বিজ্ঞাপন

করোনায় বিদেশি বিনিয়োগ কমলেও রেমিট্যান্স বেড়েছে

July 4, 2020 | 1:16 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগে। সদ্য সমাপ্ত (২০১৯-২০) অর্থবছরের (জুলাই-মে) ১১ মাসে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের  তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। বিদেশিরা পুঁজিবাজারে যে পরিমাণ বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) করেছে তার চেয়ে বেশি তুলে নিয়েছে। দেশে আমদানি-রফতানি ও বিদেশি বিনিয়োগ কমলেও একই সময়ে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ১১ মাসে বিভিন্ন খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হয়েছে ৩৭২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ১৯৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই কমেছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ ও নিট কমেছে ১৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে এফডিআই ছিল ৪৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর মধ্যে নিট এফডিআই ছিল ২৪২ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কম ছিল। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে তা আরও কমেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নিট) ছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। সদ্য সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই ১১ মাসে বিদেশিরা যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে তার থেকে ৭০ লাখ ডলার বেশি তুলে নিয়ে গেছে। করোনায় রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যে বড় ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০৬ কোটি ৯০ লাখ (১৬.০৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার। বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে বাংলাদেশের অবস্থাও ঋণাত্মক রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশে আয় হয়েছে তিন হাজার ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে চার হাজার ৬২৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে মে শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা  ধরে) এর পরিমাণ এক লাখ ৩৬ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ঘাটতির এ অংক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল এক হাজার ৪৯৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে, আমদানি কমেছে ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ। রফতানি কমেছে ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। তবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোন ঋণ করতে হচ্ছে না। ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে এসেছে। গত এপ্রিল ও মে মাসেও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

গত অর্থবছরের মে শেষে চলতি হিসাবে ৪৩৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের সার্বিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে প্রথম ১১ মাসে সামগ্রিক লেনদেনে বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১৬৩ কোটি ১০ লাখ ডলারে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেনে ৬৮ কোটি ডলার ঘাটতি ছিল।

অন্যদিকে আলোচিত সময়ে সেবা খাতে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমেছে।  বিদেশিদের বেতন ভাতা পরিশোধ, মূলত বীমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়। জুলাই-মে সময়ে এ খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৭৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের মতোই।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: করোনার প্রভাব: ৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এপ্রিলে

সারাবাংলা/জিএস/টিসি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন