বিজ্ঞাপন

রাজধানী থেকে ঝুলন্ত তার অপসারণ; দীর্ঘ মেয়াদে ভোগান্তির আশঙ্কা

August 9, 2020 | 4:47 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানী থেকে ঝুলন্ত তার অপসারণ শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। রোববার (৯ আগস্ট) রাজধানীর আনন্দবাজার থেকে বঙ্গবাজার পর্যন্ত সড়কের পাশে থাকা ঝুলন্ত তার অপসারণ করা হয়। ঝুলন্ত তারের মধ্যে ইন্টারনেট ও ডিস লাইন রয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, এগুলো অপসারণের ফলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাসায় টিভি দেখা ও ইন্টারনেট চালানো বন্ধ হয়ে গেল। বিকল্প ব্যবস্থা না রেখেই তার অপসারণ করাকে গ্রাহকদের বিপদের ফেলার পাঁয়তারা দেখছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার অপসারণ অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা শহরে ঝুলন্ত তার থাকবে না এটি মেনেই অভিযান চালানো হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকবে। এর পরিবর্তে মাটির নিচ দিয়ে ক্যাবল অপারেটররা সংযোগ নিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে অপারেটর কোম্পানিগুলো সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগযোগ করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘এ বিষয়ে নোটিশ দিয়ে কোনো লাভ নেই। ঝুলন্ত তার অপসারণ করা হবে এটি অনেক দিন ধরে সবারই জানা। কিন্তু কেউ বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যার কারণে গ্রাহকদের সাময়িক সমস্যায় পড়তে হবে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যাবল অপারেটররা যত তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করবেন তত তাড়াতাড়ি গ্রাহকদের সমস্যা সমাধান হবে।’

বিজ্ঞাপন

অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন ক্যাবল অপারেটর উপস্থিত ছিলেন। তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ঢাকা শহরে মাটির নিচ দিয়ে দুজন শিল্পপতি অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপন করেছেন। ঝুলন্ত তারের পরিবর্তে সেই লাইন থেকে সংযোগ নেওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। সংযোগ ফি নাগালের বাইরে হওয়ায় কোনো ক্যাবল অপারেটর কোম্পানি সেই সংযোগ গ্রহণ করেননি। সংযোগ দিতে না পেরে এখন সিটি করপোরেশনকে দিয়ে ঝুলন্ত তার অপসারণ করা হচ্ছে।’ এটি ভালো দিক তবে ন্যায়সঙ্গত একটি দাম নির্ধারণ করে দ্রুত সংযোগ স্থাপনের দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘মাটির নিচ দিয়ে স্থাপন করা লাইন থেকে সংযোগ নিলেও তো তার ঝুলে থাকবে। আমরা জেনেছি, তখন ঝুলে থাকলেও কোনো সমস্যা হবে না।’

অভিযান চালানোর সময় অনেক গ্রাহকও উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন জয়নাল আবেদীন। তিনি থাকেন আনন্দবাজার এলাকায়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘তার কাটার ফলে বাসার ডিস সংযোগ নেই আজ থেকে। করোনায় বাসার ছেলে-মেয়েরা বাসার বাইরে বের হতে পারে না। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। বাসায় থাকত, টিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ধেকে সময় কাটত। কেউ কেউ অনলাইনে ক্লাস করত। এখন সবই বন্ধ। কবে নাগাদ সংযোগ দেবে সে উত্তর কেউ দিতে পারছে না।’

বিজ্ঞাপন

আরিফুল ইসলাম নামে আরেক গ্রাহক বলেন, ‘কতদিন লাগবে নতুন সংযোগ পেতে তা কেউ বলতে পারছে না। এই সমস্যা দীর্ঘদিন থাকতে পারে।’

বঙ্গ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার মোবাইলে খরচের ওপর ভ্যাট বাড়িয়েছে। আগের চেয়ে মোবাইলে ইন্টারনেট ও কথা বলায় খরচ বেড়েছে। ব্রড ব্রান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে চালাতে হয়। সেই তার অপসারণ করার ফলে চাহিদা মতো ইন্টারনেট পাওয়া সম্ভব হবে না। অন্যদিকে মোবাইলে চালালেও অনেক ব্যয় হবে। যা করোনাকালে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি।

অন্যদিকে ঝুলন্ত তার অপসারণের পাশাপাশি ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনাও গুড়িয়ে দিচ্ছে সিটি করপোরেশন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান অপসারণ একটি নিয়মিত অভিযানের অংশ। অভিযান চালানো শেষে বেশ কিছু দিন পর আবার অবৈধ দোকান পাট বসে। আগে তদারকির দুর্বলতা থাকলেও এখন প্রত্যেক ওয়ার্ডে একজন করে লোক তদারকি করবেন। ফলে নজরদারি বৃদ্ধি পাবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন