বিজ্ঞাপন

বীর বাহাদুর ও সোনামণি-লক্ষ্মীসোনার কদর নেই শাহজাহানপুর হাটে

July 30, 2020 | 9:02 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বীর বাহাদুর ও সোনামণি-লক্ষ্মীসোনার কদর নেই রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী কোরবানির গরুর হাটে। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) শাহজাহানপুরে কোরবানির হাট চালুর প্রথম দিন থেকেই এই হাটের সবচেয়ে বড় গরু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ‘বীর বাহাদুর’ ও ‘সোনামণি-লক্ষ্মীসোনা’ নামের বিশালাকার দুটি গরু।

বিজ্ঞাপন

গত দুদিন ধরে গরু দুটি দেখতে মানুষ ভীড় করলেও দাম বেশি হওয়ায় কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কোনো ক্রেতা। এই নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন কুষ্টিয়া থেকে আসা বীর বাহাদুদের মালিক মান্নান ব্যাপারি ও সোনামণি-লক্ষ্মীসোনার মালিক মো. মজনু শেখ।

বুধবার (২৯ জুলাই) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী মৈত্রী সংঘের মাঠে বসা কোরবানির গরু হাটে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

এর মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলা থেকে বিশাল আকৃতির বীর বাহাদুর নামের গরুটিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন আবদুল মান্নান ব্যাপারি। তিনি বীর বাহাদুর সম্পর্কে বলেন, ‘বীর বাহাদুরের বয়স সাড়ে তিন বছর। শখ করে একে সন্তানের মতো লালন পালন করেছি। আদর করে বীর বাহাদুর নাম দিয়েছি। একে নিয়মিত গম, খেসারী, ভূট্টা ভাঙার পাশাপাশি ভাত খাওয়ানো হয়।’

বিজ্ঞাপন

গরুটির পিছনে গত তিন বছরে ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে জানিয়ে মান্নান ব্যাপারি বলেন, ‘এটি ওরিজিনাল দেশি সিদ্ধী জাতের গরু। আমার নিজের গাভি থেকে বীর বাহাদুরের জন্ম। বীর বাহাদুরের মা প্রতিদিন ১৭-১৮ কেজি দুধ দেয়।’

মান্নান ব্যাপারি আরও বলেন, ‘শখ করে পালা এই বীর বাহাদুরকে ঢাকায় এনে আমি হতাশ। কারণ কোনো ক্রেতা পাচ্ছি না। গরুটি কেনার কোনো লোক আল্লাহ মিলাবে কি না বলতে পারছি না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘২০ মণ ওজনের গরুটি আমি ৮ লাখ টাকা বিক্রি করার জন্য দাম চাচ্ছি। তবে ৬ লাখ টাকা হলেও বিক্রি করবো। কিন্তু আড়াই লাখ টাকার বেশি এখনো কেউ দাম বলছে না। মাঝে মাঝে দুএকজন ক্রেতা গরুটির দাম জিজ্ঞাসা করলেও ৮ লাখ টাকার কথা শুনে তারা কোন দাম না বলেই চলে যাচ্ছেন।’

অন্যদিকে, সোনামণি-লক্ষ্মীসোনার মালিক মো. মজনু শেখ। তিনিও কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলা থেকে গরুটি শাহজাহানপুর কোবানির হাটে নিয়ে আসেন। তিনি, চার বছর বয়সী, সোনামণি-লক্ষ্মীসোনার দাম চাচ্ছেন ৭ লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। ৫ লাখ টাকার কম হলে বিক্রি করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী কোবানির হাটে প্রচুর গরু উঠলেও সে তুলনায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। অধিকাংশ ক্রেতা এসে গরুর দাম জিজ্ঞাসা করলেও নিজেরা কোনো দাম বলছেন না। ফলে গত দুদিনে গরু বিক্রির পরিমাণ খুবই কম বলে জানিয়েছেন আয়োজক ও গরু ব্যাপারিরা। তাদের অভিমত রাজধানীতে সাধারণ ঈদের আগের দুদিনে মোট গরুর ৮০ শতাংশ বিক্রি হয়। ফলে এখনো তারা হতাশ না।

বিজ্ঞাপন

গত দুদিনে ৩ শ’টির মতো গরু বিক্রি হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘এক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা দামের গরুর চাহিদা বেশি। ক্রেতারা সাধারণত ১ লাখ টাকার নিচের দামে গরু কিনতে বেশি অগ্রহী।’

এ ব্যাপারে শাহজাহানপুর কোবানির হাটের হাসিলের টাকা আদায়কারী মো. আবদুল মালেক বলেন, ‘আমাদের বাজারে পরিবেশ বেশ ভালো। ফলে সারাদেশ থেকেই প্রচুর গরু আসছে। বর্তমানে বাজারে সাত থেকে আট হাজার গরু রয়েছে। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে এখন পর্যন্ত আমার কাউন্টারে ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা দামের একটি গরুর হাসিল নিয়েছি। হাসিলের রেট সম্পর্কে তিনি জানান এটা সিটি করপোরেশন থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, হাজারে ৫০ টাকা।’

অন্যদিকে, জামালপুর থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যাপারি মো. আনিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি ১৫টি গরু নিয়ে এই হাটে আসছি গত দুদিনে তিনটি গরু বিক্রি করেছি। এর মধ্যে এখন একটা গরু বিক্রি করেছি ৭৩ হাজার টাকা। কিন্তু এই গরুটি আমার কেনা ছিল এক বছর আগে ৫০ হাজার টাকায়। ফলে আমার কোনো লাভ হয়নি। ভাবছিলাম ৮৫-৯০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় গরুর চাহিদা নেই।’

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন