বিজ্ঞাপন

আড়াই মাস পর একনেক, করোনার ২ প্রকল্পসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন

June 2, 2020 | 4:08 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ আড়াই মাসেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক। তবে অন্যান্য সময়ের মতো নয়, একনেকের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ভার্চুয়াল উপায়ে। আর এই বৈঠকে সাধারণ ছুটির মধ্যে বিশেষভাবে অনুমোদন পাওয়া চার প্রকল্পসহ মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অনুমোদিত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৬ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪ হাজার ৪০১ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১ হাজার ৮৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। তবে এ হিসাব সংশোধিত প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেবল যে পরিমাণ ব্যয় বেড়েছে, সেটিই ধরা হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়নি।

আরও পড়ুন- করোনা সংকটেও মে মাসে মূল্যস্ফীতি কমেছে

মঙ্গলবার (২ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় একনেক বৈঠক। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এসময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। একনেকের বাকি সদস্যরা যুক্ত ছিলেন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে। ভার্চুয়াল উপায়ে একনেক বৈঠক এই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো।

বিজ্ঞাপন

একনেক বৈঠক শেষে ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এসময় পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব নূরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ, জাকির হোসেন আকন্দ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত না হলেও গুরুত্ব বিবেচনায় বিশেষভাবে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে দুইটি প্রকল্প ছিল করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত। বাকি দুইটি প্রকল্প ছিল প্রাথমিক উপবৃত্তি ও মসজিদভিত্তিক শিশু শিক্ষা সংক্রান্ত। চারটি প্রকল্পই একনেকে উপস্থাপন করা হয়। সেগুলোতে কোনো ধরনের পরিবর্তন আসেনি।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। কেননা তিনি করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের অনেক সরকার প্রধানের চেয়ে ভালো করেছেন। তাছঅড়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলাতেও তিনি সফল হয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব ফোন করে এবং বিবৃতি দিয়ে পর্যন্ত সেটি বলেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে আমরা যথেষ্ট ব্যয় করছি। কিন্তু অনেকেই বলেন, এই ব্যয় অন্য দেশের তুলনায় কম। মনে রাখতে হবে, উন্নত দেশগুলোর জিডিপি’র আকার বড় হলেও জনসংখ্যা কম। বিপরীতে আমাদের জিডিপি’র আকার অত বড় না হলেও জনসংখ্যা অনেক বেশি। তারপরও আমরা সবাই স্বীকার করি, স্বাস্থ্য খাতে অনেক ঘাটতি আছে। সেই ঘাটতি মেটাতে স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে। আমি মনে করি, এই সরকারের শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ হচ্ছে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ।

বিশেষভাবে অনুমোদিত প্রকল্প

সাধারণ ছুটির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিবেচনায় যে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই অনুমোদন পেয়েছে একনেক বৈঠকেও। এর মধ্যে করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রকল্প দুইটি হলো— কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্প, যার ব্যয় ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্রকল্প, যার ব্যয় ১ হাজার ৩৬৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

এছাড়া ৬ হাজার ৮৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়, দ্বিতীয় সংশোধিত) এবং ৩ হাজার ১২৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (সপ্তম পর্যায়) প্রকল্প দুইটিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অনুমোদিত আরও প্রকল্প

একনেক বৈঠকে বাকি যে ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো— শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্যবিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ) সংশোধিত প্রকল্প, ব্যয় ১ হাজার ৫৮৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা; শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) সংশোধিত প্রকল্প, ব্যয় ১ হাজার ২৩৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা; কৃষি যন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও লাভজনক করা, ব্যয় ৫৬ কোটি টাকা; মানসম্মত মসলা বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিতরণ, ব্যয় ৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা; সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার ১, ২, ৬-৮ এবং ৬-৮-এর (এক্সটেনশন) নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যয় ৪৭৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা; এবং দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত), ব্যয় ৩৯৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন