বিজ্ঞাপন

জেমির বহরে চার নতুন সৈনিক

July 26, 2020 | 8:00 pm

জাহিদ-ই-হাসান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্বকাপ বাছাইয়ের রণাঙ্গন তৈরি হয়ে আছে। অক্টোবরেই তার দামামা শুরু হবে ফের। এদিকে এই রণাঙ্গনকে সামনে রেখে জাতীয় দলের কোচ ডে তার বহর গুছিয়েছেন। ৩৬ সৈনিকের তালিকা দিয়েছেন বাফুফেকে। সেই বহরে ভরসার ভিড়ে নতুন সৈনিক হয়েছে চার জন। ফিনল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তারিক কাজীতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বেশ আগ থেকেই। বহরে তারিকসহ নতুন আরো তিন মুখ আলোচনায় এসেছে।

বিজ্ঞাপন

৭ আগস্ট গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে শুরু হতে যাওয়া আইসোলেশন ক্যাম্পে যোগ দেয়ার অপেক্ষায় ৩৬ সৈনিক। নতুন মুখ হিসেবে চার ফুটবলার যোগ দিচ্ছেন ক্যাম্পে। তারা হলেন বসুন্ধরা কিংসের তারিক কাজী, বাংলাদেশ পুলিশ এফসির অধিনায়ক নাজমুল ইসলাম রাসেল ও ম্যাথিউজ বাবলু এবং উত্তর বারিধারার অধিনায়ক সুমন রেজা।

ডাক পাওয়া নতুন ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করতে উন্মুখ হয়ে আছেন জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ জেমি ডে, ‘আমি খুশি যে নতুন প্লেয়ার কিছু যোগ করতে পেরেছি। আমি অপেক্ষায় আছি তাদের দেখার জন্য। তাদের সবার সঙ্গে কাজ করার অধীর আগ্রহে আছি।’

পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই তাদের ক্যাম্পে ডাকা হয়েছে বলে দাবি জেমির। তবে দেখে আসি তাদের প্রফাইলগুলো-

বিজ্ঞাপন

১. তারিক কাজী:

এই চারজন নতুন সৈনিকের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ফুটবলার নিঃসন্দেহে ফিনল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার তারিক কাজী। ফিনল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের ফুটবলের পদচারণায় তাকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে অনেক বেশি। তবে আলোচনার সঙ্গে মাঠের পারফরম্যান্সের ফারাকে যোগ হয়েছে সমালোচনাও। ফিনল্যান্ডের বয়সভিত্তিক জাতীয় দলগুলোতে নিয়মিত খেলার পর সমর্থকদের আশার পারদ আকাশচুম্বি হয়েছে বিধায় এমন সমালোচনা।

তবে সব গুঞ্জন উড়ে দিয়ে তারিক কাজী জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে ইতোমধ্যে ঢাকার ফুটবলে অভিষেক হওয়া তারিকের অপেক্ষাটা এখন জাতীয় দলের জার্সি পড়ার। তবে তার জন্য ক্যাম্পের প্রস্তুতির পরীক্ষায় টিকতে হবে তাকে। তবেই টিকিট মিলবে জাতীয় দলের।

বিজ্ঞাপন

অবশ্য এবার লিগে কিংসের জার্সিতে সেভাবে নামের বিচার করতে পারেননি তারিক। ছয় ম্যাচের চারটিতে বেঞ্চে কাটিয়েছেন তারিক কাজী। একটি ম্যাচ পুরোপুরি খেলেছেন। আরেকটি ম্যাচে বদলি হিসেবে নামার সুযোগ পেয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশের বিপক্ষে প্রথমবার মাঠে নেমে অভিষেক করেন তারিক কাজী। ম্যাচ বসুন্ধরা কিংস ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে মোহামেডানের সঙ্গে নেমেছিলেন তারিক। সেই ম্যাচে কিংস হেরেছিল ১-০ ব্যবধানে। বাকী চার ম্যাচেই বেঞ্চে ছিলেন এই ডিফেন্ডার। আর লিগেও ছয় ম্যাচে ছয়ে অবস্থান করছিল কিংস।

২. ম্যাথিউজ বাবলু:

বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবের এই উইঙ্গার গেল ফেডারেশন কাপ দিয়েই মূলত জেমির নজর কেড়েছেন ম্যাথিউজ বাবলু। বাংলাদেশ পুলিশকে অভিষেক মৌসুমেই ফেডারেশন কাপে সেমি ফাইনালে তুলতে দুর্দান্ত অবদান রেখেছেন এই দিনাজপুরের ফুটবলার। কোয়ার্টার ফাইনালে সাইফকে ৩-১ গোলে হারানোর ম্যাচে ভলিতে দারুণ গোল করেন বাবলু। বল পায়ে দ্রুত গতি আর টেকটিক্যালি সাবলীল এই ফুটবলার এই টুর্নামেন্ট থেকেই জেমির নজরে আসেন এই ফুটবলার। লিগেও দলের হয়ে ছয় ম্যাচের পাঁচ ম্যাচই মাঠে পুরো সময় ছিলেন ২১ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।

৩. নাজমুল ইসলাম রাসেল:

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে অভিষেক ফেডারেশন কাপে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মাঝমাঠের লড়াইয়ে দুর্দান্ত ভূমিকা রাখা নাজমুল ইসলাম রাসেল ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। এই টুর্নামেন্ট আর লিগে রাসেলের পারফরম্যান্স চোখে ধরেছে জেমির। ২০১৩ সালে ফেনি সকারের হয়ে ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ লিগে পথচলা ‍শুরু। এরপর ফরাশগঞ্জ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম আবাহনী হয়ে বাংলাদেশ পুলিশে এফসিতে যোগ দিয়েই অধিনায়কের দায়িত্বভার পান টাঙ্গাইলের এই ফুটবলার। সাত বছরেই দেশের ফুটবলে নিজের জায়গা পোক্ত করা বিকেএসপির সাবেক ফুটবলার এখন জাতীয় দলের প্যানেলে ঢুকে পড়েছেন। অপেক্ষায় আছেন নিজেকে প্রমাণের। লিগে ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার নিয়মিত পারফরম্যান্সের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে মূল দলে ঢুকলেও অবাক হওয়ার বিষয় হবে না।

৪. সুমন রেজা:  

ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ লিগের ১৩ দলের মধ্যে বসুন্ধরা কিংসের আধিপত্য জাতীয় দলে। এরপর ঢাকা আবাহনী, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ও শেখ রাসেল সবচেয়ে বেশি ফুটবলার জায়গা করে নিয়েছে জাতীয় দলে। এর মধ্যে নতুন করে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল দল থেকে দু’জন ফুটবলার প্রথমবার ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। তা বাদে বাকী সব দল গুলোর মধ্যে মাত্র একজন ফুটবল ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন। জায়গা করে নিয়েছেন ৩৬ সদস্যের ফুটবল দলে। তিনি হলেন সুমন রেজা। উত্তর বারিধারার এই অধিনায়ক জেমির নজরে এসেছেন ফেডারেশন কাপ ও লিগের পারফরম্যান্স দিয়ে। আলফাজ আহমেদের ডেরায় আন্ডারডগ উত্তর বারিধারা দলের এই অধিনায়ক নিয়মিতভাবে দলের একাদশে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। দলের পারফরম্যান্সেও ভূমিকা রাখছেন আক্রমণভাগের এই ফুটবলার। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে বারিধারাকে রানার্স আপ করার পেছনে এই ফুটবলারের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। পরে প্রিমিয়ার লিগে সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে সুমন। জায়গা করে নিয়েছেন জেমির বহরে।

এখন দেখার বিষয় এই চারজনের মধ্যে কে কে জায়গা করে নেন বিশ্বকাপ বাছাই মিশনের মূল দলে।

সারাবাংলা/জেএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন