বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু হত্যা রহস্য উদঘাটনে বিদেশি দলিল সংগ্রহের উদ্যোগ জরুরি

August 19, 2020 | 10:52 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ড ছিলো পূর্বপরিকল্পিত এবং এ হত্যায় ছিল আন্তর্জাতিক চক্রান্তের যোগসূত্র। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্যগুলো সংগ্রহে কার্যত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সে জন্য ইতিহাস সংরক্ষণ এবং জানার জন্য তথ্যগুলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। প্রয়োজন তথ্য অনুসন্ধান কমিশন গঠন করতে হবে। আর যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে সারাবাংলা ফোকাস-বঙ্গবন্ধু হত্যায় আন্তর্জাতিক দায় বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত আশরাফ উদ দৌলা ও প্রথম আলোর সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী।

প্রথম আলোর সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র এবং আন্তর্জাতিক দায় হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভাজন ছিল। সেখানে পক্ষে-বিপক্ষে মোটাদাগে বিষয়টি দেখার অবকাশ রয়েছে। আমেরিকা পক্ষ-বিপক্ষ নির্ধারণ করতে গিয়ে চীনের সঙ্গে গোপন কূটনীতি করে। তারা ইসলামাবাদকে ব্যবহার করে বেইজিংয়ের সঙ্গে একটি গোপন সম্পর্ক করেন।’

‘অপরদিকে খুনি চক্রের ফারুক ও তার ভাইরাভাই রশীদ বাংলাদেশের রণাঙ্গনে আগমন করেননি। তারা স্বাধীনতার শেষ দিকে আসেন। সেই থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিষয়টি রহস্যই থেকে গেছে। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং তথ্য উদঘাটন অসম্পন্ন রয়ে গেছে। সেই কারণে তথ্য অনুসন্ধান কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। বিদেশি দেশগুলোর কাছে যেসব তথ্য রয়েছে সেগুলো জানার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দায়টা চিহ্নিত করতে পারি।’

বিজ্ঞাপন

১৯৭৪ সালে ফারুক রহমান এক চিঠিতে বলেন, ‘আমরা শেখ মুজিব সরকারকে উৎখাত করতে চাই। ওই বছরই হ্যানরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশে আসেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ফলে আন্তর্জাতিক দায় রয়েছে। এমনকি ফারুক আরও বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কারণেই মুজিবকে ধ্বংস করেছি। একইসঙ্গে জিয়া এবং মোস্তাক তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলেও এক চিঠিতে লেখেন। এমনকি মেজর ডালিম রেডিওতে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেখানেও তিনি বাংলাদেশের নাম বদলে দিয়েছিলেন।’

মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘খুনিরা অনেক আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করেন। ১৯৫৫ সালে যখন আওয়ামী লীগের নাম পাল্টানো হয় তখন থেকেই এই ষড়যন্ত্র শুরু। আর খন্দকার মোস্তাক নাম পাল্টানো ভালোভাবে দেখেননি। অপরদিকে খুনিদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তথ্য সংগ্রহে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটি করতে হবে। ব্রিটিশ, ভারত ও রাশিয়ার কাছে তথ্য রয়েছে। এগুলো আনার উদ্যোগ নিতে হবে।’

সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত আশরাফ উদ দৌলা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসার আগে থেকে হত্যার পরিকল্পনা শুরু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর আশেপাশে যারা ছিলেন তার মধ্যে ৯০ শতাংশ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। তারা হয় পাকিস্তানে ছিল নয়ত পাকিস্তান সরকারের জন্য কাজ করেছিল। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা তথা তখনকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কী করেছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তখনকার যারা গোয়েন্দা সংস্থায় ছিলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় দায়ভার তাদেরও। বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ কোনো শক্তি যেন ক্ষতি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা তখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নেয়নি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি এবং চীন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এটির সঙ্গে অবশ্যই কোনো সম্পর্ক আছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু যে ফরেন পলিসি করেছিলেন তার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ শত্রু তৈরি করেছিলেন।’

সারাবাংলা/এসজে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন