বিজ্ঞাপন

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেননি রুবানা— দাবি বিজিএমইএ’র

June 6, 2020 | 10:08 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেননি বলে সংগঠটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ জুন) বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সচিব মেজর মো. রফিকুল ইসলামের (অব.) সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ জুন ‘গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে একটি সংবাদ সম্মেলনের প্রতি বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। বিজিএমইএ মনে করে, বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপিত হয়নি। বিজিএমইএ সভাপতি শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেননি। সংগঠন হিসেবে এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার কোনো সুযোগও নেই। বিজিএমইএ সভাপতি কর্মসংস্থান কমে যাওয়া ও সম্ভাব্য শ্রমিক ছাঁটাই বিষয়ে তার গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত শ্রমিকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম

বিজ্ঞাপন

বিজিএমইএ বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পোশাক শিল্পে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১৪ শতাংশ, যা গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি। গত ১ মে সময় পর্যন্ত শিল্পে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত পোশাক শিল্পে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেও অধিক ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক বাজারগুলো কোভিড-১৯’র প্রভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে অনেক বড় বড় ক্রেতা দেউলিয়া হয়ে গেছে।

বিজিএমইএর দাবি, চলমান পরিস্থিতিতে প্রকৃতপক্ষে, কোনো কারখানাই সামর্থ্যের শতভাগ ব্যবহার করতে পারছে না। ৩৫ শতাংশ সক্ষমতায় কারখানা সচল রেখেছে, এমন ঘটনাও আছে। বড় কারখানাগুলোও ৬০ শতাংশের বেশি সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। এছাড়া চলতি জুনে পোশাক কারখানাগুলো গড়ে ৫৫ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহার করে কোনোরকমে উৎপাদন কার্যক্রম চালু রাখছে। জুলাই পরিস্থিতি এখনই অনুমান করা কঠিন। তবে উদ্যোক্তারা আশঙ্কা করছেন, সামনের দিনগুলো পোশাক শিল্পের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তজার্তিক সংস্থা ম্যাকেঞ্জির তথ্যানুযায়ী, কোভিড-১৯’র প্রভাবে ২০২০ সালে আগের বছরের তুলনায় বিশ্বের পোশাক বাজারে সেলস রেভিনিউ ৩০ শতাংশ অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে পোশাক রফতানি ১০ বিলিয়ন ডলার কমে যাবে। চলমান পরিস্থিতিতে, উদ্যোক্তারা টিকে থাকার লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ’র সদস্যভূক্ত কারখানার মধ্যে ৩৪৮টি বন্ধ হয়েছে শুধুমাত্র গত ২ মাসেই। বাকি আছে আর মাত্র ১ হাজার ৯২৬টি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: চলতি মাস থেকে গার্মেন্টে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হবে

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাকি কারখানাগুলো হয় একে একে বন্ধ হয়ে যাবে অথবা কম ক্যাপাসিটি নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করবে। এটাই বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা। আমরা সবাই দেখছি, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও কাজ ও শ্রমিক সংখ্যা বিপুলভাবে কমছে। আমরা শিল্প গড়ি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য। আজকের এই বাস্তবতা উদ্যোক্তাদের জন্যও নির্মম।

দুটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন জানিয়ে বিজিএমইএ বলছে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সহজ শর্ত ঋণের ৫ হাজার কোটি টাকার পুরোটাই সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আরও উল্লেখ্য যে, পোশাক খাত প্রতিমাসে মজুরি পরিশোধ করে থাকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।

সমস্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কারখানা বন্ধ বা সামর্থ্য কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের কথা ভেবে বিজিএমইএ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শুধুমাত্র পোশাকখাতই নয়, সকল খাতেই কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে। কোনো কারখানা যদি চলমান পরিস্থিতির শিকার হয়ও, তারপরও মালিক ও শ্রমিক উভয়ই শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে বলে প্রত্যাশা বিজিএমই’র।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: বাজেটে প্রণোদনা পেতেই ছাঁটাই নিয়ে এমন বক্তব্য বিজিএমইএর!

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন