বিজ্ঞাপন

সিনহা হত্যা পরিকল্পিত নাকি তাৎক্ষণিক— জবাব তদন্ত প্রতিবেদনে

September 6, 2020 | 8:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কক্সবাজার জেলার টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঘটনার কারণ এবং উৎস পূর্ণাঙ্গভাবে উদঘাটন করতে পেরেছে কমিটি। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমান টেলিফোনে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ওপর নির্দেশনা ছিল তিনটি। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার উৎস ও কারণ অনুসন্ধান করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আমাদের পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ তুলে ধরা। আমরা মনে করি, ঘটনার কারণ ও উৎস আমরা পূর্ণাঙ্গভাবেই তুলে আনতে সক্ষম হয়েছি। পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারের একটি আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন, সেখানে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৯ পুলিশকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে র‌্যাব। ওই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর প্রদীপ ও লিয়াকতসহ অভিযুক্তরা কারাগারে আছেন।

এদিকে, ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১ আগস্ট তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছিল কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলিকে। পরে ওই দিনই আরও একজনকে যোগ করে তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় যুগ্মসচিব পদমর্যাদার চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানকে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই কমিটিতেও সদস্য আছেন। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন— পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান ও সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির প্রতিনিধি লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

কমিটি ৪ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুর পর মোট ৬৮ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলীও আছেন। সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, তদন্ত কমিটির মূল প্রতিবেদন ৮০ পৃষ্ঠার। এর সঙ্গে ৫৮৬ পৃষ্ঠায় সাক্ষীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এবং ২১ পৃষ্ঠার একটি ছবিসম্বলিত অ্যালবাম সংযুক্ত করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ওপর যেভাবে নির্দেশনা ছিল, আমরা চেষ্টা করেছি সেটা পূর্ণাঙ্গভাবে তুলে আনতে। সোমবার আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাব এবং সেটা জমা দেবো।’

হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত নাকি তাৎক্ষণিক— এমন প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই প্রশ্নের জবাব সুন্দরভাবেই তদন্ত প্রতিবেদনে দেওয়া আছে। সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সরকার চাইলে মিডিয়াকে এই প্রশ্নের উত্তর দেবে। কমিটির পক্ষ থেকে আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনারবৃত্তি রোধে ১৩টি সুপারিশ উল্লেখ আছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন