বিজ্ঞাপন

‘সেই শাপলাবাগেই বাসা নিয়েছিল নব্য জেএমবি, ছিল হামলার পরিকল্পনা’

August 12, 2020 | 3:27 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, সিলেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির যে পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা সিলেটের শাপলাবাগে একটি বাসা ভাড়া করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলার পরিকল্পনা করছিল। এই শাপলাবাগেই ২০০৫ সালে শায়খ আবদুর রহমান বাসা ভাড়া নিয়ে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার পরিকল্পনা করে এবং হামলা চালায়। সিটিটিসির নজরদারি ও অভিযানে তাদের গ্রেফতারের ফলে হামলার সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতার পাঁচজন হলো- সায়েম মির্জা, রুবেল আহমেদ, সানাউল ইসলাম সাদিক, শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান ও আব্দুর রহিম জুয়েল। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বোমা তৈরি সরঞ্জাম ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটে সিটিটিসির অপারেশন এলিগ্যান্ট বাইট পরিচালনা করে জঙ্গি সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে সারাবিশ্বের জঙ্গিরা ঘোষণা দেয় যে, জিলহজ মাসের ১০ তারিখে হামলা করলে অধিক সওয়াব হবে। এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে বিশ্বব্যাপী জঙ্গিগোষ্ঠী হামলার জন্য প্রস্তুতি নেয়। বাংলাদেশেও আনসার আল ইসলাম ও নব্য জেএমবির সদস্যরা প্রস্তুতি নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য ইন্টিলিজেন্সের তৎপরতার কারণে জঙ্গিরা বড় ধরনের হামলা চালাতে পারেনি। পরে তারা ছোটখাটো হামলার তৎপরতা চালায়।’

বিজ্ঞাপন

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান বলেন, ‘এর মধ্যে গত ২৩ জুলাই সিলেট শাহজালাল (রহ.) মাজারে হামলা চালাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। গোয়েন্দারা ঘিরে রেখেছিল। না পেরে তাদের একটি দল ঢাকায় পুরানা পল্টনে বোমা ফেলে যায়। পরে সেটি বিস্ফোরিত হলেও কোনো হতাহত হয়নি। ২৫ জুলাই গুলিস্তানে একজন ট্রাফিক সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে বোমা রেখে যায়। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর বাইরে ৩১ জুলাই নওগাঁর সাপাহারে একটি মন্দিরে ককটেল নিক্ষেপ করে আতঙ্ক তৈরি করে।’

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘আগস্ট এমনিতেই একটি গুরুত্বপুর্ণ মাস। এমাস এলেই হামলার জন্য উঠে-পড়ে লাগে জঙ্গিরা। এ মাসের ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এ মাসের ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা হয়। ১৭ আগস্টের বোমা হামলা ছিল জঙ্গিদের সবচেয়ে সফল বোমা হামলা। সিলেটে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে এ মাসে হামলার ঝুঁকি কমানো হলো।’

বিজ্ঞাপন

সিলেটে যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় হামলার পরিকল্পনা করে। পল্টনে হামার ঘটনায় একটি মামলা হয়। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে নাইমুজ্জামান হলো নব্য জেএমবির এই সেলের প্রধান নেতা। আর সব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতো সানাউল সাদিক। বাকিরা সবাই নির্দেশনা পালন করতো। এরই মধ্যে তারা সকল হামলার দায় স্বীকার করেছে। নাইমুজ্জামান শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাস্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স করে একটি কফি শপে কাজ করতো। সানাউল সাদিক একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র। রুবেল উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়েছেন। জুয়েল রেন্টে কারের ব্যবসা করে। আর সায়েম মির্জা মদন মোহন কলেজে শেষবর্ষের শিক্ষার্থী। সে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিল।

ঈদুল আজহাকে ঘিরে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কথিত ‘বেঙ্গল উলায়াত’ ঘোষণার উদ্যোগে পুলিশ দেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করেছিল। তখন সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছিল পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন