বিজ্ঞাপন

বিশ্বের সবচেয়ে পরিকল্পিত দেশ বাংলাদেশ: পরিকল্পনামন্ত্রী

September 10, 2020 | 3:38 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে পরিকল্পিত দেশ বলে অভিহিত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমাদের দেশের মতো এত পরিকল্পনা বোধহয় অন্য কোনো দেশে নেই। আমাদের রয়েছে ক্ষুদ্র পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ১০০ বছরের পর্যন্ত পরিকল্পনা। আর এসব পরিকল্পনা তৈরি করেই থেমে যাইনি, এগুলো বাস্তবায়নও করা হচ্ছে। যার ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে রূপরেখা: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশনা উপলক্ষে জনঅবহিতকরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- ৪ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের রূপরেখা

বিজ্ঞাপন

সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলমের  সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা সচিব আসাদুল ইসলাম, আইএমইডি’র সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ইয়ামিন চৌধুরী, ইআরডি’র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ, আবুল কালম আজাদ, শামীমা নার্গিসসহ অন্যরা।

অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এই পরিকল্পনাটি হচ্ছে আগামীর জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সম্ভাবনা থেকে এটি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশের জন্য সুসময় বয়ে যাচ্ছে। তবে কোভিড যন্ত্রণা আছে। কিন্তু সেটি আমাদের একার নয়। আমরা একাই ডুবব না, ভাসলে পুরো বিশ্ব একসঙ্গেই ভাসবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে সুশাসন রয়েছে। গণতন্ত্রও আছে। বিকেন্দ্রীকরণ হচ্ছে। তাছাড়া বর্তমান যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে, সেটা অব্যাহত থাকলে আশা করা যায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ অবশ্যই উচ্চ আয়ের দেশে যেতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শুধু সমালোচনা নয়, অপেক্ষা করতে হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অনেক বিষয়ই সমাধানের পথে যাবে। আমরা এমডিজি (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। তবে মনে রাখতে হবে, প্রেক্ষিত পরিকল্পনাটি নির্দেশনামূলক পরিকল্পনা। এটা কোনো বিনিয়োগ পরিকল্পনা নয়। বিনিয়োগ পরিকল্পনা হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। বিনিয়োগ বাড়াতে আমরা ইজ অব ডুয়িং বিজনেস পরিবেশ উন্নয়নের প্রচেষ্টা করছি। ছোটখাটো কিছু কাজ করলেই এই সূচকে আমরা অনেক এগিয়ে যেতে পারব। ব্লু ইকনোমিতে আমরা জিরো। এক্ষেত্রে বর্তমানে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প নিতে কুণ্ঠা বোধ করছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু আমরা বলছি ৫০ কোটি নয়, আপনারা ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে আসুন। এ ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগ দরকার।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, বাংলাদেশে অর্জন কম নয়। আমরা পলিথিনমুক্ত হয়েছি, বিশ্বের সর্বপ্রথম আমরাই জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড করেছি। এরকম অনেক অর্জন রয়েছে। সেগুলো মনে রাখতে হবে। আমলাতন্ত্রকে সাধারণত অনুর্বর জমি বলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র সৃজনশীল। আমরা এখন রেজাল্ট বেজড কাজ করছি।

ড. শামসুল আলম বলেন, আগামী ২০৪১ সালে দেশের দারিদ্র্যের হার ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চরম দারিদ্র্যের হার নেমে আসবে ১ শতাংশের নিচে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এর বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে শিগগিরই।

বিজ্ঞাপন

প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় ১২টি অধ্যায় রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— সুশাসন, মানব উন্নয়ন, শিল্প ও বাণিজ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ। এর মধ্যে সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো আছে, যাতে প্রতি অর্থবছরের অর্থনীতির সূচকগুলোর লক্ষ্যমাত্রা বিস্তরিতভাবে দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে তৈরি করা বাংলাদেশের প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

পরিকল্পনাটি উপস্থাপনের সময় ড. শামসুল আলম আরও বলেন, উন্নত দেশে যেতে ২০ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনটি তৈরি করেছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। এতে ২০৪১ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল বেড়ে দাঁড়াবে ৮০ বছরে।

প্রেক্ষিত পরিকল্পনার প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০৩১ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৯ শতাংশে। সেটি আবার বাড়তে বাড়তে ২০৪১ সালে গিয়ে হবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। সেই সঙ্গে চরম দারিদ্র্যের হার ২০২০ সালে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে ২০৩১ সালে পৌঁছাবে ২ দশমিক ৩ শতাংশে। সেটি পরিকল্পনার শেষ বছর ২০৪১ সালে কমে দাঁড়াবে ১ শতাংশের নিচে। অন্যদিকে দারিদ্র্যের হার বর্তমান বছরের ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ২০৩১ সালে দাঁড়াবে ৭ দশমিক শূন্য শতাংশে। পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শেষে ২০৪১ সালে এ হার হবে ৩ শতাংশেরও কম।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন