বিজ্ঞাপন

মেসভাড়া মওকুফের দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি

June 6, 2020 | 7:07 pm

চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: অনাবাসিক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া মওকুফের দাবিতে অনলাইনে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ভাড়া মওকুফের দাবিও তুলেছেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৫ জুন) রাত ১১টার দিকে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এই পর্যন্ত কর্মসূচির প্রথমদিনে ১৫০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।

শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবির মধ্যে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন মেসভাড়া-কটেজভাড়া পরিশোধের দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে। চট্টগ্রাম শহর এবং ক্যাম্পাসের আশপাশে থাকা মেস-কটেজে অবস্থানরত অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে।

এই সময়ে যেন ছাত্রদের ভাড়া পরিশোধের তাগিদ দেওয়া না হয়, এ ব্যাপারে ক্যাম্পাসের আশপাশের মেস-কটেজ মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমরা কয়েকদিন আগে বাসাভাড়া মওকুফ দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটা বিবৃতি দিয়েছি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি। সেটা যে শিক্ষার্থীদের গণদাবি প্রশাসন তা বুঝতে পারেনি। সেজন্য আমরা অনলাইনে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করছি। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শেষ হলে উপাচার্যের কাছে স্বাক্ষর সম্বলিত একটা স্মারকলিপি পেশ করব।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর ৫০, ৫১, ৫২ ধারা অনুযায়ী হল বা হোস্টেলের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তারা সেটা পারেনি। এতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের কটেজ-মেস ভাড়ার খরচ গুণতে হচ্ছে। তাই সবার না হলেও অন্তত অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দাঁড়ানো যৌক্তিক বলেই আমরা মনে করছি।

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের মূল অর্থ উপার্জন টিউশন ও পার্ট টাইম জব করে তাদের পড়াশোনাসহ অন্যান্য খরচ চালান। করোনার ক্রান্তিকালে এসব অর্থ উপার্জনের পথ তাদের বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে তাদের মেস-কটেজ ভাড়া দিতে অনেক কষ্ট হয়ে পড়েছে। করোনার এই পরিস্থিতিতে মেস ভাড়া, কটেজ ভাড়া মওকুফ করলে উপকৃত হবে। ভাড়া মওকুফ অথবা কমানো সম্ভব না হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিকভাবে সাপোর্ট দেওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

নাট্যকলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ধর্মরাজ তঞ্চংগ্যা সারাবাংলাকে বলেন, শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ পার্ট টাইম জব, টিউশন করে পড়াশোনাসহ অন্যান্য খরচ চালায়। অনেকে বাড়িতেও টাকা পাঠান। কিন্তু এই করোনা দুর্যোগকালে তাদের অর্থ উপার্জনের রাস্তা বন্ধ। যার ফলে কটেজ-মেসভাড়া দেওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই এই দুর্যোগকালে প্রশাসন যদি অস্বচ্ছল অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায় খুবই উপকৃত হবে।

অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র দেওয়ান তাহমিদ সারাবাংলাকে বলেন, মালিকদের কাছে আমরা বড়জোর আবেদন জানাতে পারতাম। এটা যেহেতু তাদের ইনকামের উৎস, তারা সেটা নাকচ করে দিলেও আমাদের কিছু বলার থাকতো না। বিশ্ববিদ্যালয় আশপাশের শতাধিক কটেজ এবং চট্টগ্রাম শহরে মেস মালিকদের সবার কাছে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে পারেনি তাই শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারীর এই পরিস্থিতিতে অস্বচ্ছল অনাবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের মাসের পর মাস জমতে থাকা ভাড়া পরিশোধে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।

এই বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিরোধী না। শিক্ষার্থীদের উপকারে আমি কাজ করতে চাই। এই বিপর্যের মধ্যে করোনা সামলাবো-না এগুলো নিয়ে কথা বলবো। বিষয়টা আমাদের বিবেচনায় আছে। মালিকদের সঙ্গে কথা বলবো। যতটুকু পারি সহযোগিতা করব।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গেল সোমবার (১৬ মার্চ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ২৩ দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। তারপরে, রোববার (১২এপ্রিল) নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

সারাবাংলা/সিসি/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন