বিজ্ঞাপন

শাহজালালে ভুয়া সনদ, শাস্তির মুখে পড়তে পারেন শাজাহান খানের মেয়ে

July 26, 2020 | 10:58 pm

স্টাফ করেসপন্টেন্ড

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পজিটিভ হলেও বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন সাবেক নৌপরিবহন বিষয়ক মন্ত্রী শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খান। এ জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা নেগেটিভ হিসেবে ভুয়া সনদ দেখিয়েছেন তিনি। সনদটি ভুয়া শনাক্ত হয় আর লন্ডনযাত্রা করতে পারেননি ঐশী। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ভুয়া সনদ দেখার কারণে শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন ঐশী।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৬ জুলাই) সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে বলে বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, সকালে বাংলাদেশ বিমানের বিজি০০১ ফ্লাইটটিতে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিলো ঐশী খানের। তিনি ভিআইপি কাউন্টার দিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তার করোনা সার্টিফিকেট দেখতে চান। এসময় তিনি করোনা নেগেটিভ সনদ দেখান। পরে ইমিগ্রেশন কর্মকতা‍র্রা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সার্ভারে পরীক্ষা করলে দেখতে পান, তিনি কোভিড পজিটিভ। এসময় ঐশী খানকে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য ডেস্কে পাঠানো হলে সেখানে তিনি করোনা পজিটিভ সনদ দেখান। ফলে তাকে নির্ধারিত ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হয়নি।

বিমানবন্দর সূত্র বলছে, ঐশী খান ইমিগ্রেশনকে দেখিয়েছেন নেগেটিভ সার্টিফিকেট, কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মকতা‍র্দের দেখিয়েছেন পজিটিভ সার্টিফিকেট। অর্থাৎ তিনি হয়তো দু’টি সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ সারাবাংলাকে বলেন, সকালে ঐশী খান নামে একজন যাত্রীর লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পজিটিভ সার্টিফিকেট থাকার তাকে লন্ডন যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তিনি বারবার অনুরোধ করছিলেন যাওয়ার জন্য। তবে আমরা জানিয়ে দিই, করোনা পজিটিভ হলে কাউকে যেতে দেওয়া সুযোগ নেই। পরে তিনি চলে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোকাব্বির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, একজন নারী যাত্রীর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে আমাদের কাজ বিমান পরিচালনা করা এবং টিকিট বিক্রি করা। বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যের বিষয়টি পুরোপুরি দেখে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তাদের সিদ্ধান্তই এখানে চূড়ান্ত। এছাড়া ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তাদের কাজ শেষ করলে এয়ারলাইন্স যাত্রীদের বোর্ডিং পাস দিয়ে থাকে। এখানে বিমানের কিছু করার নেই।

এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল- আহসান সারাবাংলাকে বলেন, সকালে একজন যাত্রী করোনা পজিটিভ হয়েও মিথ্যা তথ্য দিয়ে লন্ডনে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। নারী যাত্রী ছিলেন তিনি। করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও তিনি কেন বিমানবন্দরে আসবেন? তার তো বিমানবন্দরে আসারই কথা না। তিনি আমাদের কর্মকতা‍র্দেরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। তবে যাত্রীকে লন্ডনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে আমরা অবশ্যই দেখব এবং কী ঘটেছিল আর কী হয়েছিল— সবকিছু খতিয়ে দেখব।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ওই যাত্রী যেটা করেছেন, সেটা অন্যায়। বিমানবন্দরে ম্যাজিস্ট্রেট আছে, পুলিশ আছে। ইমগ্রেশন থেকে বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর তারা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি, যা ভুল হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করলে যাত্রীর বিরুদ্ধে অবশ্যই তখন ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা না নেওয়া গেলেও পরবর্তী সময়ে ভুয়া সনদ উপস্থাপনের জন্য ঐশী খানকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, করোনা পজিটিভ হয়েও কেন একজন যাত্রী বিমানবন্দরে আসবে? এটা তো অন্যায়। আমার শত শত কর্মকর্তা বিমানবন্দরে কাজ করেন। তাদের ঝুঁকিতে ফেলাটাও এক ধরনের অপরাধ। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি করব। একইসঙ্গে যারা যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে যেতে দিয়েছেন, তাদেরও ডাকা হবে। সবো‍র্পরি যাত্রী ভুল তথ্য দিলে আইনে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করব এবং ব্যবস্থা নেব।

সারাবাংলা/এসজে/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন