বিজ্ঞাপন

টিকটকে ‘প্রযুক্তি জাতীয়তাবাদ’

August 4, 2020 | 9:26 pm

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

সম্প্রতি চীনা ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ নিয়ে আবারও চীন-মার্কিন বিবাদ শুরু হয়েছে। বেইজিং-ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি কোম্পানির মালিকানাধীন টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফটের কাছে বিক্রির জন্য কথাবার্তা চলছে এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পরপরই চীনের সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ব্যবহারকারীরা। কেউ কেউ টিকটকের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে ‘দেশদ্রোহী’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এমন পরিস্থিতিতে চীনাদের ক্ষোভের অনলে আরও ঘি ঢেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  তিনি বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকটকের মার্কিন ইউনিটের মালিকানা হয় কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানের হাতে যাবে, নতুবা তার দেশে টিকটক বন্ধ করে দিতে হবে।  ট্রাম্পের এমন বার্তার পর টিকটকের কেনাবেচা আর শুধু দুই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার বিষয় হয়েই রইলো না বরং তা বিশ্বের দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্রের কুটনৈতিক বিবাদের নতুন এক বিষয় হয়ে দাঁড়ালো।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলি তাদের এক সম্পাদকীয়তে বলেছে, একটি প্রযুক্তি কোম্পানির চুরি হয়ে যাওয়ার এমন ঘটনা চীন কখনই মেনে নেবে না। যদি তাই হয় তবে এর জবাব দেওয়ার জন্য বহু উপায় চীনের হাতে আছে।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়ান ওয়েনবিনও কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে বলেন, ওয়াশিংটনের তরফ থেকে এটি একটি সরাসরি হুমকি। আমরা দৃঢ়ভাবে এর প্রতিবাদ জানাই।

বিজ্ঞাপন

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের কাছে টিকটকের মার্কিন ইউনিট বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে এমন ঘোষণার পর থেকেই ইন্টারনেটে চীনা টিকটক ব্যবহারকারীরা মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে একহাত নিচ্ছেন।  চীনে টুইটারের মতোই সামাজিক মাধ্যম উইবোতে এক ব্যবহারকারী লেখেন, এটি বিক্রি করে দেওয়ার চাইতে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ করে দেওয়াই ভালো। টিকটক বিক্রি করা আর দেশের সঙ্গে প্রতারণা করা একই কথা।

আরেক টিকটক ব্যবহারকারী বাইটড্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা জেং ইয়ামিংয়ের কড়া সমালোচনা করে লেখেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছেন। যখনই টিকটক বিক্রি হবে তখনই আমি বাইটড্যান্সের সব ধরণের পণ্য বয়কট করবো।

ব্যবহারকারীদের এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে বাইটড্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা জেং তার ব্যক্তিগত উইবো একাউন্টে সকল পোস্ট হাইড করে রেখেছেন। কেননা সেখানেও তার বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করছেন বিক্ষুব্ধ টিকটক ব্যবহারকারীরা। টিকটক নিয়ে চীনাদের এমন প্রতিক্রিয়াকে ‘টেকনো ন্যাশনালিজম’ বা ‘প্রযুক্তি জাতীয়তাবাদ’ বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, চীনের বাইরে ভারতের পরেই যুক্তরাষ্ট্র হলো টিকটকের সবচেয়ে বড় বাজার। সম্প্রতি ভারতেও টিকটক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ার পরিণতি থেকে বাঁচতেই সেদেশের জায়ান্ট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের কাছে স্ট্রিমিং অ্যাপটির শেয়ার বিক্রির জন্য উঠেপড়ে লেগেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স। এরইমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক মন্তব্যে টিকটক বিক্রির ঘটনাটি বিশ্ব রাজনীতিতে নজর কাড়লো।

এদিকে টিকটকের মার্কিন অপারেশন বিক্রি না করার জন্য চীন সরকার ও ব্যবহারকারীদের তরফ থেকে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে তাতে শেষ পর্যন্ত বাইটড্যান্স অ্যাপটি বিক্রি করতে পারবে কি না সে ব্যাপারেও সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদি তাই হয়- তবে ভারতের পর যুক্তরাষ্ট্রেও বন্ধ হয়ে যেতে পারে টিকটক। আপাতত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় হাতে আছে বাইটড্যান্সের হাতে।

সারাবাংলা/আইই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন