বিজ্ঞাপন

টাকার অভাবে দিনমজুর ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী

July 10, 2020 | 6:07 pm

এমদাদুল ইসলাম ভূট্টো, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ঠাকুরগাঁও: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। চলমান ছুটি আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। নির্ধারিত এই তারিখের পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে কিনা সেই নিশ্চয়তাও নেই। শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে এসবের কিছুই প্রভাব ফেলছে না ঠাকুরগাঁওয়ের ৫টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। বরং অবসর এই সময়ে টাকা রোজগারের জন্য মাঠে নেমেছে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। আম ও লিচু বাগানে শ্রমিকের কাজ করছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়া বেশিরভাগই স্কুল শিক্ষার্থী।

পীরগঞ্জ উপজেলা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুন্না বলে, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় বাগানে কাজ করছি। প্রতিদিন কাজ করে দুই থেকে তিন’শ টাকা পাই। এই টাকা বাবা-মাকে দেই। সংসারের খরচ মেটাতে কাজে নামতে হয়েছে।’

শিক্ষাবিদ আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বেশিরভাগ পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং নেই। অথচ শিক্ষার্থী পরিচয়ের বাইরে এরা শিশু। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। জেলার প্রায় তিন শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী শ্রমিকের কাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক শিক্ষার্থী স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতার বাইরে। দু’বেলা খাবার যোগাড় করাই যেখানে কষ্টের,  এ অবস্থায় ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ব্যবহারের কথা চিন্তাও করতে পারছেন না অনেক অভিভাবক।

অভিভাবক নূরুল হুদা বলেন, ‘সবার পক্ষে স্মার্টফোন কিনে অনলাইনে ছেলেমেয়েদের পড়ানো সম্ভব নয়। এ পদ্ধতির ফলে শির্ক্ষাথীদের মধ্যে বৈষম্য বাড়াবে এবং মানসিকভাবে চাপে পড়বে অনেক শিক্ষার্থী।’

সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুনা লায়লা বলেন, ‘একজন শিক্ষককে অন্তত ৫ শিক্ষার্থীর সঙ্গে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানে যুক্ত হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং মনিটরিং করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জুম অ্যাপসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংসদ টিভি ছাড়াও কিশোর বাতায়ন নামে একটি ওয়েব সাইট চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

সদর উপজেলার বগুলাডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ধৈর্য্য ধরে শিশুর প্রতি আরও যত্নশীল হতে হবে। অভিভাবকরা শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বাড়াবেন।’

সারাবাংলা/টিসি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন