বিজ্ঞাপন

‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা নেই’

July 22, 2020 | 10:14 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: একদিকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্টের কারণে বিশ্বে আমাদের দেশের নাগরিকদেরও হেয় হতে হচ্ছে। অন্যদিকে করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। চাকরি হারাচ্ছে বহু নাগরিক, বেকার হয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। আর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মানুষের কোনো আস্থা নেই।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২১ জুলাই) সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সারাবাংলা ডটনেট আয়োজিত ‘সারাবাংলা ফোকাস’ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘কেমন আছি আমরা’ শিরোনামের এ পর্বে অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও চ্যানেল আইন অনলাইনে সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান।

অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, প্রথম দুই মাস করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সাধারণ ছুটির নামে তামাশা করা হয়েছে। আমাদের প্রয়োজন ছিল কার্যকর লকডাউন, কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। আমরা যেটা করেছি, তাতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। স্বাস্থ্য উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর অনাস্থা তৈরি হয়েছে। যার ফলে অধিকাংশ হাসপাতালের বেড এখন ফাঁকা। শ্রমিক ছাঁটাইসহ অনেক ক্ষেত্রে সরকারের সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ নেই। বাজেটে প্রতারণা হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতাই এখানে প্রধান। এখানে তামাশা, প্রতারণা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতাও দেখা গেছে। ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম দেখা গেছে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, সাহেদ ও সাবরিনা কেবল ব্যক্তি নয়, পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে সাহেদ-সাবরিনা আছে। করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট একটি গণহত্যার সামিল, যার কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখন ‘করোনা বোমা’ হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগে কেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি পদত্যাগ করবেন? তাকে বরখাস্ত কেন করা হয়নি? পদত্যাগ তো করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। যার অর্থ সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে, এসবের সঙ্গে সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কিন্তু সরকারকে মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এর কোনো বিকল্প নেই।

বিজ্ঞাপন

নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অনেক পিছিয়ে ছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের ১২ বছরের ক্ষমতায় হাসপাতালগুলোকে উন্নত করা হয়েছে। যেখানে স্বাস্থ্যসেবা অনিশ্চিত, সেখানে আমরা করোনা কিভাবে মোকাবিলা করব? যারা করোনার নকল সাটি‍র্ফিকেট দিয়েছে, তারা শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর মধ্যে একটা ঘৃণিত কাজ করেছেন, যা আমরা কেউ মেনে নিতে পারি না। তাই সরকারও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর করোনার বিষয়ে আরও ভালো করে দেখভাল করতে পারত। তারা ব্যর্থ হয়েছে বলেই এখন এগুলো নিয়ে কথা হচ্ছে। কোনোদিনই বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোর অবস্থা ভাল ছিলো না। আওয়ামী লীগ সরকার এগুলোকে ভালো করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সেজন্য সরকারের পাশে থাকতে হবে।

চ্যানেল আই অনলাইনের সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, এক ভাইরাস আমাদের জীবনকে তোলপাড় করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে ২ লাখ ১৩ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত। এটি কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সেটি কেউ বলতে পারে না। আমাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। দেশের সুশাসনের অভাব রয়েছে। করোনা এসে স্বাস্থ্যখাতের দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে। কিন্তু এই অবস্থা আগেও ছিল, সামনেও থাকবে। কারণ আমাদের সিস্টেম। তাই অবস্থার পরিবর্তন চাইলে আমাদের সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

জাহিদ নেওয়াজ খান আরও বলেন, মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। মানুষের পক্ষে টিকে থাকা কষ্টকর হচ্ছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, ১৩ শতাংশ মানুষ এরই মধ্যে কাজ হারিয়েছে। ৯ লাখ মানুষ বিশ্বে কাজ হারিয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে ধাক্কা লেগেছে। বাংলাদেশের ৬৬ লাখ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগবে বলে জানা গেছে। ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী চাপে আছে। দেশে আমাদের সামনে আরও অবস্থা খারাপ হবে।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন