বিজ্ঞাপন

হজযাত্রার অনিশ্চয়তা কাটছে না

June 10, 2020 | 10:16 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে হজ পালন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না। করোনার কারণে এ বছর সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন করা হতে পারে— আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এমন খবর এলেও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এমন কোনো তথ্য আসেনি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ এবার হজ পালন করতে পারবে কি না, তা নির্ভর করছে সৌদি আরব সরকারের ওপরে।

বিজ্ঞাপন

সৌদি আরবেরর হজ কর্তৃপক্ষের দু’টি সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছিল, প্রতিবছর যতসংখ্যক মানুষ হজ পালন করে থাকেন, এ বছর তার ২০ শতাংশকে হজ পালনের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।

আরও পড়ুন- সীমিত আকারে হজ পালনের ইঙ্গিত সৌদি সরকারের

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুধবার (১০ জুন) সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব এ বি এম আমীন উল্লাহ নূরী সারাবাংলাকে বলেন, আমরা রয়টার্সের প্রতিবেদন দেখেছি এবং সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশের হজ কার্যালয়ে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে, এখন পর্যন্ত হজ সম্পর্কিত কোনো তথ্য তারা জানেন না। হজ কিভাবে, কতটা পরিসরে পালন হতে পারে— সে তথ্যও তাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে সৌদি আরব সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এ বছর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩০ জুলাই (৯ জিলহজ) হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এখন থেকে দিন গণনা শুরু করলে ১ মাস ২০ দিন পর অনুষ্ঠিত হবে হজ। সৌদি সরকার অনুমতি দিলেও এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারের এই যুগ্ম সচিব বলেন, এবার করোনাভাইরাসের কারণে স্বাভাবিক সময়ে তুলনায় অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধন করেছে। তাই সবকিছু দ্রুত ব্যবস্থা করা অসম্ভব হবে না।

জানতে চাইলে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাত হোসাইন তসলিম সারাবাংলাকে বলেন, এখন বিশ্বে বিশেষ সময় চলছে। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন, তাতে এক সপ্তাহ আগে অনুমতি পেলেও তাদের পাঠানো সম্ভব।

তিনি বলেন, এবার হজ নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় রয়েছি। আমাদের উপার্জনের মূল অংশটাই আসে হজ থেকে। এই উপার্জনের ওপরই ব্যবসা নির্ভর করে। হজ পালন না হলে অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলবে। কারণ অফিস ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

বিজ্ঞাপন

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চ মাসে অর্নির্দিষ্টকালের জন্য ওমরাহ পালন স্থগিত করে সৌদি আরব সরকার। এরপর অন্যান্য দেশের মতো সেখানেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকে। বুধবার রাত পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, দেশটিতে এক লাখ ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন আটশ’র বেশি মানুষ। এ পরিস্থিতিতে যেসব দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব দেশের আগ্রহীদের হজ পালনের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। আর এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হলে তা বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী হিসেবে নিবন্ধিতদের জন্যও শঙ্কার কারণ হবে। কারণ আমাদের দেশেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।

বাংলাদেশ থেকে অবশ্য এ বছর হজ পালনের উদ্দেশ্যে ৬৫ হাজার ৫১২ জন নিবন্ধন করে অপেক্ষা করছেন। এই সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। সবশেষ ২০১৯ সালেও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন বাংলাদেশি হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। এ বছর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে একাধিকবার সময় বাড়িয়েও খুব বেশি মানুষের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন