বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা: ডেথ রেফারেন্স শুনানি ফের শুরু

September 16, 2020 | 6:23 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) ও আপিল শুনানি ফের শুরু হয়েছে। এ নিয়ে মামলাটি তৃতীয়বারের মতো আপিল শুনানি শুরু হলো। এর আগে দুইবার আপিল শুনানি শুরু হলেও বেঞ্চ রদবদল করায় তা শেষ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ মামলার শুনানি ফের শুরু হয়।

প্রথম দিনে মামলার পেপারবুক থেকে রায়ের অংশ পাঠ করা হয় এবং এক আসামির জবানবন্দি উপস্থাপন করা হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ আহসান।

বিজ্ঞাপন

পরে ড. মো. বশির উল্লাহ বলেন, আজ রাষ্ট্রপক্ষে মামলার পেপারবুক থেকে বিচারিক আদালতের রায়ের অপারেটিং অংশ উপস্থাপন করেছি। এছাড়া একজন আসামির জবানবন্দিও উপস্থাপন করা হয়েছে। পরে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে দেন।

এর আগে, গত বছরের ১৭ জানুয়ারি এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয় একই বেঞ্চে। তখন এ বেঞ্চের আরেক বিচারপতি ছিলেন মো. রিয়াজ উদ্দিন খান।

তার আগেও একই বেঞ্চে মামলার শুনানিতে যুক্তিতর্ক পর্যন্ত পৌঁছে যান আইনজীবীরা। পরে সুপ্রিম কোর্টের শীতকালীন ছুটির পর নতুন করে বেঞ্চ পুনঃগঠন করেন প্রধান বিচারপতি। তখন বেঞ্চের আরেক সদস্য বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের জায়গায় বিচারপতি রিয়াজ উদ্দিন খানকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়। এ কারণে মামলাটি নতুন করে শুনানি শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরিভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে পেপারবুক তৈরি করা হয়। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন।

এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।

এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা দায়ের করেন।

পরে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও ৯ জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়। সেখানে এ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন