বিজ্ঞাপন

উঠে গেল ম্যান সিটির নিষেধাজ্ঞা, কমেছে জরিমানাও!

July 13, 2020 | 2:59 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

আর্থিক স্বচ্ছতার ধারা (ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে, এফএফপি) ভঙ্গ ও ইউরোপিয়ান লিগের (উয়েফা) গর্ভনিং বডির প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপনের অভিযোগে দুই বছরের জন্য ইউরোপের সর্বোচ্চ মর্যাদার টুর্নামেন্ট উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে নিষিদ্ধ হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। সোমবার (১৩ জুলাই) ম্যান সিটির করা আপিলের রায় প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে তাদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সিএএস। অর্থাৎ সামনের মৌসুম থেকেই সাধারণভাবেই চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে পারবে ম্যানচেস্টার সিটি।

বিজ্ঞাপন

এফএফপি ভঙ্গ এবং উয়েফার তদন্তে সাহায্য না করায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুই বছরের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে নিষিদ্ধ করা হয় ম্যানচেস্টার সিটিকে। শুধু তাই নয়, ৩০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানাও করা হয় এই ক্লাবকে।

সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত খেলাধুলাভিত্তিক সর্বোচ্চ আদালত ‘কোর্ট অব অ্যারবিট্রেশন ফর স্পোর্টস’ (সিএএস) সোমবার (১৩ জুলাই) সিটির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ খারিজ করে দেন। আর সেই সঙ্গে তাদের উপর আনিত নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়। এবং জরিমানা কমিয়ে ৩০ মিলিয়ন থেকে ১০ মিলিয়ন ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে কোর্টের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, উয়েফা এই ব্যাপারে আর কোনো বক্তব্যও প্রদান করবে না বলেও জানা গেছে।

সিএএস এক বিবৃতিতে জানায়, ‘বিজ্ঞাপনদাতাদের থেকে প্রাপ্ত অর্থের হিসাবে কোনো গণ্ডগোল পাওয়া যায়নি। সিটির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো কোনো নিয়ম ভাঙেনি। যেহেতু কোনো ধরনের নিয়ম ভাঙার প্রমাণ পাওয়া যায়নি তাই ম্যানচেস্টার সিটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়াও অনুচিত। তবে যেকোনো অনুসন্ধানে উয়েফাকে সাহায্য করা উচিৎ ছিল সিটির, কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের জরিমানা করা অর্থের এক তৃতীয়াংশ প্রদান করতে হবে উয়েফাকে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে সিএএসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। এক বিবৃতিতে সিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে সকল তথ্য প্রমাণ প্রদান করেছি। এবং আমরা প্রথম থেকেই স্বচ্ছ ছিলাম। আমরা সিএএসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই সুষ্ঠু বিচার সম্পাদন করার জন্য।’

এফএফপি সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে উয়েফার বক্তব্য— ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ম্যানচেস্টার সিটি উয়েফার আর্থিক স্বচ্ছতার ধারা ভেঙেছিল। তারা ক্লাবের আয়ের ঠিকঠাক হিসেব দেয়নি। তবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উয়েফার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা অনুসন্ধান শুরুর আগেই সিটিজেনদের ‘দোষী’ বলে উল্লেখ করেন এবং জানান, এর জন্য তাদের শাস্তি পেতে হবে। তবে তদন্ত শুরুর আগেই তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্যের জের ধরে সিটিজেনরা বলছেন, সঠিক তদন্ত ছাড়াই পূর্বপরিকল্পনা থেকে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

উয়েফার যে আর্থিক নীতি মূলত ফিনান্সিয়্যাল ফেয়ার প্লে বা এফএফপি নামে পরিচিত। ২০১১ সাল থেকে এই নীতি চালু হয়েছে। দলবদলের বাজারে কোনো দল যেন অসদুপায়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে না পারে ,সেটা দেখভাল করাই এ নীতির উদ্দেশ্য। এবং একইসঙ্গে ক্লাবের বিজ্ঞাপনদাতাদের অর্থ সঠিকভাবে হিসাব করে দেখানো হচ্ছে কি না,  তা নিয়েও কাজ করে এফএফপি।

রায় ঘোষণার পর ম্যান সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা

দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবেই আপিল করে ম্যানচেস্টার সিটি। উয়েফার কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি জরিমানা গুনতে হলে আন্তর্জাতিক খেলাধুলাভিত্তিক সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয় সিটিজেনরা। নিজেদের নির্দোষ দাবি করে উয়েফাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। পাঁচ মাস পর সেই আপিলের রায় অবশেষে প্রকাশ পায়।

আপিলের শুনানির আগে ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ কোচ পেপ গার্দিওলা জানিয়েছিলেন তিনি এ নিয়ে চিন্তিত। তিনি মনে জানিয়েছিলেন তার ক্লাব সম্পূর্ণ নির্দোষ। তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন যে, তার দল আগামী মৌসুমে অবশ্যই চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলবে।

গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। আমি অনেক আত্মবিশ্বাসী এবং আমি বিশ্বাস করি যে আমরা অবশ্যই চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলব। কারণ আমরা মাঠে থাকতে চাই আরও অনেক বছর। আমি জানি আগামি ১৩ জুলাই আমরা সব জানতে পারব। কিন্তু তারপরেও আমি আশা করি— ক্লাব, ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও খেলোয়াড়সহ সকল কোচিং স্টাফদের জন্য মঙ্গলকর রায়ই আসবে।’

বিজ্ঞাপন

অবশেষে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলো এবং আগামী মৌসুমেও চ্যাম্পিয়নস লিগে বহাল তবিয়তে খেলবে ম্যানচস্টার সিটি।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন