বিজ্ঞাপন

প্রজন্মের আর্কাইভে জাতির পিতার বাংলাদেশ

August 12, 2020 | 11:36 am

ফকির ইলিয়াস

বিজ্ঞাপন

একটা শ্রেণী এখনও চায়, বাংলাদেশ থেকে জাতির পিতার নাম মুছে যাক। এরা কারা? সে কথা আমরা সবাই জানি। এরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পেছনে ছুরি বসাতে চাইছে। প্রথমটি হচ্ছে, সরাসরি ১৯৭১ সালে তার নেতৃত্ব ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অস্বীকার করে। ঘায়েল করে, রাজাকারীয় কায়দায়। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও তার সরকারে ঢুকে চুরি, দুর্নীতি, খুন, রাহাজানি করে। প্রথম শ্রেণীটি নিয়ে আমরা বেশ কথা বলেছি। আমরা ওদের চিনি। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ওই মোহাম্মদ সাহেদ শ্রেণী। যারা ডুবাতে চাইছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ।

জাতির জনক ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন একটি শোষণহীন সমাজ। যে সমাজে বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। হ্যাঁ, এই ২০২০ সালে বাংলাদেশ সেই চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে একাত্তরের চেতনাকে বুকে ধারণ করে। করোনা মহামারী আজ বিষিয়ে তুলেছে গোটা বিশ্ব। থমকে গেছে বাংলাদেশও।

পনেরোই আগস্টের সেই কালরাতে যারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল, তারা চেয়েছিল বাঙালির ইতিহাস পাল্টে দিতে। তারা চেয়েছিল ভেঙে দিতে একটি উন্নয়নশীল জাতির মেরুদণ্ড। আজ প্রায় পাঁচ দশক পর সে প্রশ্নটিই আসে বারবার, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা কতটা সফল হয়েছে। হ্যাঁ, তারা বাংলাদেশের কাঠামো ভেঙে দিতে চেয়েছিল। হয়তো আরো জঘন্য রূপ নিলে বাংলাদেশ বর্তমান পাকিস্তানের মতো রূপ নিতো। তা নেয়নি।

বিজ্ঞাপন

কোনো লাল মসজিদ ট্র্যাজেডি যদিও বাংলাদেশে সংঘটিত হয়নি তবুও ১৭ আগস্টের বোমা হামলার মতো মারাত্মক কাজ তারা করতে পেরেছে বাংলাদেশে। দেশব্যাপী একযোগে বোমা হামলার মাধ্যমে। আদালত প্রাঙ্গণে বিচারক হত্যার মাধ্যমে। বাংলা ভাই, শায়খ রহমান, মুফতি হান্নান, মওলানা মহিউদ্দিন তৈরির মাধ্যমে।

বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে যে পরিবর্তনটি ষড়যন্ত্রকারীরা করতে পেরেছিল, তা কি ঠেকানো যেত না? আমার বারবার কেন যেন মনে হয় তা ঠেকানোর পথ প্রশস্ত ছিল। কিন্তু যারা সেদিন সশস্ত্র ক্ষমতাবান ছিলেন তারা ‘রিস্ক’ নিতে চাননি। কেন ‘রিস্ক’ নিলেন না, সে প্রশ্নটি আমি আজও করি। বঙ্গবন্ধু যখন আক্রান্ত হন, তখন দেশে একটি সুসংগঠিত সশস্ত্র বাহিনী বহাল ছিল। সেনা, নৌ, বিমান; তিনটি বাহিনীই ছিল জাগ্রত। যারা এই হীন অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিল; এরা ছিল বিপথগামী কিছু সেনা সদস্য। প্রশ্নটি হচ্ছে এই যে, সপরিবারে শেখ মুজিবকে হত্যার পরেও সেনাবাহিনী কেন তাৎক্ষণিক ওই কতিপয় চক্রান্তকারী সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অবস্থান নিলো না? কেন সেদিনের সেনাবাহিনী প্রধান কে এম শফিউল্লাহ তার বাহিনী নিয়ে জাতির পক্ষে, ষড়যন্ত্রকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন না? যদি তেমনটি হতো তাহলে হয়তো আরো কিছু রক্তপাত হতো। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা পরাজিত হতো। জাতির জনক বেঁচে না থাকলেও তার ঘনিষ্ঠ অনুসারী তাজউদ্দীন, মনসুর আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, সামাদ আজাদসহ অন্য নেতারা সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা পেতেন। খন্দকার মোশতাকের মতো নর্দমার কীটদের রাষ্ট্রক্ষমতা পাওয়ার স্বপ্ন ভণ্ডুল হয়ে যেত। কে এম শফিউল্লাহ তা নিয়ে অনেকভাবেই জবাব দিয়েছেন। তিনি যে জবাবই দেন না কেন, তিনি যে ভুলটি করেছিলেন তার মাসুল গোটা জাতিকে দিতে হচ্ছে আজও তিলে তিলে। জাতির এতই দুর্ভাগ্য, আজ উনপঞ্চাশ বছর পরও ঘাতকদের প্রেতাত্মা ধাওয়া করছে গোটা জাতিকে। আশার কথা, বাংলাদেশে জাতির জনকের খুনিদের একাংশের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এখনো খুনিদের একটি অংশ বিদেশে পালিয়ে আছে। এদের শাস্তির মুখোমুখি করা খুবই জরুরি কাজ। ইতিহাসের দায় মেটাতেই এই অসমাপ্ত কাজটি করতে হবে বাংলাদেশকে।

খুনি রাশেদ চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রের ফাইল নতুন করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তা নিয়ে সবার সোচ্চার হওয়া দরকার। এ জন্য সরকারকে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। বিশ্বের কোনো দেশে, কোনো ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের বিচারকর্ম বন্ধ কিংবা তা নিয়ে গড়িমসির ঘটনা বোধহয় আর নেই। বাংলাদেশের যিনি স্থপতি, যিনি একটি রাষ্ট্রের জন্ম দেয়ার জন্য জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম করেছেন, তার হত্যাকাণ্ডের বিচারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাষ্ট্রীয় আইন। তথাকথিত ইনডেমনিটি বিলের নামে হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়েছে। জাতীয় শোক দিবস পালনের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। একজন মহান নেতার প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধাবোধটুকু থাকলে কোনো দল বা নেতা তা করতে পারে? বিষয়গুলো এ জন্য তুলছি যে, এসব কথা এই প্রজন্মের জানা দরকার।

বিজ্ঞাপন

১৫ আগস্ট এলেই আমার সামরিক জান্তাদের কথা মনে পড়ে। এসব তো আমাদের নিজ চোখে দেখা। বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতির চেয়ে জঘন্য হীনমন্যতা বোধহয় আর কিছু নেই। এসব করার পেছনে প্রকারান্তরে একটি কারণ ছিল। আর তা হলো, ঘাতকচক্রকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা। সে আশায় আজ যে গুড়েবালি পড়েছে, তা হচ্ছে তাদেরই কৃতকর্মের ফলে।

বিএনপি-জামায়াত জোটের চেহারা দেশের মানুষের এখন আর অপরিচিত নয়। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকতে বঙ্গবন্ধুকে যতটা অবমূল্যায়ন করতে চাননি, খালেদা জিয়া এবং তার শাসনামলে তা করা হয়েছে বহুগুণে। শেখ মুজিবের সমান্তরালে অন্য কোনো নেতা দাঁড়াবেন কিনা তা মহাকালই বলবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, শেখ মুজিবের জীবদ্দশায় এবং তারও অগ্রজ বেশ কজন নেতা পাকিস্তান থেকে বের হয়ে এসে নতুন রাষ্ট্র গঠনের নেতৃত্বটি দিতে পারেননি। আর পারেননি বলেই শেখ মুজিবকে এগিয়ে আসতে হয়েছিল এবং তিনি সফলও হয়েছিলেন। আর সে জন্যই তিনি হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

আজ যারা শেখ মুজিবের পাশাপাশি ‘জাতীয় নেতা’র সনদ লাগিয়ে অন্যদের ছবি রাখার কথা বলেন তারা আদৌ বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রটির অভ্যুদয় চেয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ হয়। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাতারবন্দি করার জন্য নামের তালিকা শুধু বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাই বলে কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুছে ফেলা যাবে? না, যাবে না। একটি বিষয় চরম ক্রান্তিকালেও প্রমাণিত হয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর চেতনা লালন করেন তারা ভোগবাদী নন। আজকের প্রধানমন্ত্রী কিংবা তার সহদোরা শেখ রেহানা যদি ভোগবাদীই হতেন, তবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের তাদের একমাত্র বাড়িটি ট্রাস্টে দিয়ে দিতেন না।

বাংলাদেশে শেখ মুজিবের বজ্রকণ্ঠের যে অমিত তেজ তা ঢেকে দেয়ার প্রচেষ্টা ১৯৭৫ সালে করা হয়েছে। এখনো হচ্ছে। বোমা মেরে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের হত্যা করার ষড়যন্ত্রে যে জঘন্যতম হামলা করা হয়েছিল, তা ছিল সেই ধারাবাহিকতায়। এরও বিচার বাংলার মাটিতে এখন পর্যন্ত হয়নি। এই শোক বহন করেই চলেছে বাংলার মাটি, বাংলার নদী-নালা।

বিজ্ঞাপন

বাঙালির ইতিহাসের উজ্জ্বল আলো ছিলেন শেখ মুজিব। পঞ্চাশের দশক ছিল তাঁর রাজনৈতিক উত্থানের কাল। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন দূরদর্শিতা এবং প্রজ্ঞাসম্পন্ন এক কুশলী রাজনৈতিক নেতা। এ সময় শেখ মুজিব মুসলিম লীগ ছেড়ে দেন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মওলানা ভাসানীর সঙ্গে মিলে গঠন করেন আওয়ামী মুসলিম লীগ। তিনি দলের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে যুক্তফ্রন্ট সরকারের কৃষিমন্ত্রী হন মুজিব। ১৯৫৬ সালে কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রিসভায় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি।

১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত এবং ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এই ছয় দফা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের রূপরেখা। মুজিবের ৬ দফার প্রতি জনগণের ব্যাপক সমর্থনে ভীত হয়ে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার করে শেখ মুজিবকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বাংলার সমস্ত জনগণ। জনরোষের কাছে নতি স্বীকার করে একপর্যায়ে তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় শোষকগোষ্ঠী। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে শেখ মুজিবুর রহমানকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই উত্থাপিত হয় এগারো দফা দাবি যার মধ্যে ছয় দফার সবগুলো দফাই অন্তর্ভুক্ত ছিল। লাখো মানুষের এই জমায়েতে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আয়োজিত এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পূর্ববাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এর সবই সম্ভব হয়েছিল শেখ মুজিবের প্রজ্ঞার কারণে।

আমরা এই প্রত্যয় বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে লক্ষ্য করছি, আগস্টের শোক ও বেদনাকে চিত্তে ধারণ করে তারা সোনার বাংলা গড়তেই এগিয়ে যাচ্ছে। সূর্যের একটি শক্তিশালী বাহুর মতোই মুজিব আবির্ভূত হয়েছিলেন বাঙালি জাতির জন্য। সেই শেখ মুজিব এখন চিরনিদ্রায় শায়িত তার জন্মস্থান সবুজ টুঙ্গিপাড়ায়। তার শয্যাপাশে গিয়ে এই প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা নিজের শৌর্য, শক্তি এবং রক্তস্রোতেরই সন্ধান করছে। কোনো অপশক্তিই এই গতিধারা থামাতে পারবে না। আলোকিত মানুষের জীবনকর্ম আরেকটি জীবনকে আলোকিত করে। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির আলোকবর্তিকা হয়েই থাকবেন চিরদিন।

বিষয়টি ভাবলে খুবই দুঃখ পাই, বাংলাদেশের রাজনীতিক পরিচয়ধারীরাই হীনস্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে শেখ মুজিবের স্বপ্নগুলোকে নস্যাৎ করতে বিভিন্ন সময় নানাভাবে তৎপর হয়েছেন। এসব মতলববাজরাও একদিন আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপিত হবেন আগামী প্রজন্মের হাতেই। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগই হবে বাঙালি প্রজন্মের পাথেয়। আজকের যে উন্নয়ন, তা দেশের মানুষের ঐক্য ও সংহতির ফসল। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া দেশের উন্নয়ন হয় না। বঙ্গবন্ধু সেটাই জানাতে চেয়েছিলেন মানুষকে। প্রজন্ম আজ তা অনুধাবন করছে। এটাই এগিয়ে যাওয়ার সিঁড়ি।

বলে রাখা দরকার, দেশে কি বিদেশে একটি ‘বুদ্ধিবর্বর’ শ্রেণী ভারতের নাম ধরে নানা অজুহাতে জাতির পিতাকে হেয় করার চেষ্টা চালায়। অথচ এরা পাকিস্তানের কাছে যে ১৯৭১ পূর্ব আদি পাওনা লাখ লাখ কোটি রুপি- এর পক্ষে কথা বলে না। কী মতলব তাহলে তাদের? তা আজকের প্রজন্মকে জানতে হবে। অনুধাবন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু খুবই নিঃস্বার্থভাবে একটি রাষ্ট্র এনে দিয়ে গেছেন। এটা অন্য কোনো নেতার সাধ্য ছিল না। আর ছিল না বলেই, উত্তরপ্রজন্ম তাকে খুঁজতেই থাকবে মননে, চিন্তনে- আর্কাইভে, আর্কাইভে।

লেখক: লেখক ও সংবাদকর্মী

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন