বিজ্ঞাপন

‘ইউরোশিয়ান প্রিমিয়াম ২০২০’-এ শ্রেষ্ঠ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মসজিদ

September 14, 2020 | 12:24 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাশিয়ান শিল্প ও ডিজাইনের আন্তর্জাতিক ফেস্টিভালে ‘ইউরোশিয়ান প্রিমিয়াম ২০২০’ পুরস্কারের আর্কিটেকচার বিভাগে প্রথম হয়েছে আজিমপুর কবরস্থানে অবস্থিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদ। এছাড়াও বিজয়ী হয়েছে আব্দুল আলীম খেলার মাঠ। মসজিদ ও মাঠটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জলসবুজে প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়। বিশিষ্ট স্থপতি রফিক আজমের নেতৃত্বে এক দল স্থপতি এর ডিজাইন করেন।

বিজ্ঞাপন

রফিক আজম পুরস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা এ বছর দুটি পুরস্কার পেয়েছি। এর মধ্যে আজিমপুর কবরস্থানের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদ পৌনে ৫০০ ডিজাইনের মধ্যে প্রথম হয়েছে। আর আব্দুল আলিম খেলার মাঠও বিজয়ী হয়েছে।’

রাশিয়ার নগরবাদী ও ডিজাইনারদের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ইউরোশিয়া প্রাইজ কর্তৃপক্ষ গত ১০ সেপ্টেম্বর এ পুরস্কার ঘোষণা করে। প্রতিষ্ঠানের ওয়েব পেইজেও এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদ

জাতীয় ঐতিহ্য ও মুসলিম স্থাপত্যকলার অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আজিমপুর পুরনো কবরস্থানের অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নামে ২৩ কাঠা জমির ওপর ৩০ হাজার ২২ বর্গফুট আয়তনের মসজিদটির নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট শুরু হয়ে ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রাচীন ও আধুনিক নকশার সমন্বয়ে সাজানো মসজিদটির মূল স্থপতি রফিক আজম। বাংলাদেশের মসজিদের প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে অনুপ্রাণিত এর নকশায় মসজিদটিতে নান্দনিক কারুকাজের অংশ ঢাকাবাসীর ঐতিহ্য বহন করে।

নকশা তৈরি ও নির্মাণকাজে আরও যুক্ত ছিলেন রফিক আজমের প্রতিষ্ঠান ‘সাতত’র একদল স্থপতি ও প্রকৌশলী। তারা হলেন স্থপতি ইকরামুন নেসা, স্থপতি ফাহিম আবরার কবির, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আখতার হোসেন, প্রকৌশলী লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মোহাইমিনুল ইসলাম ও প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম।

মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদের ভেতরে আছে উন্নতমানের বিদেশি টাইলস। নানান রঙের সুদৃশ্য বাতিতে আলোকিত হয় এটি। কারুকার্যময় নয়নাভিরাম মসজিদটির অভ্যন্তর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মসজিদে আজানের বাংলা অর্থ বড় বড় অক্ষরে লেখা।

বিজ্ঞাপন

উঁচু মিনারে রাখা মাইকের মাধ্যমে আজানের ধ্বনি ছড়িয়ে যায়। মুসল্লিদের জন্য আছে প্রশস্ত পার্কিং সুবিধা। এতে ৩০টির বেশি গাড়ি রাখা যায়। নারী-পুরুষের জন্য রয়েছে আলাদা অজু ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা। মসজিদটিতে একসঙ্গে ১ হাজার ৫২০ জন মুসল্লি ও একসঙ্গে ৭০ জন নারী পৃথকভাবে নামাজ আদায় করতে পারেন। রমজানসহ মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদে দুই হাজারের বেশি মানুষ নামাজ পড়তে সমবেত হন। নামাজের কাতার মেলাতে আছে লাইটিংয়ের আধুনিক ব্যবস্থা।

মসজিদে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। লিফট ও উন্নতমানের টয়লেট সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে জানাজা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইলচেয়ার। নারী-পুরুষসহ সবার মৃতদেহ গোসল দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয় এখানে। রয়েছে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

হাজী আব্দুল আলীম খেলার মাঠ

৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭৫ কাঠা আয়তনের এ মাঠটির আধুনিকায়ন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ডিএসসিসির জলসবুজে প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালের আগস্টে শুরু হওয়া পার্কের উন্নয়ন কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মাঠের চারদিক সবুজ নেট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ভেতরে সবুজ ঘাসে রয়েছে খেলাধুলার ব্যবস্থা। বাইরের ওয়াকওয়ের পাশে বসার স্থানে সময় কাটাতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাঠের কোণায় দুই তলাবিশিষ্ট ছোট একটি ঘর রয়েছে। এর নিচতলায় জিম ও লাইব্রেরি এবং ওপরের তলায় কফি হাউস ও একটি উন্মুক্ত ফুলের বাগান। মাঠের পাশে ঝকঝকে ফুটপাতে হেঁটে যাচ্ছে মানুষ। পূর্বপাশের মসজিদসংলগ্ন শিশু কর্নারে রয়েছে শিশুদের দোলনার ব্যবস্থা। ওয়াকওয়ের একপাশে রয়েছে সাইকেল লেন।

সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, ডিএসসিসির ‘জলসবুজে ঢাকা প্রকল্প’ এর আওতায় ৩১ খেলার মাঠ ও পার্ক উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকেশ্বরী এলাকায় ৭৫ কাঠা জমির ওপর অবস্থিত এ পার্কটির আধুনিকায়ন করা হয়।

মাঠটিতে ফুটবল এবং নেটে ক্রিকেট খেলার প্র্যাকটিস স্পেস, হাঁটার জন্য ২৫০ মিটার ওয়াকওয়ে, ওয়াকওয়ের পাশে বসার ব্যবস্থা, শিশুদের আধুনিক খেলনা সামগ্রী দিয়ে তৈরি শিশু কর্নার, জিমনেসিয়াম, আধুনিক টয়লেট, ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি, ওয়াটার ফিল্টার, ফ্রি ওয়াইফাই জোন, সিসি ক্যামেরা, ডাস্টবিন, ফলের গাছ, প্রজাপতি আকৃষ্ট হয় এমন ফুলের গাছ রয়েছে। ঈদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পার্কটির বিশেষত্ব হচ্ছে- অতিবৃষ্টি হলেও এতে পানি জমবে না। পার্কের ওয়াকওয়ের (হাঁটার রাস্তা) নিচে তৈরি করা হয়েছে জলাধার। এতে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন পানি ধরে রাখা যাবে। ফিল্টারিং করে সেই পানি পান করা যাবে। আর রাতের বেলায় আলোর ঝলকানিতে মোড়ানো থাকবে পুরো মাঠ।

সারাবাংলা/এসএইচ/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন