বিজ্ঞাপন

প্রতারণার অভিযোগ স্বীকার করেছেন সাহেদ: ডিবি

July 16, 2020 | 4:41 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নমুনা পরীক্ষা না করেই করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেছেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার অভিযোগ স্বীকার করেছেন তিনি। এছাড়া হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযানের আগে কিছু যন্ত্রপাতি সরিয়ে ফেলেছেন বলেও জানিয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, অভিযান চালিয়ে সেগুলো উদ্ধার করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ের গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- রিজেন্ট হাসপাতালের সব কার্যক্রম বাতিল

তিনি বলেন, অনেক কিছুই বলেছেন ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে। তবে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পালিয়ে থাকার ব্যাপারেও কথা বলেছেন। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়েও কথা বলেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন আরও বলেন, প্রতিদিনই নতুন নতুন মামলার তথ্য আসছে। অনেক মামলা। সব মামলার তথ্য বিশ্লেষণ করা এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাত্রই রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ধীরে ধীরে সব তথ্য বের হয়ে আসবে।

গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা  জানান, র‌্যাবের অভিযানের আগে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা থেকে যন্ত্রপাতিসহ বেশকিছু সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সাহেদ। ডিবির অভিযানে এসব যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হবে।

বিজ্ঞাপন

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, করোনাকালীন দুই মাসে অন্তত চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রতারক সাহেদ। হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বেশি দামে পণ্য এনে কম দামে বিক্রি করে টাকা পকেটে ভরেছেন। অথচ কারও টাকা তিনি পরিশোধ করেননি। তার বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলোও একে একে স্বীকার করছেন। রিমান্ডে সাহেদ ও মাসুদকে আলাদা আলাদা এবং মুখোমুখি করেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এর আগে বুধবার (১৫ জুলাই) ভোর সোয়া ৫টার দিকে সাহেদকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাবের বিশেষ একটি দল। শাখরা কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীতীরের ইছামতি খাল দিয়ে তিনি ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এসময় র‌্যাব তাকে অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। র‌্যাব জানিয়েছে, সাহেদ স্থানীয় দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ ঘটনায় দেবহাটা থানায় বুধবার অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।

সাহেদকে গ্রেফতার করে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা নিয়ে আসে র‌্যাব। পরে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উত্তরায় তার গোপন অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই গোপন অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে বিকেলে র‌্যাব তাকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

পরে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার সাড়ে ১০ টার দিকে সাহেদ ও মাসুদ পারভেজকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালতও প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালে গত ৬ জুলাই অভিযান চালান র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে রিজেন্ট হাপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অনিয়ম-প্রতারণার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে জানা যায়, এর আগেও বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করেছেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলার তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আরও পড়ুন-

সাহেদ গ্রেফতার

এমডির তথ্যে চেয়ারম্যান গ্রেফতার

সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব

হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হচ্ছে সাহেদকে

সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হলো সাহেদকে

‘জাল টাকায় ঋণের অর্থ পরিশোধ করতেন সাহেদ’

‘দালালের সহায়তায় দেশত্যাগের চেষ্টা করছিল সাহেদ’

‘বোরকা পরে নৌকায় ভারতে পালাতে চেয়েছিল সাহেদ’

সাহেদের গোপন অফিস থেকে জাল টাকা উদ্ধার, র‌্যাবের মামলা

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন