বিজ্ঞাপন

খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে দ্বিগুণের বেশি

July 18, 2020 | 2:13 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপনডেন্ট

ঢাকা: সড়ক প্রশস্তকরণে ১০৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ ব্যয় বাড়ছে। সেইসঙ্গে মেয়াদ বাড়ছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে ৯৮ কোটি টাকা প্রকল্পে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। এ ছাড়া দুই বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে যাচ্ছে সাড়ে ৭ বছর। খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্পে ঘটছে এমন ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যমান সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন, রূপসা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে খুলনা শহরে প্রবেশের জন্য স্বল্পতম দূরত্বের সড়ক নির্মাণ, যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও যানজট হ্রাস পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, শুরু থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ব্যয় হয়েছে ৮৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশ। অগ্রগতি অনেক কম হলেও পাঁচ কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, সড়কের ডিজাইন পরিবর্তন, সর্বশেষ রেট সিডিউল অনুযায়ী ব্যয় প্রাক্কলন, অনতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তি এবং মেয়াদ বৃদ্ধি। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৯ জুন অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করার পর একনেকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, খুলনা শহরের পূর্বদিকে রূপসা নদীর ওপর খানজাহান আলী সেতুটি ২০০৫ সালে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। খানজাহান আলী সেতু খুলনা শহর থেকে প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রূপসা মোড় হতে সেতুতে যাওয়ার একটি পুরাতন সড়ক আছে, যা শিপইয়ার্ড সড়ক নামে পরিচিত। সড়কের উভয় পাশের বহু মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, ম্যাচ কারখানা, খুলনা শিপইয়ার্ড ও অক্সিজেন কারখানা রয়েছে। কিন্তু সড়কটি অত্যন্ত অপ্রশস্ত ও ভঙ্গুর হওয়ায় তা বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে পারতে পারছে না।

বিজ্ঞাপন

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সড়কটি উন্নয়নের জন্য প্রস্তাব করে। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে বিশেষ সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে ১২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা করা হয়। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা।

এ ছাড়া মূল অনুমোদিত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত। এরপর ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রথমবার একবছর বাড়িয়ে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এর মধ্যেও কাজ না হওয়ায় ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই দুইবছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বরা হয়। এরপর তৃতীয়বার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই একবছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে সাড়ে তিন বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সড়কটি ৪-৫ বছর যাতে বর্ষাকালে জোয়ার ভাটার কারণে এক থেকে দুই ইঞ্চি পর্যন্ত পানির নিচে নিমজ্জিত হয়। সড়কটি যান চলাচলের পাশাপাশি শহর রক্ষা বাঁধ হিসেবে কাজ করে। কনসালটেন্ট ডিজাইন করার সময় এইচএফএল (হাইন্ট ফ্লাড লেভেল) বিবেচনা করে সড়কটি ডিজাইন করেছে। সে জন্য প্রস্তাবিত সড়কটি বিদ্যমান সড়ক হতে স্থান ভেদে ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত উঁচু করা হবে। পাশাপাশি খুলনার সাব সয়েল এর কন্ডিশন ভালো না হওয়ায় সাব-সয়েলের বিয়ারিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধিও জন্য ইমপ্রুভমেন্ট ডিজাইনে বিবেচনা করায় বিভিন্ন অঙ্গের (ভূমি উন্নয়ন, পেভমেন্ট, ব্রীজ, কালভার্ট, ড্রেন, ফুটপাত, রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ এবং বৈদ্যুতিক কাজ) পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) শামীমা নার্গিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনা শহরের অভ্যন্তরে নিরাপদ ও যানজটমুক্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। তাই প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন