বিজ্ঞাপন

কয়েদি পালানোর ঘটনায় প্রতিবেদন দাখিল, কাশিমপুরের ৬ কর্মকর্তা বদলি

September 9, 2020 | 2:12 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নিজের তৈরি করা মই দিয়েই কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে পালিয়েছিলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবু বকর সিদ্দিক। এ ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, কারাগারের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ছিল। এ ঘটনায় শাস্তি হিসেবে দুই জেলার ও চার ডেপুটি জেলারকে বদলি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) ও মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) কারা অধিদফতর থেকে জারি করা দুইটি ভিন্ন প্রজ্ঞাপনে এই ছয় জনকে বদলি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- ‘চিরুনি অভিযানে’ও পাওয়া যায়নি কাশিমপুরের সেই কয়েদিকে

এর মধ্যে মঙ্গলবার কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশার সই করা প্রজ্ঞাপনে দেশের ৯ কারাগারের জেলারকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেলার মোহাম্মদ বাহারুল ইসলামকে রাঙ্গামাটি জেলা কারাগারে ও জেলার (উপতত্ত্বাবধায়ক) মোহাম্মদ মাহবুব কবীরকে নড়াইল জেলা কারাগারে বদলি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সোমবার কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপনে চার ডেপুটি জেলারকে তাৎক্ষণিক কর্মমুক্তির (স্ট্যান্ড রিলিজ) আদেশসহ বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ সোহেলকে চুয়াডাঙ্গা, ফারুক হোসেনকে নাটোর, মনির হোসেনকে ভোলা ও আখেরুল ইসলামকে মাগুরা জেলা কারাগারে বদলি করা হয়।

এদিকে, আসামি আবু বকরের পালানোর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জেলার বাহারুলের বিষয়ে বলা হয়েছে, তিনি কর্তব্যে চরম অবহেলা করেছেন এবং অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, অধস্তনদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতেও ব্যর্থ হয়েছেন। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় কারাগারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে তিনি দায়িত্ব পালনের দক্ষতা ও সক্ষমতা রাখেন না বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারের বদলে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা কারাগারে পদায়নের জন্য সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

আরও পড়ুন- ‘কারাগারের ভেতরে নেই, রক্ষীদের সহায়তায় পালিয়েছেন আবু বকর’

বিজ্ঞাপন

কাশিমপুরের আরেক জেলার (উপতত্ত্বাবধায়ক) মোহাম্মদ মাহবুব কবীর সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তার সঙ্গে দায়িত্বের মিল নেই। এ কারণে তাকেও কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা কারাগারে পদায়নের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাকি চার ডেপুটি জেলার সম্পর্কেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই কাজে অবহেলা করেছেন। তারা অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ফলে তাদের কারওই কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালনের দক্ষতা ও সক্ষমতা নেই বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে কারণে তাদেরও কম গুরুত্বপূর্ণ জেলা কারাগারে পদায়নের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এই ছয় জনসহ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্তত ২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ওই কমিটি। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও রয়েছে।

এর আগে, গত ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় টের পাওয়া যায়, কাশিমপুর কারাগার থেকে আবু বকর নামে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত একজন কয়েদি নিখোঁজ রয়েছেন। পুরো কারাগার তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, একটি মই হাতে কাঁধে করে নিয়ে সাধারণ পোশাকে ব্রহ্মপুত্র ভবনের বাইরের গেট দিয়ে বেরিয়ে কারাগারের মূল গেটের দিকে যান আবু বকর। ওই সময় তার আশপাশে অনেক কারারক্ষীরাই ঘোরাফেরা করছিলেন। তবে তাদের কেউ আবু বকরকে বাধা দেননি। জানা যায়, কারাগারের অভ্যন্তরে নিজেই সেই মই তৈরি করেছিলেন আবু বকর।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন