বিজ্ঞাপন

গণধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা হয় শারমিনকে

June 13, 2020 | 5:30 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরার উত্তরখান এলাকার একটি নির্জন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এক তরুণীর গলাকাটা লাশ। ধারণা করা হচ্ছিল, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ৯ দিনের মাথায় সেই হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, চার জন মিলে গণধর্ষণ করে তারপর সেই তরুণী শারমিনকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হাফিজুর রহমান রিয়েল এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের বিষয়টি সারাবাংলাকে জানিয়েছেন। নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টেও এর বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উত্তরখান থানা এলাকার বৈকাল রোডের একটি নির্জন স্থানে গত ৫ জুন রাতে খুন হন শারমিন। এলাকার চার জন শারমিনকে ধর্ষণের পর চাপাতি দিয়ে গলার একপাশে কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে খবর পেয়ে ছুটে আসে উত্তরখান থানা পুলিশ। খবর দেওয়া হয় সিআইডির ক্রাইম সিনকে। লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঢামেক মর্গে।

এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল বলেন, শুক্রবার বিকেলেই ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল স্যারের পরামর্শে পিবিআইর মাধ্যমে আঙুলের ছাপ নেওয়ার ব্যবস্থা করি। একসময় লাশের পরিচয় মেলে। মেয়েটির বাবা মর্গে গিয়ে নিজের মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন।

বিজ্ঞাপন

এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল জানান, উত্তরখানের সিদ্ধিরটেক এলাকায় হাজী মাহাতবের ভাড়া বাড়িতে পাশাপাশি রুমে চারটি পরিবার ভাড়া থাকে। শারমিন তার মা-বাবা আর একমাত্র মেয়ে কুলসুমকে নিয়ে এখানেই থাকতেন। একসময় পাশের রুমের ফুরকানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে শারমিনের। তবে ফুরকান ছিলেন বিবাহিত। এদিকে, ফুরকানের সঙ্গে পরিচয় ছিল মাসুদের। এই মাসুদ নানা ধরনের অপরাধে জড়িত। ফুরকানের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র ধরে শারমিনের সঙ্গে পরিচয় হয় মাসুদের। একসময় ফুরকান জানতে পারেন, মাসুদের সঙ্গে শারমিনের সম্পর্ক রয়েছে।

এডিসি বলেন, গ্রেফতার চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বলেছেন, আরও অনেকের সঙ্গেই শারমিন সম্পর্ক গড়েছিল বলে তারা জানতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শারমিনের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগও করেন তারা। ফুরকান ও মাসুদ এরকম আরও দুই জনের সন্ধান পান। তারা হলেন সাইফুল ও আনোয়ার। তারা সবাই মিলে শারমিনকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

এডিসি হাফিজুর রহমান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ জুন সন্ধ্যার পর শারমিনকে বাড়ির বাইরে দেখা করতে বলেন ফুরকান। সে অনুযায়ী শারমিন তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেখানে প্রথমে মাসুদ হাজির হন। তারা শারমিনকে নিয়ে হাঁটতে থাকেন সামনের দিকে। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন আনোয়ার ও সাইফুল। চার জন মিলে শারমিনকে নির্জন একটি স্থানে নিয়ে গিয়ে তারা ধর্ষণ করেন। এরপর তারা শারমিনের হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলেন। শারমিন এ ঘটনা সবাইকে বলে দেবে জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং একপর্যায়ে শারমিনকে গলা কেটে খুন করেন।

বিজ্ঞাপন

এডিসি হাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘উত্তরা জোনের ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল স্যারের তত্ত্বাবধানে রাত-দিন পরিশ্রম করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জামালপুরের বকশিগঞ্জ থেকে ফুরকান ও উত্তরখানের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাসুদ, সাইফুল ও আনোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। এক্ষেত্রে ডিএমপির আইএডি বিভাগ নিরবচ্ছিন্নভাবে সহায়তা করেছে। দু’জন আসামি শুক্রবার (১২ জুন) আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে তাদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন