বিজ্ঞাপন

যেসব কারণে ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা

June 27, 2020 | 10:07 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, জাতীয় সংসদসহ বেশকয়েকটি বিষয়ে ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৭ জুন) বিকেলে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মাওলানা মান্নানের ছেলে ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন এবং পত্রিকাটির সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে আসামি করা হয়।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান পারভেজ বলেন, ‘ডিজিটাল আইনে ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ২২। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি মূলত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে মামলাটি দায়ের করেছি। আমার মূল অভিযোগ, গতকাল (২৬ জুন) ইনকিলাব অনলাইন ভার্সনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার, জাতীয় সংসদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সম্পর্কে চরম আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। আমি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর (২৫), (২৯) এবং (৩১) নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করেছি।’

মামলার অভিযোগ পত্রে ব্যারিস্টার সৌমিত্র নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী উল্লেখ করে বলেন, “গত ২৬ জুন (শুক্রবার) দৈনিক ইনকিলাবের অনলাইন সংস্করণে ‘এইচ টি ইমামকে সরিয়ে দিন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার, জাতীয় সংসদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সম্পর্কে চরম আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবেদনটির মূল উদ্দেশ্য দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে দেশের অভ্যন্তরে একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা।”

আরও পড়ুন: ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে জাতীয় সংসদের চরম অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগে বলা হয়, “ইনকিলাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গৃহপালিত বিরোধী দল থাকায় বর্তমান সংসদ নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ নেই।’ যা মহান জাতীয় সংসদ সম্পর্কে একটি ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য। এমন মন্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই উক্তির মাধ্যমে পত্রিকাটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য প্রকাশ করেছে।”

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর মন্তব্য করা হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পর্কে চরম বিষোদগার করা হয়।’

এই আইনজীবী জানান, দৈনিক ইনকিলাবের এই মন্তব্যগুলো চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ, মিথ্যা, অপমানজনক, বিকৃত, মানহানিকর ও আক্রমণাত্মক। তথ্যগুলো মিথ্যা বলে জানার পর বিবাদীরা সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে এইগুলো প্রচার করছে। এই মন্তব্যগুলোর মাধ্যমে বিবাদী দুজন রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার করেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি করার জন্যই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই কথাগুলো বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

ইনকিলাবের প্রকাশিত প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে দাবি করে অভিযোগে তিনি বলেন, “প্রতিবেদনের এক জায়গায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেও তারা দ্বিধা করেনি। সেখানে মন্তব্য করা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি যাদের দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের একজন এইচ টি ইমাম যেন সবকিছুর রক্ষক-ভক্ষক হয়ে গেছেন।’ এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের মাধ্যমে তারা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও মেধা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। এই ধরণের কর্মকাণ্ড অমার্জনীয় অপরাধ।’

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ইনকিলাব কর্তৃপক্ষের বেশকয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাদের কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন