বিজ্ঞাপন

মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে সরকার ট্রায়াল কেস করছে: রিজভী

June 2, 2020 | 5:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে সরকার ট্রায়াল কেস করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন ও মৃত্যু নিয়ে সরকার ট্রায়াল কেস করছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণে কত মৃত্যু ও আক্রান্ত হবে, সেটি সরেজমিনে দেখার জন্য গণপরিবহনসহ অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হয়েছে। কোনো সরকার ম্যান্ডেটবিহীন হলেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।’

মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ভিডিও কনফরেন্সে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর কথা থাকলেও সেটি কোনোভাবেই বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালাতে হবে— এই শর্ত দিয়ে বাস, লঞ্চ, টেম্পু, অটোরিকসাসহ সব ধরনের গণপরিবহন চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবাই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করছে। দূরপাল্লার বাসগুলোতে ঠেলাঠেলি করে মানুষ ভেতরে ঢুকছে। ঢাকা থেকে অর্ধেক যাত্রী তোলা হলেও ঢাকার বাইরে গিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে। কোনো কোনো বাসে ছাদের ওপরেও যাত্রী তোলা হয়েছে। বাসে ৬০ শতাংশ ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও ৮০ শতাংশের বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘লঞ্চে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকা দূরে থাক, সেখানে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আসলে সিন্ডিকেটের কাছে সরকার আত্মসমর্পণ করেছে। এগুলো সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতারই নিদর্শন। সরকার কেবল বিরোধী দল ও মতকে নিষ্পেষণ ও নির্যাতনে সক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু দুর্যোগ, মহামারি, দুর্ভিক্ষ এবং জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।’

করোনাভাইরাস ভয়ংকর রাক্ষুসী চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিম্ন। যেখানে ইরান, ইতালি ও স্পেনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। এর মধ্যে জার্মানিতে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৯০ শতাংশ এবং ভারত ও পাকিস্তানেও বাংলাদেশের দ্বিগুণ। অথচ বাংলাদেশে সুস্থ হয়ে ওঠার হার সর্বনিম্ন হওয়ার পরও তা বিবেচনায় না নিয়ে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে কার স্বার্থে? সারাদেশকে কি সরকার গোরস্থান বানাতে চায়?’

রিজভী বলেন, ‘সরকার যা কিছু করছে, তা নিজেদের সিন্ডিকেটের স্বার্থকে রক্ষা করতেই করছে। সরকার জনস্বার্থে সফল নয়, কিন্তু দুষ্কর্মের সাথী হতে খুবই দক্ষ। কে কোথায় ফেসবুকে কী পোস্ট করছে, সেটি হরদম মনিটরিং করছেন সরকারের গোয়েন্দারা। পোস্টগুলোতে সরকারবিরোধী কোনো বক্তব্য বা মন্তব্য থাকলেই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের গুম, নির্যাতন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, গ্রেফতারসহ নানা নির্যাতনের দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। অথচ এক্সিম ব্যাংকের এমডি-ডিএমডি’কে গুলি করার হুমকি এবং নির্যাতনের জন্য মামলায় অভিযুক্ত শিকদার গ্রুপের ভ্রাতৃদ্বয় নাটকীয়ভাবে দেশ ছেড়ে চলে যেতে সক্ষম হলেন।’

বিজ্ঞাপন

‘কোভিড-১৯ মহামারির জন্য কিছু চার্টার্ড বিমান ছাড়া সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যখন বন্ধ, তখন কিভাবে রণ হক শিকদার এবং দিপু হক শিকদার বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেন— তা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর। এর পেছনে যে ক্ষমতার আশীর্বাদ আছে, সেটি এখন সুস্পষ্ট,’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী কায়দায় ব্যাংক লুটকারীদের পালাতে সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল সংকটাপন্ন দু’জন পেশেন্টকে বহনকারী একটি এয়ার এ্যাম্বুলেন্সকে ল্যান্ডিং পারমিশন দেওয়ার জন্য। এভাবে শিকদার ভ্রাতৃদ্বয় মেডিকেল ভিসা ম্যানেজ করে দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে গমন করে। এটি সম্পূর্ণরূপে স্টেট টেররিজম। দু’জন দুরন্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশ ছাড়ার সুযোগ করে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।’

‘এরা মূলত ব্যাংকের টাকা লুটে খাওয়ার জন্য এক্সিম ব্যাংকের এমডি-ডিমডি’কে তুলে নিয়ে হুমকি ও নির্যাতন করেছে। বর্তমান সরকার অতীতেও ব্যাংক লুটকারীদের নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে নিরাপদ করেছিল। এবারের ঘটনা আরেকটি উদাহরণ সৃষ্টি করল,’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন