বিজ্ঞাপন

পুলিশ কর্মকর্তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার হুমকির অভিযোগ

August 11, 2020 | 6:32 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নারী নির্যাতন মামলায় জামিন পেয়ে বাদীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগটি এনেছেন ওই তরুণের শ্বশুর।  তার দাবি, ভাই পুলিশ কর্মকর্তা বলে তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। অভিযুক্ত মো. রাসেল ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফ উদ্দিন ফারুকের ছোট ভাই। তার দাবি, নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে তার নামে। গত জুন মাসে তার স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, বাদী মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার মেয়ের সঙ্গে দুই বছর আগে বিয়ে হয়েছিল রাসেলের। তবে রাসেল নেশাগ্রস্ত এবং স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ মোশারফের। অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন বলে জানান তিনি। তবে অভিযুক্ত রাসেলের দাবি, স্ত্রীর চাহিদা অনেক বেশি থাকায় তা পূরণ করতে পারেননি বলেই ডিভোর্স দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, বিয়ের অনেক পরে বুঝতে পেরেছি, ছেলে নেশাগ্রস্ত। পাশাপাশি যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে সে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। বিয়ের পরে ছেলেকে ছয় লাখ টাকা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলাম। পরে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। টাকা না পেলে মেয়েকে ডিভোর্স দেবে বলেও হুমকি দেয়।

মোশাররফ আরও বলেন, টাকা না পেয়ে সবশেষ গত ২৮ জুন আমার মেয়েকে সারারাত প্রচণ্ড মারধর করে। পরে আমাকে খবর দেয়, মেয়ের করোনাভাইরাস হয়েছে। আমি যেন মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে রাসেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত ৪ জুলাই টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ছেলের বড় ভাই ধানমন্ডি থানার পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় টঙ্গি থানা পুলিশ এখন আসামি ধরছে না। তদন্ত কর্মকর্তা বারবার আমার মেয়েকে বলেন, আপনি বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলেন। তিনি আমাকে আর মেয়েকে মামলা তদন্তের কথা বলে থানায় ডেকে নিয়ে সারাদিন বসিয়ে রাখেন। আর রাসেল সবাইকে বলছে, তার ভাই পুলিশ বলে তাকে কেউ গ্রেফতার করতে পারবে না। উল্টো আমাদেরকেই পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ধরে নিয়ে যাবে। এভাবে সে মিথ্যা মামলায় আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা পরিবারের সদস্যরা সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি গতকাল সোমবার (১০ আগস্ট) লিখিতভাবে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি কমিশনার) বরাবর।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. রাসেল সারাবাংলাকে বলেন, আমি নেশাজাতীয় কোনো কিছু কখনো স্পর্শ করি। ইসলামের পথে চলি। তাই স্ত্রীকে মারধরেরও প্রশ্নই আসে না। ছোটবেলা থেকেই আমার কিছুটা মানসিক সমস্যা থাকায় আমাকে পরিবার অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছে। আমি রক্ত দেখতে পারি না মাথা ঘুরে পড়ে যাই। খেলতে গেলে হোঁচট খেলে অজ্ঞান হয়ে যাই। ফলে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, সব মিথ্যা ও বানোয়াট।

বিজ্ঞাপন

রাসেল আরও বলেন, আমার স্ত্রীর অনেক চাহিদা থাকায় সেগুলো আমার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হয়নি। তাই আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনিও।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেলের বড় ভাই ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফ উদ্দিন ফারুক বলেন, বনিবনা না হওয়ায় আমার ভাইয়ের সঙ্গে তার স্ত্রীর ডিভোর্স হয়েছে গত ২ জুন। আমরা কারও কাছে কখনো কোনো ধরনের যৌতুক চাইনি। ডিভোর্সের পর তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনিভাবেই ঘটনাটির সমাধান করতে চাই।

জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টঙ্গী পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কায়সার হোসেন বলেন, মামলা হওয়ার পর আসামিকে পুলিশ খুঁজে পায়নি। এখন তিনি জামিনে রয়েছেন। পুরো ঘটনাটি পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন