা করে। কদিন আগে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’র সময় সবাই বলেছেন সুন্দরবন আমাদেরকে রক্ষা করেছে। কিন্তু সুন্দরবনে থাকা আমাদের নানান প্রাকৃতিক সম্পদ, বাঘ ইত্যাদি নানাভাবে পাচার হয়ে গেছে। এগুলোর পিছনে কারা আছে? সে এগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

বাঘের দেখা পেয়েছিলেন কি?

না, এটা আসলে কখনই পাওয়া যায় না। তবে আমরা গন্ধ পেয়েছিলাম। একদিনের কথা— মাগরিবের পরে, সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমাদের শুটটা শেষ করতেও হবে। ওই সময় একটা গন্ধ পাই। সবাই বললো ওটা নাকি বাঘের গন্ধ। আমরা সঙ্গে করে ছোট ছোট বোম নিয়ে যেতাম। বোম গুলো ফেলে দেওয়ার পর গন্ধটা আস্তে আস্তে হারিয়ে গিয়েছিলো।

দীপংকর দীপন বলেছিলেন ওইদিন ওখানে যাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে বাঘ ছিলো সেখানে। পায়ের ছাপও পেয়েছিলেন আপনারা?

আমি নিশ্চিত নই। হয়তো দীপন দা’রা দেখেছেন বা শুনেছেন। এরকম আসলে অনেকবারই হয়েছে। কেউ বাঘের গন্ধ পেয়েছে, কেউ পায়ের ছাপ। ওখানে নেটওয়ার্কবিহীন কাজ করতে হয়েছে। যার কারণে ঘুম থেকে উঠে ফেসবুক, ইন্টারনেট না থাকায় আমাদের আলোচনার বিষয়ই ছিলো এগুলো।

লবনাক্ত পানিতে কাজ করতে সমস্যা হয়নি?

সেখানকার পানি বেশ লবনাক্ত। মাঝে মধ্যে ঘুমের মধ্যে মনে হতো, ‘কী ব্যাপার, এভাবে দুলছি কেনো?’ আমরা তো জাহাজে থেকেছি। আসলে কোনকিছুই অনুভব করিনি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমাকে ফোর স্টার হোটেলে রাখা হয়েছে সমুদ্রের মধ্যে। এর জন্য ধন্যবাদ জানাই র‍্যাব ও আমাদের টিমকে।

জাহাজটা যখন নদীর মাঝে ছিলো, তখন কি কখনো পূর্ণিমা দেখা হয়েছে?

অবশ্যই দেখেছি। শুটটা শেষে কী করবো? সবাই মিলে ছাদে গিয়ে আড্ডা দিয়েছি, খাওয়া দাওয়া করেছি, চাঁদ দেখেছি। সেখানে আমাদের টিমটা একটা পরিবার হয়ে গিয়েছিলো। রাতের বেলা সাধারণত শুট থাকতো না। তখন টিম মিটিং হতো। আমার শুট না থাকলে এডি (সহকারী পরিচালক) হিসেবে কাজ করেছি। ২-৩ দিন করেছি।

‘অপারেশন সুন্দরবন’র শুটিংয়ের উদ্দেশ্যে সুন্দরবন যাত্রার আগে তাসকিন, রোশান, ফারিয়া ও সিয়াম

সিয়ামের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিলো?

সিয়ামের সাথে আমার পরিচয় অনেক আগের। তার ক্যারিয়ার সাম হাউ আমার সাথেই শুরু হয়েছিলো। আমরা দুজনে আরটিভিতে ‘লেইট নাইট কফি’ নামে একটা অনুষ্ঠান করতাম। তখন আমাদের মধ্যে একটা ভালো বন্ডিং, ক্যামিস্ট্রি হয়। আমাদের দুজনের সিনেমা ক্যারিয়ারটা শুরু জাজ থেকে। আমাদের মধ্যে কমফোর্ট জোনটা ছিলো, কোন ধরণের জড়তা ছিলো না। আমরা দুজনেই অভিনয়টা খুব সাধারণভাবে ও সহজভাবে করতে চেষ্টা করি। তাছাড়া আরেকটা মিল রয়েছে। দুজনেই সেটে ঢোকার আগে চরিত্রটা নিয়ে পড়াশোনা করে যাই। এগুলো বেশ হেল্পফুল। শুধুমাত্র সিয়াম নয়, তাসকিন, রোশান, রিয়াজ ভাই সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। এমনকি আমাদের এ ছবিতে ১০-১২ জন ভিলেন। তাদের সাথেও বেশ ভালো সময় গিয়েছে।

একই পরিচালকের সাথে ‘ঢাকা ২০৪০’ নামে আরেকটা ছবি করার কথা।

র‍্যাব থেকে একটা প্রেশার ছিলো ‘অপারেশন সুন্দরবন’ কোরবানি ঈদের আগে শেষ করতে হবে। সে জন্য ‘ঢাকা ২০৪০’ থেকে একটা প্রিলিমিনারি ব্রেক নিয়ে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ শেষ করলাম। ছবিতে আমার শুধু গান আর ডাবিং বাকি। এরপর আমার পরিকল্পনা ছিলো জি ফাইভের অপূর্ব ভাইয়ের সাথের ছবিটা করার, ওটা শেষ হলে ‘ঢাকা ২০৪০’ শেষ করবো এপ্রিল মাস নাগাদ।

 

‘ঢাকা ২০৪০’ মহরত অনুষ্ঠান

জি ফাইভের ‘যদি কিন্তু তবুও’ নিয়ে তো বেশ আশাবাদী ছিলেন।

আমি বলবো শিহাব শাহীনের সিগনেচার ফিল্ম। যে ধরনের ফিল্ম তিনি বানাতে পছন্দ করেন—খুব সুন্দর সহজ-সরল, হৃদয়গ্রাহী ভালোবাসার গল্প। মানসিকভাবে এত রেডি ছিলাম…। এত দিন রিহার্সেল করলাম। মাঝে সুন্দরবন থেকে ২-১ দিনের জন্য ঢাকা এসে অপূর্ব ভাই, তারিক আনামসহ রিহার্সেলও করেছি।

সবকিছু প্রস্তুত ছিলো। ভারত থেকে আমার হেয়ার-মেকআপ আর্টিস্ট চলে এসেছে। পরদিন থেকে শুটিং। তখনই শুনি, শুটিং হবে না। আমার হৃদয় ভেঙ্গে যায়। অনেকদিন যাবত ছবিটা নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলাম—এরকম হবে, এভাবে এটা করবো। আমি দুবার লুক সেট করেছি।

‘পটাকা ২’ করার কথা ছিলো।

‘পটাকা ২’ না আসলে। আমি বলিনি এটা পটাকার সিক্যুয়েল। ভিন্ন আরেকটা গান। গানের সবকিছু থেকে শুরু করে এর ফাইনাল ভিডিও আমার হাতে রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে কোন কিছুই ছাড়তে চাইছি না।

‘পটাকা’ মুক্তির অনুষ্ঠানে নুসরাত ফারিয়া

গানটার শিরোনাম?

এটা এখন গোপন থাক। আমি আসলে একটা কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ।

বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের প্রাথমিক তালিকায় আপনার নাম এসেছে। মার্চে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা ছিলো। কোন আপডেট আছে কি?

ওরকমই হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সবকিছু তো লকডাউনের কারণে আটকে আছে। আসলে লকডাউন শেষ হয়ে গেলে আপনাদের আমি নতুন নতুন খবর দিতে পারবো।

একটু আগে রিহার্সেলের ব্যাপারে বলেছেন। বাইরের দেশগুলোতে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার হলেও আমাদের এখনে হয় না বললেই চলে। এটা অভিনয়ে কতটা সাহায্য করে?

এ চর্চাটা আমার প্রথম ছবি থেকেই হয়েছে শেষ ছবি পর্যন্ত। তুমি যা করো না কেনো প্র্যাকটিসটা জরুরি। গান গাইলে নিয়মিত রেওয়াজ, অভিনয়ে রিহার্সেল করা উচিত। হ্যাঁ, যারা জন্মগতভাবে ন্যাচরাল অভিনয় করে তাদের কথা ভিন্ন। কিন্তু আমার যে কোন কিছু হোক না কেনো, ‘আই হ্যাভ টু প্র্যাকটিস’। তাই যে কোন ছবির শুটিং শুরুর আগে চরিত্রটা নিয়ে পড়াশোনা করা উচিত। তাতে সেটে গেলে পরিচালকের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। সহশিল্পী, টেকনিশিয়ানদের অনেক হেল্প হয়। সবমিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটা তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।

‘অপারেশন সুন্দরবন’র রিহার্সেলে ফারিয়া ও সিয়াম

শিল্পীদের অনেক ধরণের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয়, আপনি নিজেও হয়েছেন অনেকবার। এধরণের পরিস্থিতি কীভাবে সামলিয়েছেন?

প্রথমত এটা অনেক বড় একটা অপরাধ। যারা করে কেনো করে, কী বুঝে করে আমি বুঝি না। শুধু আমাদের দেশে না, সারা বিশ্বের পাবলিক ফিগাররা এটার সম্মুখীন হয়। আমার প্রশ্ন, তোমার কেনো এটা করতে হবে?

ঠিক আছে তুমি ক্রিটিসাইজ করো, একটা লেভেল পর্যন্ত করো। এরপর যেটা চলে আসে সেটা পার্সোনাল অ্যাটাক, রিলিজিয়াস অ্যাটাক, একটা মেয়ে হিসেবে সে কতটা ভালনেরেবল। আমি সেলেব্রিটি হয়েছি ওই সময়ে যখন ফেসবুকের যুগ। ফেসবুকে বাক-স্বাধীনতা অনেক বেশি। কিন্তু সে স্বাধীনতার অপব্যবহার করার অধিকার তো নেই। পুরো জিনিসটাকে টানতে টানতে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যায়, হয়তবা ওই ব্যক্তি কোন অপরাধও করেনি সে অর্থে; কিন্তু একটা সময় পরে তার মনে হয় অনেক বড় অপরাধ করে ফেলেছে।

এ যে তাকে অনুতপ্ত করানো—তা কিন্তু ভালো-মন্দ বিবেচনা করে করানো হয়নি। এটা একটা ট্রেন্ড। তাই আমার অনুরোধ থাকবে সকল সেলেব্রিটির কাছে, প্রথমত এসকল মানুষদের প্রতি কোন খেয়াল দেওয়ায় উচিত নয়। দ্বিতীয়ত, আপনার যেটা করা দরকার সেটা যদি মনে হয় আপনার করার অধিকার আছে, তাহলে করুন। যদি একটা ছবি আপ দিলে মনে হয় মানুষ সমালোচনা করবে তারপরও দিন। কারণ এটা আমাদেরই জায়গা এবং এটা আপনার স্বাধীনতা। আপনি মানুষের জন্যই তারকা অবশ্যই, কিন্তু তার জন্য মানুষ হিসেবে নিজস্বতা মেরে ফেলতে পারেন না ভয়ে।

তাই তারকাদের উচিত কমেন্টস না পড়া। আপনি যদি কোন কিছু ভুল করে থাকেন তাহলে তারা আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে জানাবে।

 

প্রশ্নটা ছিলো আপনি কীভাবে সামলান?

এতক্ষণ যা সাজেশন হিসেবে বললাম, তা-ই আমি ফলো করি। আমি কমেন্টস পড়িই না। সোশ্যাল বুলিংয়ে আমি কখনই অ্যাটেনশন দিই না। আমাকে মেরেও কেউ কোন কমেন্ট নিতে পারবে না।

হ্যাঁ, যখন ছোট ছিলাম তখন খারাপ লাগতো। কিন্তু একটা সময়ে আমি দেখলাম আমাকে নিয়ে ট্রল করছে, প্রিয়াংকা চোপড়াকে নিয়েও ট্রল করছে। প্রিয়াংকা চোপড়াকে নিয়ে ট্রল হচ্ছে, প্রেসিডেন্টকে নিয়েও ট্রল হচ্ছে। দিজ ট্রলিং অলওভার। আই অ্যাম নট অনলি ওয়ান।

লকডাউন পরবর্তী সময়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির পরিনিতি কী হবে? যদি ‘রুটি রুজি’ শব্দটা ব্যবহার করেই জিজ্ঞাস করি, আপনাদের কি হবে?

সত্যি কথা বলতে এ রমযানের আগে আমাদের দেশে বেশ ভালো ভালো সিনেমা হচ্ছিলো। সবকিছু মিলিয়ে একটা ভালো জায়গায় যাচ্ছিলাম। কিন্তু এ লকডাউন আমাদেরকে আরেকটা বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এটা অতিক্রম করতে কতখানি সময় লাগবে তা নির্ভর করবে আমাদের প্রচেষ্টার উপর। যেকোন একটা দুর্যোগের পরেই একটা আফটার অ্যাফেক্ট থাকে। আমরা যারা বড় জায়গায় আছি, তারা হয়তো উত্তরে যাবো। কিন্তু যারা টেকনিশিয়ান আছে তাদের অনেকে হয়তো অন্য পেশায় চলে যাবে। যারা থাকবে তারা তখন পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিবে। তখন হয়তো কাজের পরিমাণ কমে যাবে। এর সবকিছুই কিন্তু আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।

বিনিয়োগকারীদের অনেকেরই মনে হবে এটা সঠিক সময় না বিনিয়োগের জন্য। একটা বড় ধাক্কা আমরা খাবোই। কিন্তু আমরা যদি আমাদের পেশাকে ভালোবাসি, তাহলে এর মধ্য দিয়েই কাজ করতে হবে। সময় সবকিছু ঠিক করে দিবে। কিন্তু ওই ধৈর্যটা ধরে আমরা থাকতে পারবো কিনা, ওটাই প্রশ্ন।

দেশের অধিকাংশ সিনেমা হলই বন্ধ হয়ে গেছে বহু আগে। লকডাউনে অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটগুলো অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেক্ষেত্রে করোনা পরবর্তী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি পুরোপুরি অনলাইন নির্ভরশীল হয়ে যাবে কিনা?

ডিজিটাল মিডিয়া নতুন প্ল্যাটফর্ম। সবকিছুই একটা সুযোগ, অবশ্যই। মানুষ মানুষের কাছে আসার কারণে রোগটা ছড়াচ্ছে। সিনেমা হলে সামাজিক দুরত্বটা মানা কঠিন। মানুষের চেয়ে তো বিনোদন গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না।

অডি ব্র্যান্ডের গাড়ি কেনার পর বিয়ে করবেন, বলেছিলেন। কিন্তু করেননি। পরিকল্পনা কবে নাগাদ?

আছে, হয়তোবা হবে যখন হওয়ার। বিয়ে তো নিজেরা চাইলে হয় না। এটা আল্লাহ চাইতে হয়।

নিজের কেনা অডি গাড়ির সাথে নুসরাত ফারিয়া

নিজের নাকি পরিবারের পছন্দে করবেন?

এখনও চিন্তা করিনি। আমার কাছে মনে হয় যে প্রত্যেকটা জিনিসেরই একটা যথাযথ সময় আছে। কিন্তু এ লকডাউনটা আমাকে যেটা বেশি শিখিয়েছে, পারিবারিক সান্নিধ্যটা অনেক জরুরি।

জিমে নুসরাত ফারিয়া

লকডাউন শেষে কী করবেন?

সবার আগে জিমে যাবো, ওয়ার্ক আউট করবো। একটু ওজন বেড়ে গেছে, সেটা ঝরাবো। এবং দ্রুতই সকল আটকে থাকা কাজ শেষ করবো।

সারাবাংলা/এজেডএস/

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন