বিজ্ঞাপন

দুটি ফ্ল্যাট-গাড়ি-বিদেশ ভ্রমণ, জেরায় কিছুই ‘মনে পড়ছে না’ রিয়ার

August 8, 2020 | 1:03 pm

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক

বিগত কয়েকদিন যাবত লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে শুক্রবার (৭ আগস্ট) জনসমক্ষে আসেন সুশান্তের প্রাক্তন প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী। সুশান্তের ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রিয়া চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার সকাল ১১টার মধ্যে ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) দফতরে হাজির থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ পিছনোর আবেদন জানিয়েছিলেন রিয়া চক্রবর্তী। কিন্তু সে আবেদন নাকচ করে দিয়ে ইডি অফিস থেকে জানান হয়, রিয়া যদি ইডি অফিসে হাজির না হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে হাজিরা দিতে অসমর্থ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হবে। তাই একপ্রকার নিরুপায় হয়ে ভাই সৌহিক চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে এই দিন ইডির দপ্তরে হাজির হন রিয়ে।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সুত্রে জানা যায়, ইডি অফিসে প্রায় সাড়ে ৮ঘণ্টা জেরা করা হয় রিয়াকে। আর সেই জেরাতে জানতে চাওয়া হয়েছে রিয়ার সম্পত্তি আর টাকাপয়সা খরচের হিসাব। ২০১৮ এবং ১৯ সালে মাত্র ১৪ লাখ টাকা রোজগার করেছিলেন রিয়া। কিন্তু খরচ করেছেন ৬৫ লাখ টাকা। এত টাকা কোথায় পেলেন রিয়া! জানতে চেয়েছেন ইডি।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন রিয়া চক্রবর্তী। যার একটির মুল্য ৮৫ লাখ টাকা এবং আরেকটি ৬০ লক্ষ টাকা। অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট কেনার টাকা কোথায় পেলেন রিয়া? প্রশ্ন উঠছে সেখানেও। এদিকে সুশান্তের বাবা আগেই অভিযোগ করেছিলেন, সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন রিয়া। অন্য দিকে, গতবছর রিয়ার অ্যাকাউন্টে ছিল ১০ লাখ টাকা। সেখান থেকে সেই নগদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ লাখে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশান্তের মোট চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। তার মধ্যে দু’টি থেকে বড় অঙ্কের টাকা গিয়েছিল রিয়ার অ্যাকাউন্টে। মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় যে বাড়ি দু’টি কিনেছিলেন রিয়া, তার কাগজপত্রও দেখতে চেয়েছে ইডি। জানা যায়, জেরায় সকল প্রশ্নের উত্তরে শুধু একটি কথা বলেছেন রিয়া, ‘ঠিক মনে করতে পারছি না, কী হয়েছিল।’ ফ্ল্যাটের দলিলের বিষয়ে জানিয়েছেন, তিনি ভুলে গিয়েছেন কোথায় ফ্ল্যাট-বাড়ির কাগজপত্র রেখেছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে সুশান্তের বাড়ির পরিচারক, ম্যানেজার, ড্রাইভার, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সকলেই জানিয়েছেন, সুশান্তকে সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিলেন রিয়া। সমস্ত খরচ করতেন সুশান্তের ক্রেডিট কার্ডে। শপিং থেকে শুরু করে বিদেশ ভ্রমণ— সবটাই হত সুশান্তের টাকায়। এমন কি সুশান্তকে বান্দ্রার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে নিয়ে আসা, পরিবারের সমস্ত খরচ চালানো, বিলাসবহুল গাড়ি কেনা— সবটাই নাকি সুশান্তের কাছ থেকে আদায় করেছিলেন রিয়া। এছাড়াও সুশান্ত যে দুটো কোম্পানি খুলেছিলেন তার অংশীদার ছিলেন সুশান্ত, রিয়া এবং রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী। তবে কোম্পানি খোলার সময় যে বিনিয়োগ করতে হয় তার পুরোটাই করেছিলেন সুশান্ত একাই। তবে কোম্পানিতে অর্থের লেনদেন হত রিয়ার হাত দিয়েই। আর সেই অর্থ যে কোম্পানির খাতেই খরচ হয়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে ইডি কর্মকর্তারা।

শুক্রবার ইডি অফিসে রিয়া চক্রবর্তীর পাশাপাশি জেরা করা হয় রিয়ার ভাই সৌহিক চক্রবর্তী, সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রাক্তন বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদি এবং রিয়ার অ্যাকাউন্টেন্ট রীতেশ শাহকেও। তবে প্রত্যেকের জিজ্ঞাসাবাদই আলাদা আলাদা ঘরে হয়েছে। সূত্রের খবর, রিয়াকে আগামী সপ্তাহে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কর্মকর্তারা। এদিকে সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থকে আজ ইডি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সুশান্ত সিং রাজপুতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন রিয়া চক্রবর্তী, এই অভিযোগ জানিয়ে সম্প্রতি পাটনার রাজীব নগর থানায় এফআইআর দায়ের করেছিলেন সুশান্তের বাবা কে কে সিং। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে নেমে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনের জন্য আর্থিক কারচুপির অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি। এই বিষয়ে বিহার পুলিশের থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। ইডির সেই নির্দেশের পরই বিহার পুলিশের একটি দল কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংকের বান্দ্রা শাখায় গিয়ে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে। সেখানেই বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর পাওয়া যায়, যেগুলির সঙ্গে সুশান্তের কোনওরকম সংযোগ ছিল না বলেই দাবি করেছেন তার বাবা কে কে সিং। তারপরই লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তার প্রেক্ষিতেই এবার ইডির অফিসে কড়া জেরার মুখে রিয়া চক্রবর্তী এবং তার ভাই সৌহিক।

সারাবাংলা/এএসজি

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন