বিজ্ঞাপন

শিপ্রা-সিফাতের কাছে বৃহস্পতিবার আদ্যোপান্ত জানতে চাইবে র‌্যাব

August 12, 2020 | 9:21 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কক্সবাজারের টেকনাফে ৩১ জুলাই রাতে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার সময়কার ঘটনা সম্পর্কে আদ্যোপান্ত জানতে তদন্ত চালাচ্ছে র‌্যাব। এ জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুই শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ ও সিফাতকে র‍্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরায় র‍্যাব সদর দফতরে মেজর (অব.) সিনহার মৃত্যুর বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয়ে, কোনোরকম চাপ ছাড়া পেশাদারিত্বের সঙ্গে মামলার তদন্ত কাজ করবে র‍্যাব। আমাদের এখন মূল কাজ হচ্ছে এ মামলার মোটিভ উদঘাটন করা। সে জন্য তদন্ত চলছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এ সব থেকে বিরত থাকতে র‍্যাব আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশের আগে সেটির নিরপেক্ষতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা যাছাই সাপেক্ষে যেন প্রচার করা হয়। এরইমধ্যে ভিডিও বার্তাসহ যে সব তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে সেগুলো তদন্তসাপেক্ষে তদন্ত কর্মকর্তা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনার তদন্ত র‍্যাবের কাছে আসার পর সামগ্রিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পুলিশের দায়ের করা মামলার তিনজন সাক্ষী হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের সহায়তা করেছেন বলে আলামত পাওয়া গেছে। এ কারণে গতকাল সে তিনজন মো. নুরুল আমিন, আয়াজ উদ্দিন এবং নিজাম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘র‍্যাব মূলত হত্যাকেন্দ্রিক যে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়টির তদন্ত করছে। অর্থাৎ আনুষঙ্গিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে যেসব তথ্য আসছে এ সব বিষয়ে র‍্যাব ওয়াকিবহাল আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা বিচক্ষণতা বিবেচনায় তিনি প্রথমে সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে আসামিদের রিমান্ডে আনতে চাইছেন। তাই ঘটনার সময় থাকা দুই শিক্ষার্থী শিপ্রা এবং সিফাতের সঙ্গে র‌্যাবের যোগাযোগ হয়েছে। তাদেরকে আগামীকাল যে কোনো সময় প্রয়োজন অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে তারা সবসময় উন্মুক্ত থাকবেন। তাদের জন্য সময় নির্ধারিত নয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর বরখাস্তকৃত ৭ পুলিশ সদস্যদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অর্থাৎ কাল থেকে তাদের রিমান্ডের সময় গণনা শুরু।’

উল্লেখ্য, মেজর (অবঃ) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় পুলিশের করা দুই মামলায় মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সেই তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তারা ৩১ জুলাই ঘটনার আগে পাহাড় থেকে নামার সময় সিনহাকে ডাকাত বলে প্রচার করেছিলেন। গ্রেফতার হওয়া তিনজন হলেন- নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ। তাদের বাড়ি টেকনাফের বাহারছড়া ও মারিশবনিয়া এলাকায়।

বিজ্ঞাপন

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।

৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পরের দিন ৬ আগস্ট বিকেলে ওসি প্রদীপ কুমার, পরিদর্শক লিয়াকত, এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ ৭ পুলিশ কক্সবাজার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে তারা কারাবন্দি রয়েছেন। এই হত্যার ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে র‌্যাব। বর্তমানে জামিনের রয়েছেন পুলিশের মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই শিক্ষার্থী সিফাত-শিপ্রা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন