সরকারি ধান-চাল সংগ্রহে সময় বাড়লো ১৫ দিন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের সময় বাড়ানো হয়েছে। ধান-চাল সংগ্রহে চালকল মালিকদের আরও পনের দিন অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, সোমবার (৩১ আগস্ট) এক আদেশে এই সময় বাড়ানো হয়েছে।

সিনিয়র সহকারী সচিব শারমীন ইয়াসমিনের সই করা ওই আদেশে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ ধান চাল সংগ্রহের স্বার্থে সময় বাড়ানো হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট শেষ হয় চলতি বোরো মৌসুমের সরকারি ধান চাল সংগ্রহের নির্ধারিত সময়। এই সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাস, ঘুর্ণিঝড়, বন্যা, বৃষ্টি ও প্লাবনের কারণে ধান চাল সংগ্রহে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। চালকল মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সার্বিক বিবেচনায় নতুন করে সময় বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার চলতি বোরো মৌসুমে ২০ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার। এর মধ্যে ৮ লাখ টন ধান, ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং দেড় লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহ করার কথা। কেজিপ্রতি ২৬ টাকা দরে ধান আর ৩৬ টাকা দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা দরে আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সে লক্ষ্যে চালকল মালিকরা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হোন। সে চুক্তি অনুযায়ী গত ২৬ এপ্রিল থেকে বোরো ধান কেনা শুরু করেন। আর ৭ মে থেকে শুরু করা হয় চাল সংগ্রহ।

খাদ্য অধিদফতর ওয়েবসাইটে দেওয়া হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, গত ২৭ আগস্ট পর্যন্ত পূর্ব নির্ধারিত ৮ লাখ টন বোরো ধান কেনার কথা থাকলেও মাত্র ২ লাখ ৫ হাজার ৯০৩ মেট্রিক টন সংগ্রহ হয়েছে। ১০ লাখ টন বোরো সিদ্ধ চালের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩১ মেট্রিক টন। আর দেড় লাখ টন বোরো আতপ চালের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ৮০ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রহ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম।

কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ না হওয়ার পেছনে করোনাভাইরাস, বৃষ্টি, বন্যা, ঘুর্ণিঝড় আর সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি হওয়ার যুক্তি দেখিয়েছেন চালকল মালিকরা।

এ প্রসঙ্গে চালকল মালিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক এ কে এম লায়েক সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার চারিদিক থেকে আসা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমরা সময়মত ধান-চাল সরকারকে সরবরাহ করতে পারিনি। যে বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আমরা চেষ্টা করব ধান-চাল সরবরাহ করার।’

এদিকে চালকল ও ব্যবসায়ীদের কাছে কী পরিমাণ ধান, চাল ও গম মজুদ আছে সেই তথ্য জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবার চলতি মৌসুমে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে খাদ্য অধিদফতর।

উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১৩ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ২ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন গম।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম