বিজ্ঞাপন

লকডাউনের তৃতীয় দিনে পূর্ব রাজাবাজারে কমেছে ‘গেটের ভিড়’

June 12, 2020 | 10:51 pm

সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় পূর্বঘোষিত পরীক্ষামূলক ১৪ দিনের লকডাউনের তৃতীয় দিনে অনেকটাই সহনশীল হয়েছেন বাসিন্দারা। লকডাউন শুরুর পর অহেতুক যাওয়া-আসার হিড়িক পড়েছিল বাসিন্দাদের মাঝে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের মতো বাসিন্দারা তৃতীয় দিনে গেটের সামনে এসে তেমন ভিড় করেননি

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১২ জুন) লকডাউনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যরা একথা জানান। গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে এলাকাটিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনায় লকডাউন ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এলাকার বাইরে এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য বিদ্যমান আটটি রাস্তার সাতটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র একটি রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে জরুরি কাজে যাতায়াতের জন্য।

এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, লকডাউনের পর থেকে ওই এলাকার বাসিন্দারা নানা অজুহাতে এলাকার বাইরে যাওয়ার জন্য রাস্তার প্রবেশ মুখে এসে অনুমতির জন্য ভিড় করতেন। কাউকে কাউকে পুলিশ বাধ্য হয়ে অনুমতি দিলেও গত দুইদিন পুলিশ বাসিন্দাদের লকডাউনের কার্যকারিতা বোঝানোর চেষ্টা করেছে। সে কারণেই বাসিন্দারা আগের মত একণ আর অহেতুক গেটে ভিড় করছেন না।

বিজ্ঞাপন

গ্রিন রোড়ের আইবি হোস্টেলের প্রবেশ মুখে দায়িত্বরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত দুইদিন যে অবস্থা দেখেছি তাতে আমরা নিজেরাই অবাক হয়েছিলাম যে, এখানকার বাসিন্দারা কেন নিজের ভালো চায় না। রীতিমত মনে হচ্ছিল তাদের বেঁধে রাখতে হবে গলির ভেতরে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা বাইরে বের হওয়ার জন্য গেটে অপেক্ষা করছে। আমরা দেখেছি যারা গেটে ভিড় করেছিলেন তাদের কয়েকজনের জরুরি ওষুধ কিংবা হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু অধিকাংশের প্রয়োজনীয়তা ছিল একেবারেই অহেতুক।’

তিনি আরও বলেন, আজ থেকে সাংবাদিক, চিকিৎসক কিংবা অন্য যে কেউ যারা জরুরি কাজে নিয়োজিত তাদেরও প্রবেশ এবং বাইরে যাওয়ার সময় নাম-ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার দিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এতে করে কেউ বের হওয়ার সময় যদি নাম-ঠিকানা এন্ট্রি না করেন তবে তিনি পরবর্তীতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ পদ্ধতির কারণে আজ কিছুটা চাপ কমেছে। তবে কাল থেকে আরও চাপ কমবে বলে মনে করি।’

বিজ্ঞাপন

ডিএমপির তেঁজগাও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক জায়গায় বাসিন্দারা গেট টপকে বের হয়ে যাওয়ার খবর শুনেছিলাম। এরপর আরও কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। লকডাউন বাস্তবায়নে যা কিছু করা দরকার আমরা সেসব কিছু করতে প্রস্তুত।’

এদিকে বের হতে না পারাই বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজনের ভরসা এখন স্বেচ্ছাসেবীরাই। তাই বাসিন্দারা গেটের কাছে এসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে নিজেদের সমস্যা জানিয়ে সমাধানের জন্য সহায়তা চাইছেন। আর এতে সাড়াও মিলছে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছ থেকে।

আনোয়ারুল ইসলাম নামে একজন স্বেচ্ছাসেবী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রায় ৫০ জন গত বুধবার থেকে প্রস্তুত আছি বাসিন্দাদের সেবায়। কিন্তু বাসিন্দাদের কেউ কেউ এমন এমন সমস্যার কথা বলে যা শুনলে হাসিও পায়, আবার রাগও হয়।’

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি বাসিন্দাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ধীরে ধীরে আশা করছি বাসিন্দারাও বুঝতে শুরু করেছেন যে এটি তাদের প্রয়োজনেই করা হচ্ছে। প্রথম দুই দিন বুঝে উঠতে তাদের একটু সময় লেগেছিল। এখন বাসিন্দারাও ভিড় কম করছেন।’

পরীক্ষামূলক লকডাউনে কেমন সাড়া মিলছে এমন প্রশ্নে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চাই এলাকাটি গ্রিন জোনে পরিণত হোক। এজন্য আমরা এখনও পর্যালোচনা করছি।’ তবে এক্ষেত্রে বাসিন্দাদের আরও সচেতনতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সারাবাংলা/এসএইচ/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন