বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ রেকর্ড ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

June 4, 2020 | 11:45 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি বছরের মে মাসে প্রবাসীরা ১৫০ কোটি ৩০ লাখ (১.৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা গত এপ্রিল মাসের চেয়ে ৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বেশি। এতে করে গতকাল ৩ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৪.২৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৩৩.৬৮ বিলিয়ন (৩ হাজার ৩৬৮ কোটি ডলার) ডলার উন্নীত হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৩১ থেকে ৩২ বিলিয়ন ডলারে ওঠানামা করে।

তবে বেসরকারি পর্যায়ে বৈদেশিক মুদ্রার ঋণের দায় ও এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় পরিশোধ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আবারও কমে যাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ইরান ও মিয়ানমার- এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। আকুর সদস্য এইসব দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। আগামী কিছুদিনের মধ্যে এটা পরিশোধ করলে রিজার্ভ কিছুটা কমে যাবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশি টাকায় (১ ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে) ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের একই সময়ে দেশে রেমিটেন্স এসেছিল ১ হাজার ৫০৫ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৮.৭২ শতাংশ।

সূত্র জানায়, আমদানি ব্যয় কমে যাওয়া এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকেই রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই-১৯ এ দেশে রেমিটেন্স আসে ১৫৯.৭৬ কোটি মার্কিন ডলার। এরপর আগস্টে ১৪৪.৪৭ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৪৭.৬৯ কোটি ডলার, অক্টোবরে ১৬৩.৯৬ ডলার, নভেম্বরে ১৫৫.৫২ ডলার ও ডিসেম্বর মাসে ১৬৮.৭০ ডলার।

অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে রেমিটেন্স আসে ১৬৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৫.২০ কোটি ডলার। তবে করোনা সংট শুরু হলে মার্চ থেকে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ কমতে শুরু করে। গত মার্চ মাসে দেশে রেমিটেন্স আসে ১২৮.৬০ কোটি ডলার, এপ্রিলে ১০৮.১০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে সদ্য বিদায়ী মে মাসে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। মে মাসে দেশে ১৫০ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে।

বিজ্ঞাপন

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মে মাসে ঈদ হওয়ায় প্রবাসীরা আগের চেয়ে দেশে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন। এই কারণে মে মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় রিজার্ভ বাড়ছে। কারণ অর্থ খরচ না হলে রিজার্ভ বাড়বে এটা স্বাভাবিক।’

বছরভিত্তিক রেমিটেন্স
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। ২০১৮ সালে রেমিটেন্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার, ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো- যথাক্রমে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন