বিজ্ঞাপন

সরকারি চাকরিতে ডোপ টেস্ট: ২ বছরেও তৈরি হয়নি বিধিমালা

September 9, 2020 | 6:28 pm

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারি চাকরির নিয়োগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব এবং বিধিমালা তৈরি না হওয়ায় দুই বছরেও সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। জানা গেছে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই শেষে এখন বিধিমালা নিয়ে কাজ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যা এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের ১৯টি জেলায় ডোপ টেস্ট চালু করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। শিগগিরই এর সুফল মিলবে।

বিজ্ঞাপন

‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮’তে ডোপ টেস্ট বা মাদকাসক্ত পরীক্ষার বিধান রয়েছে। এর আলোকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের আগে অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার সঙ্গে ডোপ টেস্টও বাধ্যতামুলক করা হয়। এ লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নিয়োগের জন্য বাছাইকৃত ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কর্তৃক গঠিত মেডিকেল বোর্ড বা ক্ষেত্র বিশেষ সমপদমর্যাদার কোনো মেডিকেল অফিসার কর্তৃক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরীক্ষা করা হয়। তবে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওইসব পরীক্ষার সঙ্গে ডোপ টেস্ট অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয় ওই প্রজ্ঞাপনে।

প্রজ্ঞাপনটি জারির পর মাদকদ্রব্য আইনের আলোকে বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই শেষে এখন বিধিমালা তৈরির কাজ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির শরীরে মাদকদ্রব্য সেবনের আলামত পাওয়া গেলে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাবেন না। ডোপ টেস্ট পজিটিভ হলে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীও সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন। কর্মরতদের মধ্যে কেউ মাদকদ্রব্য সেবন করছেন- এমন আলামত পাওয়া গেলেও সরকারি চাকরি আচরণ বিধিমালার আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিধিমালায়।

এছাড়া সরকারি/বেসরকারি কিংবা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলে বিআরটিএ ডোপ টেস্ট করে নিশ্চিত হবে আবেদনকারী মাদকাসক্ত কি না। মাদকাসক্ত হলে তাকে লাইসেন্স দেওয়া হবে না। কর্মরত গাড়িচালকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য সেবনের বিষয়ে সন্দেহ হলে ডোপ টেস্ট করা হবে। এছাড়া নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট চালু করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘কেউ যদি মাদকাসক্ত হয় তাহলে সে সরকারি চাকরি পাবে না- এরকম ব্যবস্থা নিচ্ছি। সে প্রক্রিয়া চলছে। বিধিমালার কাজ শেষ পর্যায়ে। আমরা দেশের ১৯টি জেলায় এই কার্যক্রম শুরু করতে মাদকদ্রব্য অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে চিঠি দিয়েছি।’

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিকভাবে দেশের ১৯ জেলায় মাদকদ্রব্য অধিদফতরে ডোপ টেস্টের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ডোপ টেস্টের জন্য দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী দিনাজপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, পাবনা, রংপুর, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া, বগুড়া, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার ও যশোর জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে যন্ত্রপাতি বসানো হবে।

পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায় এই টেস্ট চালু হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এ কাজের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের আওতায় ১০২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন