বিজ্ঞাপন

‘নক্ষত্র’ হয়ে গেলেন পণ্ডিত যশরাজ

August 17, 2020 | 8:45 pm

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক

পৃথিবীর মায়া কাটালেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত জগতের দেদীপ্যমান নক্ষত্র পণ্ডিত যশরাজ। সোমবার (১৭ আগস্ট) আমেরিকার নিউ জার্সিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পদ্ম বিভূষণপ্রাপ্ত এই দিগগ্বজ শিল্পী। কিংবদন্তি এই শিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন পণ্ডিত যশরাজ। ৯০ বছর বয়সে এসে সব সমস্যার ঊর্ধ্বে চলে গেলেন তিনি। এই মহান শিল্পীর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা দুর্গা যশরাজ।

ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে মেওয়াতি ঘরানার গুরু পণ্ডিত যশরাজ সংগীতকেই জীবনের মন্ত্র করে নিয়েছিলেন। তার কথায়, ‘সংগীত সাধনায় চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এসে আমি সুর-লয়েই খুঁজি ঐশ্বরিক মায়াজালকে। কখনো খুব কাছে চলে যাই, কখনো বুঝতেই পারি না অদৃশ্য সেই শক্তি আমাকে কোথায় নিয়ে চলেছে। আমি কী দিয়েছি, কী দিইনি জানি না। মনে হয়, সবই তো তারই (ঈশ্বর) খেলা।’

পদ্ম বিভূষণ, পদ্ম ভূষণ ও পদ্মশ্রীর মতো একাধিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পণ্ডিত যশরাজ ১৯৩০ সালের জানুয়ারি মাসে হরিয়ানার হিসার জেলার পিলি মন্দোরির এক মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রতি অনুরাগ ছিল শৈশব থেকেই। বাবা পণ্ডিত মতিরামের কাছেই প্রথম তালিম। চার বছর বয়সে বাবাকে হারান যশরাজ। তার বড় দাদা পণ্ডিত প্রতাপ নারায়ণও শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী ছিলেন, যিনি কিনা বলিউডের খ্যাতনামা সংগীত পরিচালক জুটি যতীন-ললিতের বাবা।

বিজ্ঞাপন

ছোটবেলার অনেকটা সময় হায়দরাবাদে কাটালেও পরে মেওয়াতি ঘরানার তালিম নিতে যাতায়াত শুরু করেন গুজরাটের সানন্দে। মহারাজ জয়বন্ত সিং বাঘেলার জন্যও একাধিকবার সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি। ১৯৪৬ সালে কলকাতায় চলে আসেন পণ্ডিত যশরাজ। রেডিওতে শাস্ত্রীয় সংগীত গাওয়ার তালিম দিতেন তিনি।

জানা যায়, বেশ কিছু দিন আগে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পণ্ডিত যশরাজকে স্মরণ করে ‘পণ্ডিত যশরাজ (৩০০১২৮)’ নামে একটি ছোট গ্রহের নামকরণ করে। প্রথম ভারতীয় সংগীতশিল্পী হিসেবে এমন দুর্লভ সম্মান পান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় আট দশকের পথচলায় তিনি বলতে গেলে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের সমার্থক হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত জগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের একজন। নাসা তার নামে একটি গ্রহের নামকরণ করে ভুল করেনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যশরাজ সত্যি সত্যি ‘নক্ষত্র’ হয়ে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেলেন। রেখে গেলেন তার অগণিত রেকর্ড, গানের মজলিশ আর সংগীতের পরম্পরা। তা দিয়ে তিনি নিশ্চয় বেঁচে থাকবেন আরও শত শত বছর।

সারাবাংলা/এএসজি

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন